সাত্তার সিকদার, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম), প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ বছর পর খেলাধূলার উপযোগী হলো পদুয়া হর্দ্দার মাঠ।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ার হর্দ্দার মাঠে খেলাধূলায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তৎকালীন অবিভক্ত সাতকানিয়া থানার দক্ষিণ সাতকানিয়ার বর্তমান লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ায় বিশাল আয়তনবিশিষ্ট হর্দ্দার মাঠ এলাকার ক্রীড়াঙ্গনের এক অম্লান স্মৃতি। অতীতে এ’ মাঠে অনুষ্ঠিত ফুটবল টুর্ণামেন্টের খেলায় জাতীয় ফুটবল দলের অনেক নামী-দামী খেলোয়াড় অংশ গ্রহণ করেছেন এবং অনুষ্ঠিত হয়েছে অনেক বড় সভা-সমাবেশ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও এ’ মাঠের ঐতিহ্য বজায় ছিল। মাঠের সামান্য পূর্বদিকে রয়েছে প্রাচীনতম নিদর্শন হর্দ্দার বাড়ি। পাশাপাশি রয়েছে ঐতিহ্যবাহী পদুয়া তেওয়ারী হাট ও বিশাল আকারের হর্দ্দার দিঘী। দিঘীর দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ে গড়ে উঠেছে পদুয়া এসিএম উচ্চ বিদ্যালয় এবং সামান্য ব্যবধানে দক্ষিণ দিকে রয়েছে এসআই চৌধূরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। যে কারণে মাঠটির পরিচিতি সুদূরপ্রসারী।
কালের বিবর্তনে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। যান্ত্রিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে নতুনরূপে ছোঁয়া লাগে নানা বিষয়ে। সাহিত্য,সংষ্কৃতি ও ক্রীড়ায় পরিবর্তন আসে। কিন্তু গ্রামীণ পরিবেশে এক প্রকার ভাটা পড়ে পদুয়ার হর্দ্দার মাঠের জমজমাট ফুটবল খেলার আসর। প্রায় ২০ বছরের ও অধিক সময় ধরে অতীত ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছিলো ঐতিহাসিক হর্দ্দার মাঠ।
ক্রীড়ামোদী ও ফুটবল খেলা প্রেমিক দর্শকেরা খেলা দেখা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছিলো। কতৃপক্ষের অবহেলায় মাঠটি ছিল পরিত্যক্ত । এরি সুযোগে কিছু মহল গাড়ি পার্কিং ও কাঠ-বাঁশ রাখার কারণে মাঠের বিভিন্ন স্থানে ছিল গর্ত ও খাদ। খেলাধূলা করার পরিবেশ ছিলনা মোটেও। কোন কোন সময় ক্ষুদ্র শিক্ষার্থীরা বিকেলে খেলাধূলা করত। বছরে একবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের চৈত্র সংক্রামি মেলা বসে মাঠজুড়ে।
স্থানীয়রা জানান, মেলার দৃশ্য তাঁদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় অতীতের সাড়ম্বর ফুটবল টুর্ণামেন্টের দৃশ্যটুকু। পদুয়ার কৃতি ফুটবলার চন্দন বাবু জানান, এ’হর্দ্দার মাঠ ছিল অতীতে ফুটবল খেলার জন্য বিখ্যাত। ওই সময় জাতীয় দলের অনেক নামী-দামী খেলোয়াড় বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে খেলতে আসতো। কালের পরিক্রমায় ফুটবল মাঠের সেই ঐতিহ্য এলাকা থেকে অজ্ঞাতকারণে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ২০২৩ সালের মধ্যবর্তীকালীন সময় উক্ত হর্দ্দার মাঠের সোনালী অধ্যায় সূচীত হয়। হারানো যৌবন ফিরে পায় এ’ পরিত্যক্ত মাঠ। ক্রীড়ামোদী দর্শকদের মনে আনন্দ দিতে উক্ত মাঠ সংষ্কারে উদ্যোগ নেন বর্তমান পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ।
পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, মাঠটি দীর্ঘ বহুবছর ধরে পরিত্যক্ত ছিল। একদিকে খেলোয়াড়েরা খেলা করা থেকে যেমন বঞ্চিত ছিলেন এবং অন্যদিকে ক্রীড়ামোদী দর্শকেরা খেলা দেখা থেকেও পিছিয়ে ছিলেন। যে কারণে এ বছর প্রায় ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মাঠটি সংষ্কার করে খেলা উপযোগী করি। এ সুবাদে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পদুয়া বনাম বান্দরবানের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্টিত হয়। এতে হাজার হাজার দর্শক খেলাটি উপভোগ করেন। আগামীতে বিভিন্ন টুর্ণামেন্ট আয়োজনে আরো উন্নত মানের খেলা উপভোগ করবে এলাকাবাসী।