আজিজুল হক আজু : মাতারবাড়ী থেকে
মহেশখালীর মাতারবাড়ী পশ্চিমা বেড়িবাঁধ নিয়ে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের উদ্বেগ এবার তীব্র সংকটে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা এই বাঁধের দুর্বলতা এখন স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিনই উত্তাল ঢেউ আর জোয়ারের আঘাতে বাঁধটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বর্ষায় পানির তীব্র চাপ ও লবণাক্ততা বাঁধের অবস্থা আরও নাজুক করে তুলেছে। এলাকার শত শত মানুষ ভয়ে দিন কাটাচ্ছে, যদি বাঁধ ভেঙে তাদের বসতভিটা আর কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে যায়।
উন্নয়ন বনাম টিকে থাকার লড়াই:
মাতারবাড়ীতে চলমান বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য বড় প্রকল্পগুলো নিয়ে স্থানীয়দের মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও এই প্রকল্পগুলোর ফলে বেড়িবাঁধের উপর চাপ বহুগুণ বেড়েছে। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির আড়ালে স্থানীয়দের টিকে থাকার লড়াই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। “উন্নয়ন ভালো, তবে আমাদের রক্ষা না করে যদি সব কিছু পানিতে ডুবে যায়, তাহলে এই উন্নয়ন দিয়ে কী হবে?”—প্রশ্ন ভুক্তভোগীর।
পরিবেশ ও উপকূলীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করছেন—পশ্চিমা বেড়িবাঁধের দুর্বলতা অবিলম্বে ঠিক না করা হলে পুরো মাতারবাড়ী অঞ্চলই প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছেন।
প্রশাসনের নিরবতা:
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, বিভিন্ন সময়ে সমস্যাটি প্রশাসনের নজরে আনা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি। একটি সম্পূর্ণ সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব নয় বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
পশ্চিমা বেড়িবাঁধের বর্তমান পরিস্থিতি শুধু একটি অঞ্চল নয়, বরং পুরো উপকূলীয় নিরাপত্তার সংকেত। এলাকাবাসীর দাবি, টেকসই উন্নয়নের নামে তাদের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের সুরক্ষার প্রশ্ন যেন উপেক্ষিত না হয়।
সমাধান আসুক আজই—এমন আকাঙ্ক্ষায় বুক বেঁধে বসে আছেন মাতারবাড়ীর মানুষ।