শেখ শাহরিয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি: ব্রিজস্টোন অব ক্যাম্পাসিয়ান (বিওসি) এর পক্ষ থেকে এই রমজানে মোট চারটি এতিমখানার সাত শতাধিক এতিম শিশুকে ইফতার করানোর প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ব্রিজস্টোন অব ক্যাম্পাসিয়ান’ এর সাত শতাধিক এতিমবাচ্চার ইফতারি সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (১ এপ্রিল) ‘ব্রিজস্টোন অব ক্যাম্পাসিয়ান’ এর জবি ইউনিট কর্তৃক আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম এতিমখানায় ১৪০ জন এতিমবাচ্চার ইফতারি সম্পন্ন করা হয়।
এরপর সোমবার (৩ এপ্রিল) মুমেক ইউনিট কর্তৃক ঝিলপাড় এতিমখানায় ৬০জন এতিমবাচ্চার ইফতারি সম্পন্ন করা হয়।
সর্বশেষ ৫ এপ্রিল বুটেক্স ইউনিট কর্তৃক হাতিরঝিল এতিমখানায় ১৪৫ জন এবং ৬ এপ্রিল রহমতে আলম এতিমখানায় প্রায় ৩৬০ জন এতিমবাচ্চার ইফতারি সম্পন্ন করা হয়।
সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ এস এম সাকিব বলেন, সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিটি ব্যক্তির রিজিক নির্দিষ্ট এবং আল্লাহ তা’আলা তা সুষমভাবে বন্টন করেন। অন্যকে ইফতার করানো মানে অন্যের রিজিকের ব্যবস্থা করা এবং তার রোযা সমপরিমাণ সওয়াব অর্জন করা। এতিমদের ইফতার করাতে পেরে এবং ইফতার কার্যক্রমে সহায়তা করে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেয়ায় ‘ব্রিজস্টোন অব ক্যাম্পাসিয়ান’ এর প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। মানবতার জয় হোক, বেঁচে থাকুক ভাল কাজ এবং আসুন সবাই মিলে এতিম বাচ্চাদের সহায়তা করি।
বিওসি এর কার্যনির্বাহী সদস্য আশরাফুল হক রাইহান বলেন, Bridge Yourself For Society-এই মূলমন্ত্রটিকে সামনে রেখে নিয়মিতভাবে পরিচালিত সামাজিক উৎকর্ষ সাধনমূলক কার্যক্রমগুলোর মধ্যে গত ৫ এপ্রিলের কার্যক্রমটিতে স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাই। একটি এতিমখানায় এতিম বাচ্চাদের সাথে কিছু সুন্দর মূহুর্তের সাথী হতে পারি BOC এর কল্যাণে।
তিনি আরও বলেন, একটি পরিবারের মতোই বাচ্চাদের সাথে সবাই ইফতার করার সুযোগ পাই, আমাদের পেয়ে বাচ্চারা যে এতটা খুশি হতে পারে, এই অভিজ্ঞতাটি ছিলো আসলেই অনন্য। ইফতার কার্যক্রমের চাইতেও বড় বিষয় ছিলো তাদের সাথে কিছু একান্ত সময় কাটানো, যে সুযোগটা চাইলেই পাওয়া যায়না, এজন্য আসলে বলতে গেলে পুরো কৃতিত্বটাই সৃষ্টিকর্তার। আর এর মাধ্যমটা হচ্ছে অবশ্যই বিওসি। আসলে এই মুহুর্তগুলো লিখে রাখার মতো নয়, এগুলো থেকে যাবে স্মৃতির পাতায় আর স্রষ্টার খাতায়। ধন্যবাদ BOC কে, ইন শা আল্লাহ, আশা করি সামনে আরও অনেক স্মৃতি জমা করার সুযোগ পাবো।
কার্যনির্বাহী সদস্য আমি অপসরী আবেদীন বলেন, গত ৫ই এপ্রিল BOC এর তরফ থেকে সিনিয়র ভাইয়া এবং আপুদের সহায়তায় হাতিরঝিল সংলগ্ন একটি এতিমখানায় যাওয়ার সুযোগ হয়। এরকম একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ আয়োজনের একটি অংশ হতে পেরে নিজের মধ্যেই একটি আত্মতুষ্টি কাজ করেছে। বিশেষ করে ভাইয়া আপুদের সহযোগিতা দেখে সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে। এতিমখানায় বাচ্চাদের সাথে কাটানো সময় টাও অনেক সুন্দর ছিলো। তাদের এক বেলার হাসির কারণ হতে পারার মধ্যেও অন্যরকম আবেগ কাজ করেছে, আলহামদুলিল্লাহ। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারার একটা ভালো সুযোগ এটা। যারা বিশেষ করে অসহায় বাচ্চা, তাদের একটু ভালোবাসা দিলেই অনেক কাছে করে নেয় তাকে,যা নিজের জন্য ও অবশ্যই আনন্দের। তাই আল্লাহর অশেষ রহমত হলে আরও সামনে এমন ভালো ভালো উদ্যোগে সাথে থাকতে চাই BOC র ঈনশাল্লাহ।
সংগঠনটির মুমেক ইউনিটের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মমতা ইসলাম চৈতি বলেন, গত বছরের মতো এই বছর BOC কতৃর্ক আয়োজিত হয়েছে “ইফতার প্রোগ্রাম” যেখানে ৭০০+ বাচ্চাদের ইফতার করানোর তৌফিক মহান আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ তাদের, যারা আমাদের সাথে ছিলেন। আমরা যেন এভাবে কাজ করতে পারি তাই BOC এর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা।
জবি ইউনিটের সদস্য জারিন তাসনিম বলেন, বাচ্চাদের সাথে কাজ করা তাদের সাথে একটু সময় কাটানো আমি অনেক ভাগ্যের বিষয় মনে করি আর বাচ্চা গুলো যদি এতিম হয় তাহলে তাদের সাথে সময় কাটানো আরো বেশি ভাগ্যর আর আমারে এই সুযোগ করে দিয়েছে বিওসি। সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগছে এমন একটা কাজ করতে পারছি। সামনে আরও বেশি কাজ করতে চাই বাচ্চাদের নিয়ে। বিওসির হাত ধরে আরও অনেক বেশি কল্যানমূলক কাজ করব ইনশাল্লাহ।
উল্ল্যেখ্য, সংগঠনটি ‘ব্রিজ ইয়োরসেলফ ফর সোসাইটি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে এতিমবাচ্চাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে আসছে। গতবছর “বিওসি ইফতার প্রোগ্রাম-২০২২” এর মাধ্যমে সংগঠনটি ঢাকাসহ দেশের ৭টি এতিমখানায় প্রায় ৫০০+ এতিমশিশুকে ইফতার করিয়েছিলো।