ঢাকাসোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

ইসলামে বন্ধুত্বের প্রভাব!

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৫৯ অপরাহ্ণ

Link Copied!

——-
বন্ধু মানে শুধু মজা করা বা আড্ডা করা নয় বন্ধু মানে একে অপরের খুশিতে খুশি হওয়া, একে অপরের দুঃখে পাশে দাঁড়ানো, আবার একে অপরের স্বপ্ন পূরণের রাস্তায় সঙ্গী হয়ে ওঠা। বন্ধুদের স্থান জীবনে পরিবারের ঠিক পরেই আসে। আমাদের জীবনে বন্ধুদের গুরুত্ব ঠিক কতটা তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বন্ধুত্বের যেমন ভাল দিক রয়েছে; তেমনি রয়েছে এর জঘণ্যতম দিক। সাধারনত একটা ছেলে, কিংবা মেয়ে যখন নবাগত শিশু থেকে আস্তে আস্তে যখন কথা বলা শিখে,হাটঁতে শিখে,ঠিক সেই মুহূর্তে তাদের খেলার সাথীদের তাঁরা খুব অনুভব করে। এবং তাদের পছন্দমত খেলার সাথী তারা ঠিক করে নেয়। এভাবেই শেষ হয়, ছোট বেলার সোনালী জীবন। যা, মানুষের জীবনে দ্বিতীয়বার আসেনা। একবার-ই এসে থাকে।

শৈশব শেষ হওয়ার পরে, চলে আসে কৈশব, বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হার মতে, (১০-১৯) বছরের মাঝামাঝি বয়সকে কৈশর বয়স হিসেবে ধরা হয়েছে। আর এই সময়টা হচ্ছে জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এই সময় যদি সৎ,চরিত্রবান এবং নৈতিক চরিত্রের অধিকারী বন্ধু জীবনের অধ্যায়ে যদি যোগ না হয়, তাহলে এর ব্যতিক্রম যে ঘটবে,তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। একটা ছোট নবজাতক শিশু যখন, তার মা -বাবা, ভাই-বোন অথবা যে কাওকে যদি লাথি দেয়,সবাই কিন্তু তার পায়ে আদর করে, মনে কোন রকম কষ্ট নেয় না, ঠিক একই শিশু যখন পরিনত বয়সে উপনীত হয়,তখন যদি তিনি কাওকে ছোট বেলার মত লাথি মারে তখন সেটা কেউ মানবে না, কারণটা হল, ছোট বেলা ছিল ভাল বাসার সম্পর্ক আর এখন হচ্ছে আইনের সম্পর্ক,এখন আর সেই ছোট বেলার আচার আচরণ কেউ মানবে না,বরং অপমান বোধ করবেন। এজন্যই যখন,ছেলে -মেয়েরা বন্ধুত্ব গড়বে কারও সাথে, অভিভাবকদের অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত।

আল্লাহ তায়ালা কুরআ্নুল কারীমে এরশাদ করেন,” হে ঈমানদারগন! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদী লোকদের সঙ্গী হও। (সূরা আত তাওবাঃ ১১৯)।

আর ঈমানদার পুরুষ এবং ঈমানদার একে অপরের বন্ধু। তারা ভালো কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। নামাজ প্রতিষ্ঠিত করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। তাদের ওপর আল্লাহতায়ালা অনুগ্রহ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী এবং সুকৌশলী।
(সূরা আত তওবাঃ ৭১)

এছাড়াও হাদিসেও বন্ধুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে,
হজরত আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ মানুষ তার বন্ধুর রীতি নীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে। (সুনানু আবু দাউদ।)

শুধু তাই নয়;অসৎ বন্ধু ইহলোকেও কাজেও আসবে না এবং পরকালেও কাজে আসবে না। অসৎ বন্ধু পরকালে শত্রুতে পরিণত হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন- “সে দিন (কিয়ামতের দিন) মুত্তাকীরা ছাড়া সব বন্ধু একে অপরের দুশমন হয়ে যাবে।” (সূরা যুখরুফ : ৬৭)।

একটা গোলাপ একটা বাগানের সৌন্দর্য বাড়াতে পারে,ঠিক তেমনি একটা সৎ বন্ধু তোমার জগৎ বদলে দিতে পারে। প্রবাদ বাক্যে আছে,” সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস,অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ” কথাটার আসলেই কার্যকারিতা রয়েছে। পারস্য কবি শেখ সাদী বলেন,” মন্দ লোকের সাথে যার উঠা বসা,সে কখনো কল্যাণের মুখ দেখবে না। এছাড়াও ভারতের সাবেক ১১তম মুসলিম রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম আজাদ স্যার বলেন, একটি ভাল বই একজন বন্ধুর সমান, আর একজন ভাল বন্ধু একটি লাইব্রেরির সমান। একজন মানুষ বন্ধু বান্ধব ছাড়া চলা ফেরা করবে, এটা অসম্ভব। কেননা,বন্ধু বান্ধব এটাও জীবনের একটা অংশ।

একটা ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক, যদি কেউ সুন্দর একটা ফুলবাগান দিয়ে ঘুরে আসে,নিশ্চিত তার মনটা অনেক ফুরফুরা লাগবে। ভাল এবং সৎকর্মশীল বন্ধুরাও সেই ফুলের বাগানের মত। আর যদি কেউ ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে হেঁটে যায়, এটা নিশ্চিত যদি তার নাকে সমস্যা না থাকে তবে অবশ্যই দুর্গন্ধ সে পাবেই,এবং সেখানে কোন সুস্হ মানুষ বেশিক্ষন থাকতে পারবে না। তবে যারা এ কাজে অভ্যস্ত তাঁদের হয়ত সমস্যা হবে না,কারণ তারা এই কাজে অভ্যস্ত। আর কথায় আছে,মানুষ অভ্যাসের দাস। একটা খারাপ বন্ধুও হতে পারে একটা দুর্গন্ধময় ডাস্টবিনের ন্যায়,বরং তার চেয়েও ভয়ংকর। একটা ছেলে বা মেয়ে একদিনে খারাপ হয় না, দিনের পর দিন খারাপ বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে মাদক,খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য আমাদের উচিত, যারা অভিভাবক হিসেবে আছি,আমাদের সন্তান,অথবা ভাই, বোন, বন্ধু সহ যারা আপনজন আছে,তাঁরা কার সাথে মিশতেছে কি করছে, সব দিকে লক্ষ্য রাখা আমাদের দায়িত্ব। এবং যারা নামাজ পড়ে,কোরআন, হাদিস, ইসলামিক সাহিত্য পড়ে, সত্য কথা বলে, ভাল করে একাডেমিক পড়াশুনা করে,মা -বাবা, শিক্ষকদের কথা মত চলে,বড়দের সম্মান করে, ছোটদের স্নেহ করে, নেশা মুক্ত জীবন জাপন করে, নৈতিক চরিত্র যার ফুলের বাগানের মত, এমন বন্ধুদের সাথে যদি আপনার আমার সন্তানদের মিশতে দেই,অন্তত পক্ষে সে আর যাই হোক কখনো খারাপ মানুষ হতে পারবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, উত্তম আনুগত্য এর বিনিময়ে উত্তম পুরস্কার ছাড়া আর কি হতে পারে বল। সূরা আর রহমান,(আয়াত : ৬০)।

আমরা ভাল কাজে একে অপরকে সাহায্য করব, তাহলে আল্লাহ আমাদের সাহ্যয্য করবেন। সৎ বন্ধুত্বের জয় হোক, এটাই কামনা করি।

——–
লেখক :
মো. আব্দুল করিম গাজী
শিক্ষার্থী,আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা,ফেনী।

232 Views

আরও পড়ুন

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের উপর ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের হামলা, আহত অর্ধ শতাধিক

পাঠকের অনুভূতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি

তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা, সাইনবোর্ড শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন