মোঃ মোঃরায়হান আলী:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে এক প্রধান শিক্ষকের কারণে ৬ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিতে বিড়ম্বনায় পড়েছে ওই শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় থেকে তিন ঘন্টাব্যাপি ছয় শিক্ষার্থী কাগজপত্র পাওয়ার দাবিতে উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নিকট তাদের দাবি সম্পর্কে অবহিত করে স্মারকলিপি প্রদান করে। ছয় শিক্ষার্থী যাতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্বাহী অফিসার আশ্বাস প্রদান করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হলো, সিংরইল গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে লিজা খাতুন, একই গ্রামের জগদিস চন্দ্র বর্মনের মেয়ে তমা রানী ও তহরুল ইসলামের মেয়ে তাসলিমা খাতুন, আমলাইন গ্রামের দুরুল হোদার মেয়ে রেহেনা খাতুন, টাকাহারা গ্রামের জাম বাবু রায়ের ছেলে সুবাস রায় ও একই গ্রামের জয়দেব ঘোষের ছেলে প্রসেনজিৎ ঘোষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মাধবপুর স্কুল থেকে ২০১৭ সালের জেএসসি পরীক্ষায় পাস করে ৬ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ৪জন ছাত্রী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয় উপজেলার মসলিমপুর গার্লস একামেীতে এবং ২জন ছাত্র ভর্তি হয় পীরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র, প্রবেশপত্র, বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র, নিবন্ধনপত্র ও নম্বরপত্রের জন্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা গত ২বছর থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানের নিকট ধর্না দিয়েও শেষ পর্যন্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেনি। তারা আরো অভিযোগ করেন, স্কুল থেকে কাগজপত্র না দেয়ায় ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করতে পারেনি ছয় শিক্ষার্থী। ফলে তারা ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা জানান, ১৬ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের আবেদন পেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহের জন্য ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিদের্শ দিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীরা যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ওই ছয় শিক্ষার্থী আমার স্কুলে লেখাপড়া করেছে। তারা তাদের কাগজপত্র আমার নিকট থেকে কোনোদিন নিয়ে যায়নি। আমি ওই শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালের এসএসসির নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে জমা দিয়েছি।
ছয় শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের অভিযোগ, গত ২ বছর ধরে তারা প্রধান শিক্ষকের নিকট ঘুরেও ছেলেমেয়েদের কাগজপত্র পাননি।
এদিকে মুসলিমপুর গার্লস একাডেমীর প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও পীরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুসলেহুদ্দীন জানান, তাঁরাও মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানকে ওই ছাত্রছাত্রীদের কাগজপত্র চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি সময়মতো কাগজপত্র সরবরাহ করেননি। তাই ছয় শিক্ষার্থীর ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।