মইনুল আহাসান,ঢাকা-
কদমতলী থানাধীন দনিয়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ সোলেমান মিয়া এর মেয়ে খাদিজা আক্তার (১২)গত ৪ অক্টোবর নিখোজ হয়।পরিবারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খুজে না পেয়ে ৫ তারিখ কদমতলী থানায় জিডি করেন।সেই জিডির তদন্তভার পরে থানার উপপরিদর্শক মোঃ ইকবাল হোসেনের উপর।ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান,তদন্তের কাজে সে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটির বাবার সাথে ফোনে কথা বলে দেখা করতে চান। এমনকি তাৎক্ষণিক সমস্ত থানায় বেতার বার্তা প্রেরন করেন । ৬ তারিখ উপ-পরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়ে সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন । ৭ তারিখ সকালে সে ঘটনা স্থলে গেলে একটি ছেলে তাকে নিতে আসে,সে ভাবে হয়তো মেয়ের পরিচিত তাই তার সাথে যায়। কিন্তু দেখা যায় ছেলেটি তাকে যাত্রাবাড়ীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে,তখন মোঃ ইকবাল হোসেনের সন্দেহ হয়,এবং বলে কেন তুমি অন্য থানায় নিয়ে যাচ্ছো,আর তুমি কে? মেয়ের কি হউ? পুলিশের এমন প্রশ্নের মুখে ছেলেটি ভয় পেয়ে যায়। পরে ছেলেটিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়,তারমুখ থেকে স্মৃতি নামের এক বান্ধবীর নাম পাওয়া যায় আর বাদল নামের একজন। পরবর্তীতে মেয়ের বাবার সাথে দেখা করে স্মৃতির সাথে দেখা করা হয়। স্মৃতি জানায় তারা বিকেলে গোয়ালবাড়ি মোরে ওয়াজ শুনতে গেলে ২ জন ছেলে আমাদেরকে, তাদের সাথে ঘুরতে যেতে বলে,আমি চলে আসি,আর খাদিজা ওদের সাথে থাকে।এরপর অভিযান চলতে থাকে, পরে আরেকটি নাম সামনে আসে তার নাম কাল্লু, স্মৃতি জানায় সে অটো চালক। অনেক চড়াই উতরাই পার করে অনেক চেষ্টার পর কাল্লু কে আটক করা হয় একটা গ্যারেজ থেকে বলে জানায় ওই উপ-পরিদর্শক ।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রাথমিক পর্যায়ে সে অস্বীকার করলেও সে জানায় হ্যাঁ ঘটনার দিন আমি আর মামুন ছিলাম , সামনে আসে নতুন আরেকটি নাম ,সেটা হল মামুন ।মামুন কে ? কিন্তু এই মামুন কোথায় থাকে কেউ জানে না । অনেক খোঁজাখুঁজির পর কাদিমুল নামের একজন বলে স্যার মামুনের শ্যালক বাদল খানকা শরীফে এলাকায় থাকে।এরপর বাদল কে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।বাদল জানায় খাদিজা কোথায় আছে আমি কিছুই জানিনা, এমনকি তার দুলাভাইয়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে বলে আমি আমার দুলাভাইয়ের বাসা চিনিনা এমনকি আমি বাসার ঠিকানাও জানিনা,আমার বাবা জানে।পরে পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইকবাল হোসেন তার টিম নিয়ে বাদল সহ -বাদলের বাবার চায়ের দোকানে যায় এবং মামূনের অবস্থান শুনে লালবাগ, তৎক্ষণাৎ মামুনের ফোন নাম্বার নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শেষ অবস্থান জেনে সেই মুরুব্বিকে নিয়ে মামুনের বাসার লালবাগ থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সেখানে পৌছে লালবাগ থানায় বিষয়টি অবহিত করে লোকাল টিমের সহযোগিতা চাওয়া হয় । লোকাল টিমকে সাথে নিয়ে উপ পরিদর্শক ইকবাল হোসেন লালবাগ থানা শহীদনগর এলাকায় অভিযান করে কিন্তু মামুনকে বাচানোর জন্য মামূনের শ্বশুর বাড়ি না চেনার ভান ধরে। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল।সেই সময় মামুন বাড়ি থেকে বের হয়ে শ্বশুর কে দেখে কুশল বিনিময় করার সময় পুলিশফোর্স বুঝে ফেলে এটাই মামুন। তাকে আটক করে তখন।আটক করে মামুনের বাসায় যায়,সেখানে যেয়ে ৩ দিন ধরে হারিয়ে যাওয়া খাদিজা কে পায়। খাদিজা সম্পর্কে মামুন জানায় সে নিয়ে আসেনি,ওয়াজ শুনে বাসায় আশার সময় খাদিজা মামুনের পিছু নেয়,অনেক বুঝিয়েও তাকে রেখে আসতে পারিনি তাই নিয়ে আসছি। খাদিজা কে জিজ্ঞাসা করা হলে বলে আমি একাই আসছি,আমার কোন ক্ষতি হয়নি। পরবর্তীতে কদমতলী থানায় তাদের ধরে আনা হয়।অফিসার ইনচার্জ কে অবহিত করা হয় সমস্ত কিছু। মামলার প্রস্তুতি নেয়া হলেও খাদিজার বাবা মোঃ সোলেমান মিয়া জানায় তার মেয়ে অত্যন্ত সহজ সরল, হয়তো ইচ্ছা করেই গিয়েছিল তাই তারা মামলা করবেনা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খাদিজার বাবা এবং খাদিজাকে জিজ্ঞাসা করলে জানায় তার মেয়ে খাদিজার কোন ক্ষতি হয়নি সে ঠিক আছে। পরবর্তীতে তারা মামলা করবেনা এই মর্মে অঙ্গীকার নামা নিয়ে খাদিজা কে তার বাবার জিম্মায় তার আত্বীয় সজনের উপস্তিতে বুঝিয়ে দেয়া হয়।