Oplus_131072
রফিকুল ইসলাম জসিম | মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর, লেখক ও প্রবীণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, ৬ ছেলে, ৪ কন্যাসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “মৃত্যু আমাদের জন্য প্রতিনিয়ত শিক্ষা। আমাদের প্রতিটি মুহূর্তই হতে হবে নেক আমলের প্রস্তুতি।” তিনি বলেন, দেওয়ান মতলিব ভাই ইসলামী আন্দোলনের কঠিন সময়ে যেভাবে দৃঢ়তা, ধৈর্য ও সদাচরণ বজায় রেখেছেন, তা আমাদের জন্য অনুকরণীয়।
তিনি আরও বলেন, “রাসূল (সা.) হাদীসে বলেছেন, যারা সবর করে, সদাচরণে অটল থাকে, তাদেরই আমলনামা হবে ভারী। এই গুণগুলোর বাস্তব প্রতিফলন আমরা দেখেছি মতলিব ভাইয়ের জীবনে।”
জানাযার নামাজে ইমামতি করেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজেই। পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগরী আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলীসহ বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও মরহুমের সন্তানরা।
দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব দীর্ঘ সময় মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমীর ছিলেন। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং সিলেট আঞ্চলিক বিভাগের টিম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে জামায়াতের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন।
তিনি একজন লেখক হিসেবেও সমধিক পরিচিত। তাঁর রচিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে—
‘ইসলামী সংগঠন ও আমরা’, ‘সাতান্ন বছর জামায়াতে ইসলামীতে কি দেখলাম’, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবার’, ‘মৃত্যুর পর আমরা কোথায় যাব’, ‘একটুখানি মিষ্টি হাসি ও ইসলামী আন্দোলন’, ‘একটুখানি চোখের পানি ও ইসলামী আন্দোলন’, ‘কারাগারের স্মৃতি’, ‘কাবার পথে’ ইত্যাদি।
স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য এই ইসলামপ্রিয় রাজনীতিকের ইন্তিকালে মৌলভীবাজারসহ পুরো সিলেট বিভাগে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।