ঢাকারবিবার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

ভাষা আন্দোলনের ইতিকথা !!

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১:২৯ অপরাহ্ণ

Link Copied!

ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়ে ভারত ও পাকিস্থান নামে দুটি দেশের সৃষ্টি হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট মুহম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তানের নতুন সরকার যাত্রা শুরু করে। যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও আবেগের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দের ব্যক্তিগত উচ্চাকাক্সক্ষা, ক্ষমতার মোহ এবং কোটারী স্বার্থের কারণে সে আশা দ্রুতই নিঃশেষ হতে শুরু করে। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালী জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা না করে শুরুতেই পাকিস্তান সরকার মানিঅর্ডার, পোস্টকার্ড, মুদ্রায় শুধু উর্দু ও ইংরেজী ভাষা ব্যবহার শুরু করে। একই সময়ে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে নিয়োগের ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রেও বাংলাকে উপেক্ষা করা হয়। এর ফলে সচেতন, শিক্ষিত এবং প্রগতিবাদী মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সচেতন মহলের দাবি হল- মাতৃভাষার সাহায্যে শিক্ষাদান করিতে হইবে। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এই ভাষাকে দেশের যুগোপযোগী করার জন্য সর্বপ্রকার ব্যবস্থা করিতে হইবে। বাংলা হইবে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। ১৪ আগস্টের পর মুসলিম লীগের সোহরাওয়ার্দী-আবুল হাশিম গ্রুপের কলকাতায় অবস্থানকারী কর্মীরা ঢাকায় এসে তখনকার প্রগতিশীল অংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি যুব সংগঠন গড়ে তোলায় উদ্যোগী হন। ১৫০ নং মোগলটুলিতে অবস্থিত মুসলিম লীগের অফিস প্রগতিশীল কর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। নানা প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান খান বাহাদুর আবুল হাসানাত আহমেদের বাড়ির বিশাল লন এবং হলরুমে যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তান কর্মী সম্মেলন প্রস্তাব করা হয়েছিল বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন ও আইন-আদালতের ভাষা করা হউক।

প্রথমে, ২১ মার্চ ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মহম্মদ আলি জিন্নাহ পূর্ব বাংলা সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন, “বাংলাকে প্রাদেশিক ভাষা হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে, কিন্তু উর্দূ ছাড়া অন্য কোন ভাষা রাষ্ট্র ভাষা হতে পারেনা। আপনাদের যারা বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে, তারা পাকিস্তানের শত্রু।”

দ্বিতীয় বার ২৬ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে পাকিস্তান কন্সটিটূয়েন্ট অ্যাসেমব্লির বেসিক প্রিন্সিপ্ল কমিটি সুপারিশ করল যে, একমাত্র উর্দূই হবে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা । পল্টন ময়দানে একটি জনসভায় মুখ্য মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন ঘোষণা করলেন একমাত্র উর্দূই রাষ্ট্র ভাষা হতে চলেছে। এই দু’টি ঘটনার পরেই পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিতীয় দফার ভাষা আন্দোলন শুরু হল।

তৃতীয় বার, ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে সাধারন ধর্মঘট পালিত হল। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামপাসে একটি সভায় ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেয় নুরুল আমিন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হবে, এবং সেই মত প্রাদেশিক অ্যাসেমব্লির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে বেশ কিছু মিছিল বের করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে মিছিলে পুলিশ প্রথমে ছাত্রদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে এবং ছাত্ররাও পাথর ছুঁড়ে তার জবাব দেয়। মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পুলিশ সরাসরি মিছিলের উপর গুলি চালায়। এতে পাঁচ জন-মহম্মদ সালাউদ্দিন, আব্দুল জব্বার, আবুল বরকত, রফিকুদ্দিন আহ্মেদ এবং আব্দুস সালাম নিহত হন। এঁদের মধ্যে প্রথম তিন জন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

“সারা শহরে দাবানলের মত এই হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ল, এবং হাজারে হাজারে মানুষ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরের দিকে ছুটে আসে। পরদিন হাজার হাজার মানুষ পুলিশের গুলিতে নিহতদের জন্য প্রার্থনা করতে জড়ো হলেন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ এবং এঞ্জিনীয়ারিং কলেজ প্রাঙ্গণে। প্রার্থনার পর তাঁরা যখন মিছিল করে যাচ্ছেন, তখন পুলিশ গুলি চালায়। এই ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে সরকার সামাল দেবার জন্য মিলিটারি ডাকে। চাপের মুখে নতি স্বীকার করে মুখ্য মন্ত্রী নুরুল আমিন বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করা উচিত-এই মর্মে কন্সটিটূয়েন্ট অ্যাসেমব্লিতে একটি মোশন আনেন। মোশনটি সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্ররা পুলিশের গুলিতে মৃতদের ‘চরম আত্মোত্সর্গ’ স্মরণে বরকতকে যেখানে গুলি করা হয়, সেই যায়গায় রাতারাতি ‘শহিদ মিনার’ গড়ে ফেলল। পরে বাঙ্গালিদের কাছে এই শহিদ মিনার হয়ে ওঠে ঐক্যের প্রতীক।

অবশেষে আন্দোলনের মূখে নতিস্বীকার করে ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে একটি জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।

771 Views

আরও পড়ুন

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি

তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা, সাইনবোর্ড শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

সাইফুল ইসলামের কবিতা : শীতের আমেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ

পাবনার হেমায়েতপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ : নিহত ১

কাপাসিয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন

কাপাসিয়ায় ইসলাম শিক্ষা শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে সিরাতুন্নবী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন

কক্সবাজারের ঈদগাহতে ফুলকুঁড়ি আসরের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

জবিস্থ শরীয়তপুর জেলা ছাত্রকল্যাণের নেতৃত্বে সৌরভ – মনির

কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের কারা নির্যাতিত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটনকে সংবর্ধনা ও ফুলেল শুভেচ্ছা

দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে জাতীয় ঐক্যমত্যের বিকল্প নেই–মিয়া গোলাম পরওয়ার