অনলাইন ডেস্ক:
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে তাপমাত্রা ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমে এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অফিস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত মাস থেকেই এশিয়াজুড়ে চরম তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শহীদ আব্বাস রয়টার্সকে বলেন, ‘সিন্ধু প্রদেশের মহেঞ্জোদারোতে গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা বেড়ে ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌছেছে। এটিই এখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।’
প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার শহর হিসেবে পরিচিত মহেঞ্জোদারো একটি ছোট শহর। গ্রীষ্ম মৌসুমে শহরটিতে ভয়াবহ গরম দেখা যায়। তবে এ বছরের গরম আগের বছরগুলোর রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যাচ্ছে।
৩২ বছর বয়সী ওয়াজেদ আলী নামের এক চা দোকানি বলেন, ‘তীব্র গরমে ক্রেতারা রেস্টুরেন্টে আসছে না। তবু দোকান খুলে বসে আছি। টেবিল–চেয়ারগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।’
আলীর দোকানের কাছে একটি ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম মেরামতের দোকান রয়েছে। এর মালিক ৩০ বছর বয়সী আব্দুল খালিক বলেন, ‘রোদ থেকে বাঁচতে দোকানের শাটার অর্ধেক নামিয়ে ভেতরে বসে আছি। দিনে দুই–তিনবার গোসল করছি। তবু গরম থেকে বাঁচতে পারছি না।’
গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু বিষয়ক সমন্বয়কারী রুবিনা খুরশীদ আলম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান পঞ্চম। সম্প্রতি পাকিস্তানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি ও বন্যা দেখেছি আমরা। এখন দেখছি অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ।’
পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান আবহাওয়াবিদ সরদার সরফরাজ বলেন, ‘এর আগে ২০১৭ সালে বেলুচিস্তান প্রদেশের তুরবাত শহরে সর্বোচ্চ ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এটি ছিল এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।’
সরদার সরফরাজ আরও জানান, মহেঞ্জোদারোর তাপমাত্রা দুই এক দিনের মধ্যেই কমে যেতে পারে। তবে করাচি ও সিন্ধুর প্রদেশের অন্যান্য অঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।