নয়ন সুতার সাম্য:
কোচ পিটার বাটলারের তত্ত্বাবধানে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে ২৩ সদস্যর চুড়ান্ত নাম ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আগামী ২৯ জুন বাহরাইনের বিপক্ষে, দ্বিতীয় ম্যাচ স্বাগতিক মায়ানমার ২ জুলাই, তৃতীয় ম্যাচ ৫ জুলাই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: রুপনা চাকমা, স্বর্ণা রানী মণ্ডল, মিলি আক্তার।
রক্ষণভাগ: শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার , আফঈদা খন্দকার, জয়নব বিবি, নিলুফা ইয়াসমিন। মিডফিল্ড: মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, মুনকি আক্তার, হালিমা আক্তার। আক্রমণভাগ: ঋতুপর্ণা চাকমা, শাহেদা আক্তার, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার (জুনিয়র), মোছাম্মত সাগরিকা, সুরভী আকন্দ, মোছাম্মত সুলতানা, নবীরণ খাতুন, উমেহলা মারমা।
প্রসংঙ্গক্রমে, মে ২০২৪ এ বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের মিয়ানমার সফরের বিশ্লেষণ :
ম্যাচগুলোর ফলাফল:
প্রথম ম্যাচ (১৮ মে): মায়ানমার ১ – ১ বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ম্যাচ (২১ মে): মায়ানমার ১ – ১ বাংলাদেশ
উভয় ম্যাচেই বাংলাদেশের পক্ষে গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, দুটি গোলই ছিল পেনাল্টি থেকে।
ম্যাচগুলোর বিশ্লেষণ:
সামগ্রিক পারফরম্যান্স: মায়ানমারের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে দুটি ম্যাচেই ড্র করাকে একটি ইতিবাচক অর্জন হিসেবে দেখা যেতে পারে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে মায়ানমার বাংলাদেশের চেয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে, তাই এই ড্রগুলো দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।
আত্মরক্ষা:
দুটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করে শুধু একটি করে গোল হজম করা প্রমাণ করে রক্ষণভাগ তুলনামূলকভাবে সুসংগঠিত ছিল। গোলরক্ষক এবং রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা নিজেদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ছিলেন।
আক্রমণভাগ ও গোল:
বাংলাদেশের দু্টি গোলই এসেছে পেনাল্টি থেকে। এটি দলের জন্য একটি চিন্তার বিষয়। দূরপাল্লার সট থেকে গোল করার ক্ষেত্রে দলের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে। প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে সুযোগ তৈরি করা এবং সেগুলোকে গোলে রূপান্তরিত করার কাজটি আরও উন্নত করতে হবে।
মাঝমাঠ:
মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ এবং আক্রমণ ও রক্ষণভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে আরও উন্নতি প্রয়োজন। মাঝমাঠ থেকে কার্যকর পাস এবং আক্রমণ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে দলের আক্রমণভাগ আরও শক্তিশালী হবে।
অভিজ্ঞতা অর্জন:
তরুণ খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়ক।
শক্তিশালী দিক:
লড়াই করার মানসিকতা এবং হার না মানা মনোভাব।
শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ড্র করার সামর্থ্য।অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের ধারাবাহিকতা।
উন্নতির জায়গা:
দূরপাল্লার সট থেকে গোল করার সক্ষমতার অভাব।
আক্রমণভাগের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি।
মাঝমাঠের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ও পাসিং।
শারীরিক সক্ষমতা এবং টেকনিক্যাল দক্ষতা আরও বাড়ানো।
সেট পিস থেকে সুযোগ তৈরি ও কাজে লাগানো।
ভবিষ্যতের জন্য তাৎপর্য:
মায়ানমার সফর বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ছিল। এই ম্যাচগুলোর ফলাফল এবং পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে দল ও কোচিং স্টাফ তাদের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছেন। ভবিষ্যতের টুর্নামেন্ট যেমন সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ, এএফসি, অলিম্পিক বাছাইপর্বের জন্য প্রস্তুতি নিতে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। দলের প্রয়োজন আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা যাতে খেলোয়াড়রা বিভিন্ন ধরণের প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে এবং নিজেদের মান উন্নত করতে পারে।
মে ২০২৪ সালের মায়ানমার সফর বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের জন্য একটি মিশ্র অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে যা এএফসি কাপে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায় । শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে দুটি ড্র অবশ্যই ইতিবাচক দিক, যা দলের দৃঢ়তা প্রমাণ করে।
বিগত সফরের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং উন্নতির জায়গাগুলোতে মনোযোগ দিয়ে মায়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানে থেকে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জনে কোচ কেমন পরিকল্পনা প্রনয়ণ করে এখন সেটাই দেখার বিষয়।