নিউজ ডেস্ক :
ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন বহিষ্কৃত নেত্রীরা। একইসঙ্গে তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
আজ সকালে কলেজ গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, কিভাবে তদন্ত ছাড়া এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার এবং এর সুষ্ঠু বিচার না করা হয় তাহলে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।
বহিষ্কৃত ১ নম্বর সহসভাপতি সোনালি আক্তার বলেন, সোমবার দুপুর থেকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস আপুর ওপর হামলার কোনো বিচার না করে আমরা যারা এটির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার না হয়ে একপাক্ষিক বিচার হয়েছে। এই একপাক্ষিক বিচারের প্রতিবাদে আমরা একটু পর ধানমন্ডির পার্টি অফিসে গিয়ে আমরণ অনশন করব।
এর আগে রোববার রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।
একইসঙ্গে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
উল্লেখ্য, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে সংগঠনটির সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে রোববার দিনভর উত্তপ্ত ছিল কলেজ ক্যাম্পাস। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের দুজনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বহিষ্কার দাবি করে। একই দিন সন্ধ্যার আগে কলেজ মিলনায়তনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিনসহ দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
তামান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে কলেজ প্রশাসন ও পুলিশের মাধ্যমে লেগুনায় করে ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসছাড়া হওয়ার খুশিতে তাঁদের বিরোধী পক্ষের নেত্রীরা ক্যাম্পাসে আনন্দমিছিল করেন।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কৃত নেত্রীরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষে ছিলেন।