মোঃ আবু সঈদঃ
হাওরবেষ্ঠিত জেলা সুনামগঞ্জের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নির্ধারিত স্হানে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত জায়গায় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও স্বপ্ন এখনো পূর্ণতা পায়নি। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সুনামগঞ্জের উচ্চশিক্ষার হার আরো সহজলভ্য হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া প্রশাসনিক অনুমোদনে জমির মৌজা ও দাগ নম্বর উল্লেখ করা আছে। এতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস মৌজার ১২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণে প্রস্তাবিত রয়েছে। এখানে বিপুল পরিমাণ সরকারি খাস ভূমি রয়েছে। যাহা ভূমি অধিগ্রহণে সরকারি ব্যয় সাশ্রয় হবে।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জমি যেখানে চিহ্নিত করা হয়েছে নিকটতম পশ্চিম সীমান্তে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক। যাহা স্হাপন কাজ সম্পন্ন হলে বাস থেকে নেমে ৪/৫ মিনিটেই পায়ে হেটে শিক্ষাঙ্গনে যেতে পারবে। জানা যায়, সিলেট- সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কটি শান্তিগঞ্জ সীমানায় জয়কলস মৌজার এবং সুনামগঞ্জ সদর সীমানায় কাঠইর মৌজার মধ্যবর্তী মানচিত্র দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। রাস্তার নিকটবর্তী ভূমিকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। উত্তর,দক্ষিণ কিংবা পশ্চিম যেকোন প্রান্ত দিয়ে ফটক নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সুবিধা রয়েছে। বাস হতে যাত্রী সাধারণও বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। তাছাড়া এরই নিকটতম উত্তর-পশ্চিম পাশে বৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অবস্হিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আবাসিক অবস্হানকারী অভিভাবকেরা হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নিতে সহজলভ্য হবে। মেডিকেল কলেজের আবাসিক অবস্হানকারী শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স,স্টাফ সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শিক্ষার্থী ও আবাসিক অবস্হানকারী শিক্ষার্থীরা এবং সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে অবস্থানরত শিক্ষক,স্টাফসহ কর্মকর্তা- কর্মচারীদের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিশ্ব বিদ্যালয়ের হলে অবস্থান না করে নিজ নিজ সুবিধাভোগ করতে পারবে।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্ধারিত স্হানে বাস্তবায়নে বাঁধাস্বরুপ একটি মহল শুরু থেকেই উঠে পড়ে লেগে আছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্হায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি করে চক্রান্তে লিপ্ত। হাওরবেষ্ঠিত সুনামগঞ্জ জেলায় মরুভূমির উদাহরণ দেখিয়ে সচেতন মহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে উচ্চশিক্ষার পথকে বাঁধাগ্রস্ত করা সমীচিন নয়। কালের বিবর্তনে ভাগ্যের পরিক্রমায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরটি মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে ভারত সীমান্তে প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু জেলার ১২ টি উপজেলার মধ্যমনি মানচিত্রে শান্তিগঞ্জ উপজেলাকে ধারণ করে।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত স্হানটি জেলার সবকয়টি উপজেলার মধ্যস্হলে এবং উপজেলাগুলোর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্হায় উন্নত। সিলেট-
সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ৯ টি উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্হা সম্পন্ন দেখার হাওরের দক্ষিণ প্রান্তে বিশাল সরকারী খাসভূমির খতিয়ানভূক্ত এলাকায় নির্ধারিত স্হানটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। ইহার পশ্চিম সীমানাঘেষা দিরাই-শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের সুবিস্তুত যোগাযোগ মাধ্যম,দক্ষিণ প্রান্তে জগন্নাথপুর উপজেলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ মাধ্যম,পূর্বপ্রান্তে সুবিপ্রাবি সীমানাঘেষা ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা এবং উত্তরপ্রান্তে ভারত সীমান্তে অবস্হিত সদর উপজেলা। জেলা শহরটির দুইদিক সুরমা নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় ফলস্বরূপ জেলা শহরটি দীর্ঘ সময়েও প্রসার লাভ করতে পারেনি। তাছাড়া জেলা শহরে কিংবা শহরতলীতে সীমিত জায়গায় জনবহুল স্হানে বিশ্ববিদ্যালয় স্হাপন করে শহরে যানজট সৃষ্টি করলে জনগণের ভোগান্তি বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে, নদী পার হয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্হাপনের পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নে নিরুৎসাহিত করা ছাড়াও আগামী প্রজন্মের কাছে নিছক বুদ্ধিহীনতার পরিচয় ঘটবে। যেখানে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্হা চলমান সেখান পাহাড়ের পাদদেশে কিংবা নদী পার হয়ে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্হাকে কঠিনতর করে শিক্ষার্থীদেরকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও বিচ্ছিন্ন ঘটনার মুখোমুখি করা আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়। হিংসাত্মক মনোভাবের বশবতী হয়ে বারংবার স্হাপন কাজে বাঁধাগ্রস্থ করা নীতিকথা নয়।
তাই সচেতন মহলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে অনুকুল পরিবেশ সুবিবেচনায় নির্ধারিত স্হানে স্হায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়নে নির্মাণ প্রকৌশলীদের প্রক্রিয়া গ্রহণ অতীব প্রয়োজন।