প্রতিবেদক: তাওহীদ জিহাদ
বাগেরহাট সরকারি প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজে নাটকীয় ও চাঞ্চল্যকর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ কবিরাজকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার সময় আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে, কলেজ সংলগ্ন পাঁচ রাস্তার মোড় এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, রাতের সেই সময় সৌরভ কবিরাজকে এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ঘিরে ফেলেন। তখন থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
উল্লেখযোগ্য যে, গত ৫ আগস্ট ‘স্বৈরাচারী সরকার পতনের’ পর থেকেই সৌরভ কবিরাজকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও সন্দেহ দানা বাঁধে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এলাকায় নিয়মিতভাবে ঘোরাঘুরি করতেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগপন্থী নানা উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, এসব পোস্ট এবং কার্যকলাপ এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
১৪ মে রাতের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রথমে সৌরভকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ জেরে কিছু বহিরাগত ব্যক্তি এসে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় কলেজের এক শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে যায় এবং আরও কয়েকজন আহত হন।
ঘটনার পরপরই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে ধীরে ধীরে প্রকৃত ঘটনা জানা গেলে পরিস্থিতি শান্ত হতে শুরু করে। স্থানীয়রা এবং অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় সংঘর্ষ থেমে যায়।
পরে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেন, সৌরভ কবিরাজকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। তারা বাগেরহাট সদর মডেল থানায় যোগাযোগ করে রাতেই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ঘটনার বিষয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ উল হাসান বলেন,
“সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা সৌরভ কবিরাজ নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় এনেছি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নিয়ে একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা এখনও কিছুটা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা সৌরভের দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি করেছেন। প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং কলেজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।