দক্ষিণ কোরিয়ার আনসান শহরের ঐতিহাসিক আনসান মসজিদে আজ এক অনন্য ও আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়। বাংলাদেশের প্রবাসী আলেম ও দাঈ মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান কাসেমী-এর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন কোরিয়ান তরুণী Jin Yihyun (জিন ই-হিউন)।
- নিউজ ভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুফতি ফয়জুল্লাহ জানান, ২৬ বছর বয়সী এই তরুণী হৃদয়ের গভীর আকর্ষণ ও চিন্তাভাবনার মাধ্যমে ইসলামের পথে অগ্রসর হন। তিনি উচ্চারণ করেন—
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”
—এই পবিত্র কালেমা পাঠের মাধ্যমে তিনি ইসলামে দীক্ষিত হন। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর নতুন নাম রাখা হয় “হানা (هناء)”, যার অর্থ—সুখ, প্রশান্তি ও আত্মিক শান্তি।
জানা যায়, হানা একজন আলজেরিয়ান মুসলিম যুবককে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। তবে শুধুমাত্র বিবাহের উদ্দেশ্যে নয়—ইসলামের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও সত্যের অনুসন্ধানই তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।
ইসলাম গ্রহণ উপলক্ষে আনসান মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোরিয়ান ভাষায় অনূদিত পবিত্র কুরআন শরীফ উপহার দেন। নতুন মুসলিম হানা এই পবিত্র কিতাবের আলোয় নিজের জীবন পরিচালনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ঘটনার সময় মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিরা হানার জন্য দোয়া করেন—যেন তিনি ইসলামের পথে অটল থাকেন এবং জীবনে আল্লাহর রহমত লাভ করেন।
কে এই মুফতি ফয়জুল্লাহ কাসেমী?
মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান কাসেমী একজন মেধাবী ইসলামিক স্কলার ও প্রবাসী আলেম। তাঁর জন্ম মাগুরা জেলায়, ১৯৮৬ সালে। পড়াশোনার সূচনা যশোর শহরে, এরপর ১৯৯৯ সালে ভর্তি হন জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা-তে। এখান থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ-এ উচ্চতর ইসলামী শিক্ষার জন্য ভর্তি হন। দেওবন্দে তিনি ভর্তি, বার্ষিক এবং সমাপনী পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন।
২০০৬ সালের শেষ দিকে দেশে ফিরে কিছু সময় তাবলিগে খেদমত দেন। পরে ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মিফতাহুল উলুম, মধ্য বাড্ডা মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি জামিয়া ইকরা বাংলাদেশে সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করেন।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি পাড়ি জমান দক্ষিণ কোরিয়ায়। বর্তমানে তিনি আনসান মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টার-এ ইমাম ও খতিব হিসেবে দ্বীনি খেদমত চালিয়ে যাচ্ছেন।
আল্লাহ হানাকে ইসলামের পথে অটল রাখুন এবং মুফতি ফয়জুল্লাহ কাসেমীর দাওয়াতি প্রচেষ্টাকে কবুল করুন—আমিন।