স্টাফ রিপোর্টার,সিলেট:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।,
ওই উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকন।
তিনি জেলা পরিষদের সদস্য পদে থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করায় এবং নির্বাচন পুর্বে জেলা পরিষদে পদত্যাগ পত্র না দেয়ায় চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়ে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়।,
হাইকোর্ট দায়েরকৃত একটি রিট পিটিশেনের প্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে কারন দর্শানোর জন্য আদেশ জারি করা হয়।,
হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজ্ঞ বিচারপতি খন্দকার দীলুরুজ্জামানের একটি ডিভিজশন বেঞ্চ দায়েরকৃত একটি রীটের প্রেক্ষিতে ওই কারন দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করেন।
রীট পিটিশন নং ১১৩২৬/২০১৯।,
মোজাম্মেল হোসেন রুকন ধর্মপাশার নওদার গ্রামের মৃত আবদুর রশীদের ছেলে ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপির সহোদর ছোট ভাই।,
একই সাথে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি।,
রুকনের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে থাকার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ওই রীট পিটিশন দায়ের করেছেন ওই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ।,
মুরাদ সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।,
শামীম আহমদ মুরাদ গত ২৮ অক্টোবর দায়ের করা তাঁর রীট পিটিশনে উল্লেখ করেন, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকন ২০১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হন। তিনি এ পদ হতে পদত্যাগ না করে গত ২০১৯ সালের ১০ মার্চ ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতদ্বদ্বিতা করে নির্বাচিত হন। যা উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৮’এর ধারা ৮ (২) (ঙ)’এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
রুকন বিধিসম্মতভাবে পদত্যাগ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি হিসাবে অংশ গ্রহণ করেননি দাবি করে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করা হয়।
শামীম আহমদ মুরাদের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও বাকির উদ্দিন ভুইয়া এই রীট পিটিশন দায়েরের হাইকোর্টের বিজ্ঞ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী’র নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে মোজাম্মেল হোসেন রুকন কোন কতৃত্ববলে ‘ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে’ ক্ষমতায় আছেন তার কারন দর্শানোর জন্য চার সপ্তাহের রুল নিশি জারী করেন।
মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. এমরান হোসেন এ সংক্রান্ত উকিল নোটিশের জবাবে লিখেছেন, ধর্মপাশার বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুক জেলা পরিষদ সদস্য হিসাবে তার পদত্যাগ বিধি সম্মত হয়নি।
বুধবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসাবে অন্য কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিলে পদত্যাগপত্র জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে দিতে হবে। কিন্তু তিনি দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে। তাই তার পদত্যাগ বিধিসম্মত হয়নি।
তবে নির্বাচন কালীন সময়ে থাকা সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মুরাদ আহমদ বলেছেন ‘পদত্যাগপত্র পেয়েই আমরা মোজাম্মেল হোসেন রুকনের মনোনয়ন গ্রহণ করেছিলাম।
সুনামগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম জানান, মোজাম্মেল হোসেন রুকন সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বরাবরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ’র সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছের মর্মে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন এর অনুলিপি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠিয়েছেন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ আছে। মনোনয়নের সঙ্গে এটি পেয়েই আমরা তখন মনোনয়ন গ্রহণ করি। এখানে প্রার্থীর নিজের অন্য কোন ধরণের গাফিলতি থাকলেও সেখানে আমার কোন ভুল ছিল না।,
জানতে চাইলে মোজাম্মেল হোসেন রুকন বলেন, আমি জেলা পরিষদ সদস্য পদ হতে পদত্যাগ করারপর যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।
বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা পরিষদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মর্মে মোজাম্মেল হোসেন রুকন জেলা পরিষদে কোন পদত্যাগপত্র দেননি।,