ঢাকাশুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

আইনমন্ত্রীর ঘোষণাঃ
একটি হাইর্কোট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার দাবী চট্টলবাসীর চাওয়া পাওয়ার সোনার হরিণ !

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

লেখকঃ এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট মানবাধিকারকর্মী, কলামিস্ট ও সুশাসনকর্মী।

   -জিয়া হাবীব আহ্সান, এডভোকেট

সম্প্রতি আমাদের আইনমন্ত্রী মহোদয় চট্টগ্রাম জেলা বার এসোসিয়েশনের বার্ষিক ভোজ অনুষ্ঠানে শত সহস্র বিজ্ঞ এডভোকেট মহোদয়ের উপস্থিতিতে পুরো জাতির সামনে প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে অতিসত্বর চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি সার্কিট ব্যাঞ্চ প্রতিষ্ঠায় ঘোষণা দিয়েছেন।১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামে একটি স্থায়ী ব্যাঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হলেও তা সংবিধান সংশোধনের নামে বাতিল করা হয়।ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম বার এসোসিয়েশন ১২৭ বছর পূর্তী হলেও কিন্তু আজো চট্রলাবাসীর প্রাণের দাবী দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বার আউলিয়ার আবাদভূমি চট্টগ্রামে একটি স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্টা হলো না।

চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের একটি চাওয়া পাওয়ার সোনার হরিণ —স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ’।যদিও বর্তমানে দাবিটি সংবিধান সম্মত নয়, তবুও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এ দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনা করে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনীর সময়ও বর্তমানে এসে গেছে।

এ প্রত্যাশার ভিত্তিতে আমার এ লিখার অবতারণা। ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ শাসনের সুবিধার্থে কলকাতায় একজন গর্ভনরের পদ সৃষ্টি করা যায় কিনা প্রশ্নে একটি কমিশন গঠিত হলে এর রিপোর্টে বলা হয়- প্রশাসনিক দিক থেকে শুধু কলকাতাকে লেঃ গভর্নরের মর্যাদা দেয়ার সার্বিক প্রয়োজনীয়তা যেমনি রয়েছে তেমনি সমপর্যায়ে গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে চট্টগ্রামেরও অনুরূপ স্বীকৃতির।কারণ কলকাতায় যেমন নৌ-যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে তেমনি চট্টগ্রামেও একই সুবিধা রয়েছে।কারণ দুটিই বঙ্গোপসাগরের সীমানায় অবস্থান করছে।তদুপরি প্রাকৃতিক দিক থেকে চট্টগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।অতএব, প্রশাসনিক দিক থেকে চট্টগ্রামকেও কলকাতার সমপর্যায় গুরুত্ব দিয়ে অত্র জেলার জন্য একটি লেঃগর্ভনরের পদ সৃষ্টির জন্যসুপারিশ করা গেল (ব্রিটিশ ইন ইন্ডিয়া/ স্যার এডমন্ড এফ, গিল্ড/ পৃঃ ১২৭= ১৩১)।উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বিদেশী শাসক গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে চট্টগ্রাম একটি সম্ভাবনাময়ী নগরী হিসেবে স্বীকৃত।

আদিকাল থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রাকৃতিক এবং সামরিক কৌশলগত দিক থেকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের প্রায় প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে চট্টগ্রামের ভূমিকা অনস্বীকার্য।এতদসত্তেও চট্টগ্রাম বরাবরই সার্বিক দিক থেকে অবহেলিত ও বঞ্চিত।দেশের কর্ণধারদের চিন্তা-চেতনা সর্বদা ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় দেশের সার্বিক উন্নয়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয় প্রচলিত অর্থে কার্যত এটা বাণিজ্যিক রাজধানী নয়।কারণ এখানে এর আনুসাঙ্গিক উপায় উপকরণ স্থাপন করা হচ্ছে না।কোন ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় আজো চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়নি।বরঞ্চ যেগুলো ছিল সেগুলোও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।চট্টগ্রাম দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর হওয়া স্বত্বেও নেভাল হেড কোয়ার্টার ঢাকায় প্রতিষ্টা করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক ও বাস্তবতার পরিপন্থীও বটে।রেলওয়ের হেড কোয়ার্টারও স্থানান্তরের প্রয়াস চলছে।আজ শুধু আলোচনা করবো চট্টগ্রামে উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার আকুল আবেদন নিয়ে।দীর্ঘ দিন যাবত চেম্বার অব কমার্স চট্টগ্রামের আইনবিদ সহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ বন্দর নগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে একটি পূর্ণাঙ্গ হাইর্কোট বেঞ্চ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।কেউ কেউ সার্কিট বেঞ্চের দাবী জানালেও আমি মনে করি তা দেশের অন্য বিভাগের জন্য প্রযোজ্য, চট্টগ্রামের জন্য প্রয়োজন স্থায়ী বেঞ্চ।এ জন্যে প্রয়োজনে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এর সংশোধনের বিধানও রাখা হয়েছে।উদাহরণ স্বরূপ, পার্লামেন্ট সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানের যে কোন বিধানের পরিবর্তন করতে পারে, এমনকি সরকারের ধরনও (অনুঃ ১৪২) পরিবর্তণ করতে পারে।সংবিধান প্রণয়নের কোন মৌলিক উদ্দেশ্য ব্যাহত না হলে এ ধরনের সংশোধন বৈধ।এডভোকেট ও বিচারপ্রার্থী মানুষ বর্তমানে ঢাকা হাইকোর্টে মোকদ্দমার আধিক্য, বিচারপ্রার্থী জনতার হয়রানি ও আর্থিক দুর্দশা থেকে রেহাই দিতে দেশের ২য় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ পুনঃস্থাপনের জন্য সরকার এবং জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্যদের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।

চট্টগ্রামে হাইকোর্টের স্থায়ী কোন বেঞ্চ না থাকায় চট্টগ্রামের বিচার প্রার্থী লোকজনকে ঢাকায় নানা ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।১৯৮৩ সালে আগ্রাবাদ জাম্বুরী মাঠের পাশে মোট ২৭,০০০ বর্গফুট আয়তনের ভবনে ৪৪ কক্ষ বিশিষ্ট দুটি এজলাসসহ হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করা হলেও পরবর্তীতে সংবিধানের ৮ম সংশোধনীর বিপরীতে সুপ্রীমকোর্টের একটি আদেশের মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়।সেই থেকে চট্টগ্রামে বিচার প্রার্থী লোকজনকে আবার ঢাকায় দৌড়াতে হচ্ছে। ভারতের বিচার ব্যবস্থায় ভারতের বিহার, উড়িষ্যা এক সময় কলকাতা হাইকোর্টের আওতাধীন ছিল। কালের বিবর্তনে বর্তমানে বিহার, উড়িষ্যা ও কলকাতায় পৃথক পৃথক হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এদিক থেকে ভৌগলিক অবস্থান, গুরুত্ব ও স্থানের প্রেক্ষাপটের কারণে চট্টগ্রামেও হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।১৯৬৯-৭০ সালের দিকে তদানিন্তন গণপূর্ত বিভাগ আগ্রাবাদের জাম্বুরী মাঠের পাশে ৬ দশমিক ৫৫ একর জায়গার উপর হাইকোর্টের একটি স্থায়ী ভবনের কাজ শুরু করে এবং তার নির্মান কাজ ১৯৭২ সালে সমাপ্ত হয়। ১৯৮৩ সালে ১৮ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাইকোর্টের জন্য ৪৪ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করে। ভবনে হাইকোর্টের এজলাসের জন্য দুটি কক্ষও বরাদ্দ করা হয়েছিল। চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের ফলে এ এলাকার জনসাধারণের তুলনামুলক ভাবে অত্যন্ত কম সময় ও কম খরচে নতুন বিচার ব্যবস্থার সুফল ভোগ করেছিল এবং যোগ্য আইনজ্ঞ ও বিচারক সৃষ্টির পথ সুগম হয়।কিন্তু পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা বাতিল করলে বিচার প্রার্থী লোকজনের মধ্যে ভোগান্তি বৃদ্ধি পায়। আমি আমার মরহুম আইনজীবী পিতা এডভোকেট আবু মোহাম্মদ য়্যাহ্য়্যাহ’র হাত ধরে সেখানে বেশ কয়েকবার যাওয়ার সুযোগ পাই।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ষ্ঠ ভাগে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাংবিধানিক ব্যবস্থা দেয়া হয়েছে। ১ম পরিচ্ছেদে ৯৪(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, —বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট’’ নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকবে এবং আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তা গঠিত হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রধান বিচারপতি, সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থান সমূহ নির্ধারণ করেন, সে স্থান সমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে পারবে।সংবিধানের (৮ম সংশোধনী) আইন ১৯৮৮ বলে ১০০ অনুচ্ছেদে সংশোধন করা হয়েছিল। যাতে ১৯৮৮ সালের ৩০ নং আইন বলে সংশোধিত ১০০ অনুচ্ছেদে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, যশোর, রংপুর এবং সিলেট-এ হাইকোর্ট বিভাগের একটি করে স্থায়ী বেঞ্চ থাকার বিধান রাখা হয়। এতে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে যেরূপ স্থান নির্ধারন করবেন, প্রত্যেক স্থায়ী বেঞ্চের সেরূপ বেঞ্চ সমূহ থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদের ৮ম সংশোধনী আইন, ১৯৮৮ এর মাধ্যমে এতদসংক্রান্তে যে সংশোধন আনয়ন করা হয়েছিল তা সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ ১৯৮৯ সালে এখতিয়ার বহির্ভূত ও অকার্যকর ঘোষনা করে।ফলে মূল ১০০ অনুচ্ছেদটি পুনঃবহাল করা হয়। এতে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, যশোর, রংপুর এবং সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ সমূহ বাতিল করে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে ঢাকায় পরেই বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে থাকলেও এখানে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ না থাকার দরুন সুদৃঢ় অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত মোকদ্দমার জন্য ঢাকার এডমিরালটি কোর্টের শরণাপন্ন হওয়া ছাডা বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই ও অথচ, হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ চট্টগ্রামে থাকলে এখানে এতদসংক্রান্ত মোকদ্দমা ছাডা এই অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক দেওয়ানী, ফৌজদারী মোকদ্দমা, আপিল বিট, রিভিশন ইত্যাদির জন্য জনগণকে রাজধানীমুখী হয়ে থাকতে হতো না ও এ এলাকায় সামুদ্রিক আইন এখতিয়ার, কোম্পানি অইিন ও রিট এখতিয়ার নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রামে (হাইকোৰ্ট ডিভিশন) বেঞ্চ পুনঃ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে ও দুঃখজনক হলেও সত্য য়ে, হাইকোর্টে প্রাকটিসরত এডভোকেটদের অনেকেই চান না চট্টগ্রামে তথা দেশের অন্য কোথাও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হোক যা ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের ঢাকার একচ্ছত্র আইনপেশায় ভাটা পড়ার আশংকা থাকবে ও এটা সংকীর্ণ চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়।অথচ তখন বেশি ফিস নিয়ে চট্টগ্রামে তারা মামলা করতে আসতে পারবেন।বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে এবং হাইকোর্ট বিভাগে অমীমাংসিত মামলার সংখ্যা দুই বিভাগের ধারণ ক্ষমতার বহির্ভুত হয়ে পড়েছে ও এ অবস্থায় জাতীয় সংসদে বিল এলে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে চট্টগ্রামের হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করলে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে।এতে চট্টগ্রামের ব্যবসা বানিজ্য ও সমুদ্র অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত মামলা সমূহ সহজে নিষ্পত্তি হলে পুরো দেশ, লাভবান হবে কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পর জনসংখ্যা দ্বিগুণ হওয়া সত্বেও ঢাকা কেন্দ্রিক স্বার্থান্বেষী মহল চট্টগ্রাম হাইকোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছেন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে।বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার সামুদ্রিক আইন এখতিয়ার (এডমিরালটি জুরিসডিকশন) কোম্পানি আইন এখতিয়ার (কোম্পানিস মেটার জুরিসডিকশন) রিট সহ হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাসহ একটি স্থায়ী বেঞ্চ বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠার দাবি অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত৷চট্টগ্রামে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হলে হাইকোর্ট বিভাগের গুণগত অবনতির যুক্তিও কেউ কেউ প্রদর্শন করে থাকেন৷অথচ এর গুণগত মানের ঐতিহ্য রক্ষার দায়ত্বি সম্মিলিতভাবে বিচারপতি ও অইিনজীবীগণের উপর যুগপৎভাবে বর্তায়৷বর্তমানে হাইকোর্টে অভিজ্ঞ আইনজীবীর যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ করার জন্যও চট্টগামে একটি স্থায়ী বেঞ্চ আবশ্যক৷কেননা এর ফলে এতদাঞ্চলে ভবিষ্যতে হাইকোর্ট বিভাগে এডভোকেট এর দায়ত্বি পালনে সক্ষম অধিকসংখ্যক বিজ্ঞ কৌশলী সৃষ্টির সূচনা হবে ও চট্টগ্রাম তথা শুধুমাত্র বাণিজ্যিক রাজধানীর গুরুত্বকে বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি বেঞ্চ স্থাপন করাকে কোন মতেই হাইকোর্টকে বিভক্তিকরণ করা বুঝায় না ও দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির জন্য এতে হাইকোর্ট বিভাগের মর্যাদা আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে৷বিচার বিভাগকে জাতীয় স্বার্থে আরো কার্যকর তথা বাস্তবতার নিরিখে চট্টগ্রামে একটি স্থায়ী বেঞ্চ অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত দাবি ও দেশের আর কোন অঞ্চলে এতবড সামুদ্রিক ও বাণিজ্যিক অধিক্ষেত্র ও মামলা মোকদ্দমার আধিক্য না থাকায় অন্য কোন অঞ্চলের জন্য এ-প্রয়োজনীয়তা আপাতত নেই মর্মে লেখক মনে করেন ও কেননা চট্টগ্রামই দেশের অন্যতম ব্যবসা বাণিজের কেন্দ্রভূমি৷

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে এ অঞ্চল প্রণিধানযোগ্য।সর্বশেষে জনসংখ্যা এবং মামলা মোকাদ্দমায় বহুগণ বৃদ্ধির জন্য সময়ের প্রয়োজনে চট্টগ্রামে একটি স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।সমুদ্র অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত ও কোম্পানি বিষয়ে বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের সকলকে দৌড়াতে হয়।ফলে ভোগান্তির শেষ নেই। ঢাকা হাইকোর্টেও মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে। বিধায় সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের একটি স্থায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার জরুরী দাবি জানাচ্ছি। চট্টগ্রামের জনগণ স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার দাবি করছেন রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ও কারণ চট্টগ্রাম থেকে উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনা ও তদবিবে অনেকে হয়রানি, আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ও বছরের পর বছর মামলার শুনানি হয় না ও হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপিত হলে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে ও জনগণের ভোগান্তি কমবে৷এ জন্য সংসদে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার জন্য চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপিদের জোরালো ভূমিকা জরুরি৷এমতাবস্থায় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের আইনজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও বিচারপ্রার্থী নাগরিকদের নিয়ে হাইকোর্ট পুনঃ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক এটাই আমাদের আগামীদিনের প্রত্যাশা।

লেখকঃ এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও জেলা জজ আদালত, মানবাধিকারকর্মী, কলামিস্ট ও সুশাসনকর্মী।

392 Views

আরও পড়ুন

যশোরের আন্ত ক্লাব ভলিবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

শরণখোলায় ছাত্র অধিকার পরিষদ’র কমিটি গঠন। 

রাবি শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন

শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী গ্রেফতার

সাংবাদিক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় লোহাগাড়ায় সাংবাদিক সমাজের মানববন্ধন

সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে শান্তিগঞ্জে সেমিনার

শান্তিগঞ্জে জনসচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ 

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশ অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক গোলামী থেকে মুক্ত হতে পারেনি–অধ্যাপক মুজিব

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের মতবিনিময় সভায় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান 

চট্টগ্রামে জামায়াত নেতার পায়ের রগ কেটে হাত ভেঙে দিয়েছে চাঁদাবাজরা

ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রদল সহ-সভাপতি রাসেল আকন আটক

শান্তিগঞ্জে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষক দিয়ে পিআইসি কমিটি গঠনের অভিযোগ