———-
পৃথিবী আধুনিকায়ন হয়েছে। মানুষগুলোও হয়েছে সভ্য। তারই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানুষের চিন্তা-চেতনা নিয়ে আলোকপাত। কিভাবে মানুষকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা যায়, তা যেন ট্রেনিং করানো হয় মাজারের খাদেমদের।
হ্যাঁ! হযরত শাহ্ জালাল ইয়েমেনী (রাঃ) এর মাজারের কথাই বলছি।পবিত্র ভূমি বলে খ্যাত সিলেট। সিলেট শহরের আম্বরখানা মোর থেকে একটু এগোলেই এই মাজার, মাজারে প্রবেশ পথে ভিক্ষুকের অভাব নেই। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে, তাদের কাছে হাত পাতলেই তারা প্রথম অবস্থায় কিছু দেবে, দেখা যায় একের পর এক ভিক্ষুকদের সিরিয়্যাল বেড়েই চলে।
যত আগাবেন ততই এই সিরিয়্যাল দীর্ঘ হবে।
তাদের যদি বলা হয় ভিক্ষা করেন কেন, কাজ দিলে করবেন?
উত্তর হলো “আপনি ভিক্ষা দিবেন নাহ, নাই। কাজের কথা কেন বলেন? আপনি না দেন অন্য জন দিবে। কাজ করে কি পাবো, কত পাবো?” এই রকম বিব্রতকর প্রশ্ন ছুড়ে দেয় তারা।
এত গেল বাহিরের চিত্র। ভেতরে ঢোকার পরের চিত্র কি বলে বর্ণনা করা যায়, তার ভাষা আসলে জানা নেই। যদি পৃথিবীর নামিদামী সাইকোলজিষ্টরাও এই অবস্থার সম্মুখীন হন তবে তারাও ঐ লোকদের কাছে হেরে যাবেন।
হযরত শাহ্ জালাল ইয়েমেনী (রাঃ) এর কবর জিয়ারত করতে ঢোকার সময় কিছু খাদেম আছে, যারা আগন্তুকদের উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে,”মাজারে আসছেন, জিয়ারতের আগে কিছু দান করে যান।” আপনি তাদের কথা উপেক্ষা করে যত পা এগোবেন, তাদের বলার ধরন ও ততটাই পরিবর্তন হতে থাকে। তাদের কথা শুনলে মনে হবে দান না করাটাও একটা পাপ কাজ। যার ইচ্ছে দান করবে,যার ইচ্ছে করবে নাহ। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে তাদের এই রকম দান নিয়ে ব্রেনওয়াশ দেখলাম।
আর তখন আমার মনে পড়তেছিল সৈয়দ ওয়ালিউল্লার লিখা “লালসালু ” উপন্যাসের কথা। মনে হচ্ছিল মজিদও তাদের থেকে ভালো ছিল।আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে মাজার ব্যবসা ও আধুনিকায়ন হয়েছে।
—————
কে.এস সবুজ বেপারী
শিক্ষার্থী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল।