রফিকুল ইসলাম জসিম মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরী মুসলিম সম্প্রদায়ের কৃতি শিক্ষার্থী তামান্না রেজা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি ইন এগ্রিকালচার (অনার্স) প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এই অভূতপূর্ব সাফল্য তার পরিবার, শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর মধ্যে এক অমূল্য আনন্দের সৃষ্টি করেছে।
তামান্না রেজা,আদমপুর ইউনিয়নের ঘোরামারা গ্রামের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মো. রেজা উদ্দিন ও মমতাময়ী মায়ের কন্যা, এক অনন্য মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত। তার শিক্ষা জীবনে মেধা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের দৃঢ় প্রতিফলন ঘটেছে, যার ফলস্বরূপ তিনি আজকের এই মহান অর্জন অর্জন করেছেন। বিদ্যালয় জীবন থেকেই তামান্নার বিজ্ঞান ও কৃষি বিষয়ক জ্ঞান অর্জনে গভীর আগ্রহ ছিল। তিনি সবসময় তার শিক্ষা জীবনে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য সংগ্রাম করেছেন এবং তার কঠোর পরিশ্রম তাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
তামান্নার ভাষায়, “ছোটবেলা থেকেই আমি কৃষিবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। গ্রামের প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা, কৃষকের সংগ্রামের দৃশ্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। আমার বাবা-মায়ের দোয়া, তাদের সহযোগিতা এবং বড় বোন তারানা রেজার পরামর্শ আমাকে সাফল্য অর্জনে সহায়তা করেছে।”
এছাড়া, তামান্নার বড় বোন তারানা রেজা ইতিমধ্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বোনের পড়াশোনা কমলগঞ্জের এই পরিবারে নতুন এক গর্বের সৃষ্টি করেছে।
তামান্নার বাবা মো. রেজা উদ্দিন বলেন, “আমার মেয়ে গ্রাম থেকে উঠে এসে এত বড় জায়গায় পৌঁছেছে, এটি আমাদের জন্য এক অনন্য অর্জন। আল্লাহর অশেষ রহমত। আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুই মেয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, এটা আমাদের জন্য এক বিশাল গর্বের বিষয়।”
তামান্নার এই সাফল্য শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো মণিপুরী মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য গর্বের বিষয়। তার অসীম পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলে আজ কমলগঞ্জের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তামান্না রেজা এক অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। শিক্ষার্থীরা তাকে নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছে।
তামান্না রেজা ভবিষ্যতে কৃষি খাতে উন্নয়ন এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখার সংকল্প করেছেন। তার লক্ষ্য, একদিন বাংলাদেশের কৃষি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কৃষকদের জীবনে স্থায়ী উন্নয়ন সাধন করা।