রাফিউল ইসলাম (রাব্বি) স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর:
রংপুরে গত চার দিনের ব্যবধানে ৩টি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী মা ও শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে রংপুর নগরীতে অবস্থিত উওম সেবা হাসপাতালে আখি মনি আক্তার ও তার নবজাতক সন্তানের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার আখি মনি আক্তার গত শনিবার উওম সেবা হাসপাতালে দালালেরর মাধমে সিজার করার জন্য ভর্তি হন। সিজারের মাধ্যমে শনিবার রাতে তিনি সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু সন্ধ্যায় আখি মনি আক্তার ও তার সন্তান উওম সেবা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করলে কৌশলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে ঘটনাস্থলে গেলে উওম সেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্স কাউকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, হাসপাতালটির কোনো অনুমোদন নেই। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার রংপুর ধাপে অবস্থিত অরিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় অনামিকা আক্তার নামের এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ গ্রাম থেকে সিজার করতে এসে ভুল অপারেশনের কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গোপনে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি রফাদফা করেন।
অব্যাহত মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিস যৌথভাবে দুই শতাধিক অনিবন্ধিত ক্লিনিকের মধ্যে শুধুমাত্র গত বৃহস্পতিবার অরিয়ন হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় এবং ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।
৩ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় নির্দেশ প্রদান করলেও তা এখন লাল ফিতায় বন্দি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় ৪ দিনে ৫ জন মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইতোমধ্যেই অবৈধ ক্লিনিক বন্ধের অভিযান শুরু হয়েছে, পর্যায়ক্রমে যে সব ক্লিনিক অবৈধ রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উওম হাসপাতালের পরিচালক আক্তারুজ্জামান ভোলা রোগী মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করলেও এ ঘটনায় তাদের কোন এুটি ছিল না বলে দাবি করেন।
রংপুর জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহমুদ এলাহী বিপ্লব জানান, বারবার স্বাস্থ্য বিভাগকে অনুমোদনহীন ক্লিনিকগুলো বন্ধের জন্য বলা হলেও জেলা সিভিল সার্জন কিংবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তিনি অবিলম্বে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধের আহ্বান জানান।