ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক এবং তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। নুরুল হককে কয়েক দফায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।
হামলায় নুরুল ছাড়াও গণ অধিকারের ২০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে টিএসসির সামনের সড়কে হামলার এই ঘটনা ঘটে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, মানুষের জানমালের ক্ষতি ও হয়রানি এবং মাদ্রাসাছাত্র রেজাউল হত্যা ও বুয়েট শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ছাত্র অধিকার পরিষদের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন নুরুল হক। বিকেল চারটায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল।
প্রত্যদক্ষদর্শী ব্যক্তিদের ভাষ্য ও ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শাহবাগ এলাকা থেকে নুরুল হকের নেতৃত্বে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকছিলেন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য পার হয়ে টিএসসির ডাস ক্যাফেটেরিয়ার সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে যান ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। মোটরসাইকেল থেকে নেমে তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে তারা নুরুল হক ও তার অনুসারী নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। মারধর সহ্য করতে না পেরে নুরুল ও তার অনুসারীরা দৌড় দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের পেছন থেকে ধাওয়া করেন৷
টিএসসি এলাকায় মেট্রোরেলের নিচে আরেক দফা নুরুলকে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারা হয় তাকে। এ সময় নুরুলের মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। এই পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ অন্য অংশকে থামানোর চেষ্টা করে।
নুরুলদের ওপর হামলাকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির (শয়ন) ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। হামলায় নেতৃত্ব দেন এই দুই নেতার অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা৷
নুরুল হকের শারীরিক অবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের নেতা শাকিল উজ্জামান বলেন, নুরুল হকের মুখ দিয়ে রক্ত পড়া এখনো বন্ধ হয়নি। তার মাথায় একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তার সিটিস্ক্যান করতে হবে। বর্তমানে তিনি কাকরাইলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।