“শেখ হাসিনার উন্নয়ন, কৈশোরের জাগরণ” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে লক্ষ্য রেখে ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ইং থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত কিশোর কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের ৪৮৮৩ ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়।
এই প্রকল্পের আওতায় ৯৫ জন ফিল্ড সুপারভাইজার,১০৮৬ জন জেন্ডার প্রোমোটার,২৯২২ জন সঙ্গীত শিক্ষক ও ২৮১৪ জন আবৃত্তি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেন্ডার প্রোমোটাররা দক্ষতার সহিত ক্লাবগুলো পরিচালনা করে আসছিল। ক্লাবগুলোতে জেন্ডার প্রোমোটার, সঙ্গীত শিক্ষক ও আবৃত্তি শিক্ষকদের দৈনিক ভিত্তিতে যে ভাতা দেওয়া হচ্ছিলো যা তাদের পরিবার চালানোর একমাত্র উপায় ছিল।
এই প্রকল্পে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চলমান শিক্ষার্থী রয়েছে যারা কিনা পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে দুই দিন করে ক্লাব পরিচালনা করতো এবং বেশির ভাগ ছেলে-মেয়ে নিম্ন ঘরে সন্তান হওয়ায় নিজের পরিবার ও পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য মুখে হাসি ফুটেছিলো।
জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার এমন একটি প্রজেক্টের ব্যবস্থা করে যা বেকার সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে। কিন্তু করোনা ভাইরাস তাদের হাসিমুখে ছাই দিয়েছে সকল স্বপ্ন অন্ধকারে পরিনত হয়। সেই সব ছেলে-মেয়েদের পরিবার ও পড়াশোনার খরচ যোগান দিতে কষ্ট হচ্ছে। ২৫ মার্চ থেকে দীর্ঘ কয়েক মাস ক্লাবগুলো বন্ধ থাকার কারনে কোন প্রকার ভাতা পাওয়া হয় নাই। একারনে বর্তমান পরিস্থিতিতে ১০৮৫ জন জেন্ডার প্রোমোটার, ২৯২২ জন সঙ্গীত শিক্ষক ও ২৮১৪ জন আবৃত্তি শিক্ষকের জীবন পরিচালনা করা অনেক কষ্টকর হয়েছে। অথচ একই প্রকল্পের ফিল্ড সুপারভাইজাররা নিয়মিত বেতন পেয়েছে ।
অনেক অপেক্ষার পর ১৭-১১-২০২০ ইং তারিখের প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি(পিইসি) এর মিটিং এ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তারের সভাপতিত্বে এক অমানবিক সিদ্ধান্ত নেয় যা প্রায় ৭০০০ মানুষের জীবনকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দৈনিক ভিত্তিকের অজুহাত দেখিয়ে এই করোনা মহামারিতে ৭০০০ কর্মচারীকে কয়েক মাস ধরে বেতন বঞ্চিত করা হয়েছে। অথচ ডিপিপিতে কোথায় “কাজ নাই ভাতা নাই” শব্দটি লেখা নাই। করোনা মহামারিতে সবাই প্রনোদনা পেয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পের কর্মচারীরা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে অভাব, অনটনে বিপর্যস্ত অবস্থায় জীবন পরিচালনা করেছে। এই প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ে জনবলের মাধ্যমেই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, কিশোর অপরাধ দমন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, জেন্ডার বেইজ ভায়োলেন্স দূরীকরণ, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে দেশকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ।
পিইসি মিটিং এর এই অমানবিক সিদ্ধান্ত ৭০০০ মানুষের মনোবল ভেঙে দিলেও ক্লাবগুলো পুনোরায় চালু করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে যেহেতু দৈনিক ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে সে ক্ষেত্রে ক্লাবগুলো পরিচালনার জন্য নিজ খরচে যাতায়াত করতে হয়। যারা এই প্রকল্পের মধ্যে চলমান শিক্ষার্থী আছেন তাদের অভিভাবকদের অনেক নেগেটিভ প্রশ্নের স্বীকার হতে হচ্ছে এবং বলছে যাতায়াতের জন্য কোন টাকা দিতে পারবো না,ফলে যারা ক্লাবগুলো পরিচালনা করেন তাদের এক ধরনের হতাশায় ভুগতে হচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছেন, ফলে মানসিক বিপর্যস্ত হচ্ছে তাদের।
অনেকের অভিযোগ আছে, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর থেকে ভাতার ব্যবস্থা করে দিতে পারবে এমন কথা বলে প্রতারক চক্র কর্মচারীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। ক্লাবের কর্মচারী’রা বলছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতার পরিচয় পেতে চাই , উনি একজন মমতাময়ী নেত্রী,তিনি আমাদের নিরাশ করতে পারেন না।
যদি বিষয়টি সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে পারেন যে এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তবে তিনি আমাদের প্রতি হয়তো বিবেচনা করতেন। সেই সাথে সকলের দাবি করোনা মহামারী ছিল এক ধরনের পরিস্থিতির স্বীকার এবং বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস চলমান তবুও অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাবগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালু করেছি।তাহলে কেন বিগত কয়েক মাসের ভাতা প্রদান করা হবে না।তাই সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি বেতন-ভাতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা যায় কিনা।
রায়হান সরকার, কাহারোল প্রতিনিধি: