মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা,
মহেশখালী বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের এক অমূল্য সম্পদ—যা আমাদের কৃষি, মৎস্য ও লবণ অর্থনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতি, জীবিকা ও পরিচয়ের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এই দ্বীপ শুধু ভৌগোলিক একক নয়; এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনপ্রণালী, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে টিকিয়ে রেখেছে।
আমরা লক্ষ্য করছি, উন্নয়নের নামে এই দ্বীপের জমি দখল ও স্থানীয় জনগণকে প্রান্তিক করার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব উদ্যোগ কেবল ভৌত অবকাঠামো দাঁড় করাবে, কিন্তু ধ্বংস করবে মানুষের জীবনধারা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ও সামাজিক কাঠামো।
আমাদের অবস্থান স্পষ্ট:
মহেশখালীকে পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। জমি দখলের নামে কোনো উন্নয়ন গ্রহণযোগ্য নয়।
আমরা চাই, সরকার ও নীতি-নির্ধারকরা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন:
(১) টেকসই উন্নয়নের নীতি: স্থানীয় কৃষি, মৎস্য ও লবণ শিল্পকে শক্তিশালী করা এবং সেগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করা।
(২) জনঅংশগ্রহণ: মহেশখালীবাসীর মতামত ও সম্মতি ছাড়া কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না।
(৩) সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত সুরক্ষা: উন্নয়নের নামে যেন স্থানীয় সংস্কৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস না হয়।
(৪) অধিকার ও ন্যায়বিচার: পুনর্বাসনের নামে ভ্রান্ত প্রতিশ্রুতি নয়; মানুষের জমি, জীবিকা ও সম্মান রক্ষাই হতে হবে অগ্রাধিকার।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, প্রকৃত উন্নয়ন কখনো মানুষের অধিকার হরণ করে না। মহেশখালীর জনগণ উন্নয়নের বিপক্ষে নয়, তবে তারা বিক্রি বা আপসের উন্নয়নের বিপক্ষে। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান— মহেশখালী চলবে মহেশখালীবাসীর শর্তে। ন্যায্যতা, অংশগ্রহণ ও টেকসই নীতির ভিত্তিতেই হবে উন্নয়ন।
আমরা আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি, আপনি এই দ্বীপকে রক্ষার জন্য কার্যকর ও ন্যায়ভিত্তিক পদক্ষেপ নেবেন।
ইতি,
মহেশখালীর জনগণ