ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের পশ্চিম কোন থেকে ভেসে আসছে খেলোয়াড় আর দর্শকের চিৎকার। পাশেই দাঁড়ানো কিছু শিক্ষকদের মুখে আনন্দের ঝিলিক। আনন্দ-উল্লাস থাকবেই না কেন? সেমিফাইনালে ইসলাম শিক্ষা বিভাগকে হারিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টে ফাইনালে খেলবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ৷ গত টুর্নামেন্টেও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাথে ফাইনাল খেলেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। এ নিয়ে টানা তিনবারের ফাইনালে উঠলো এই বিভাগটি।
আজ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ফাইনালের টিকিট কাটতে মাঠে নামে ইসলাম শিক্ষা এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ। খেলার শুরুতেই সুযোগ পায় ইসলাম শিক্ষার খেলোয়াড়েরা। সুযোগের হাতছাড়াও করেননি তারা। প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে প্রথম বলটা জড়াতে নিজেদের বুদ্ধি এবং দক্ষতার সর্বোচ্চ ব্যবহারটুকু করেছেন। তাতে অবশ্য ভড়কে যাননি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। মাঠে প্রত্যেকেই তার সামর্থ্য দেখিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরেই জুনান চাকমার দারুণ এট্যাকে ১-১ সমতায় ফিরে পলিটিক্যাল সাইন্স।
সমান গোলের সমতা নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে উভয়ই বিভাগ। পাল্টা আক্রমণে দু'দলের খেলোয়াড়েরা সমান তালে পাল্লা দিচ্ছিলেন। শেষভাগের মাঝামাঝিতে ফাউল করে বসে ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট। ফাউলে পাওয়া ফ্রী-কিকে শট করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান দলের মিড ফিল্ডার মিন্টু। সুযোগ পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ায় উইংগার ফাহিম। পুনর্বার আনন্দে-উল্লাসে ভেঙে পড়েন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের খেলোয়াড়, শিক্ষক এবং সমর্থকেরা। খেলা শেষে ২-১ গোলের জয় নিয়ে আনন্দের রেশ অব্যাহত রাখেন তারা।
সেমিফাইনালের জয় নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান দলের অধিনায়ক জাবেদ কায়সার বলেন, "প্রথমার্ধের প্রথম গোলটা খেয়ে আমরা একটুও মনোবল হারাইনি। খেলোয়াড়দের আগেই বলেছিলাম, গোল খেলেই কাম ব্যাক করার মতন নিজের সেরাটা দিতে হবে। সবাই তার সামর্থ্যের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে এবং ফলাফল আমাদের পক্ষে এসেছে।"
শেষ দুইবার ফাইনাল খেললেও চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটা ভেড়েনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আঙ্গিনায়। তবে এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে খুব আশাবাদী কাপ্তান জাবেদ। ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে তিনি আরও বলেন, "আমাদের ব্যাচ (১৬-১৭ সেশন) থেকে মূল স্কোয়াডে ছয়জন খেলছি। মিন্টু, অমিত, হাসান, তাসকিন, সৈকত এবং আমি। হয়তো এটাই আমাদের শেষ টুর্নামেন্ট। শেষটা সুন্দর করে সাজাতে চাই। মাঠে আমরা আমাদের সেরাটা দিতে পারলে অবশ্যই প্রথমবারের মতন চ্যাম্পিয়ন হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।"
মাঠে খেলোয়াড়দের হয়ে বাড়তি অনুপ্রেরণার কাজটা করেছিলেন সমর্থকেরা। পাশাপাশি শিক্ষকদের উপস্থিতি খেলোয়াড়দের বেশ চাঙা করেছে। শিক্ষক এবং সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে জাবেদ বলেন, "মাঠে শিক্ষকদের (অধ্যাপক সাব্বির, অধ্যাপক গোবিন্দ এবং সহযোগী অধ্যাপক আলিফ লায়লা) উপস্থিতি আমাদের ভালো খেলতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। আর আজকের জয়ের সিংহভাগ ভূমিকা আমাদের দর্শকদের। তারা টুর্নামেন্টের শুরু থেকে যেভাবে আমাদের সমর্থন করে আসছে, অবিশ্বাস্য। আশা করছি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বাকি দিনগুলোতেও তারা এভাবে পাশে থাকেবন।"
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০