ঢাকাশুক্রবার , ২০ জুনe ২০২৫
  1. সর্বশেষ

ইরানে জন্ম নেওয়া পাঁচ মুসলিম মনীষী

প্রতিবেদক
রফিকুল ইসলাম জসিম
২০ জুন ২০২৫, ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

এক অপূর্ব সৌন্দর্যের দেশ ইরান, যার অলিগলি থেকে গুনগুন করে ভেসে আসে ইতিহাসের প্রাচীন সুর। এখানে মিশে আছে সংস্কৃতি, ধর্ম ও জ্ঞানের এক অমলিন কোলাহল। এই ভূমির সাহসী ও বীরত্বের গল্পগুলো ইতিহাসের পাতা আলোকিত করে। রক্তবর্ণে ভেসে ওঠে সোনালি যুগের স্মৃতি। পার্সিয়ান উদ্যান, শিরাজের গোলাপ বাগান এবং ইস্পাহানের ঐতিহ্যবাহী মসজিদগুলো যেন অতীত ও বর্তমানের সংযোগ স্থাপন করে। শানশওকতপূর্ণ দালানকোঠা, সোনালি সূর্যাস্ত আর শান্ত জলাশয়ে প্রতিফলিত আকাশের ছবি ইরানকে এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরে। ইরানের শৈল্পিক সৌন্দর্য, অমর সাহিত্য ও বিজ্ঞানী মনীষীদের ইতিহাস এখনো পুরো পৃথিবীকে এক অজানা জগতের পথে নিয়ে যায়। ইরান যেন এক অদেখা জগতের দরজা। হাজার বছরের ঐতিহ্যে মোড়ানো ইরানে নানা ধর্মের নানা মনীষী জন্মগ্রহণ করেছেন। আজকে জানব ইরানে জন্ম নেওয়া অসংখ্য মুসলিম মনীষীর মধ্য থেকে পাঁচজনকে।

রুদাকি

ফারসি সাহিত্যের জনক রুদাকি

রুদাকির পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ জাফর ইবনে মুহাম্মদ আর-রুদাকি। তাঁকে আধুনিক ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁকে ডাকা হয় অ্যাডাম অব পোয়েট বা কবিতার জনক বলে। এ ছাড়া তিনি প্রথম আধুনিক ফারসি বর্ণমালায় কবিতা রচনা করায় তাঁকে শাস্ত্রীয় ফারসি সাহিত্যের জনকও বলা হয়। নবম শতাব্দীতে তাঁর মধ্যে কবিতা, গান, আবৃত্তি এবং কবি-লেখকসত্তার যে সংমিশ্রণ ঘটেছিল, সেটা তাঁর আগে আর কারও মধ্যে এভাবে পাওয়া যায়নি বলে ধারণা করা হয়। এসব গুণের কারণে তিনি রাজসভায় ছিলেন বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তবে দুঃখের বিষয় হলো, তাঁর কাব্যসম্ভারের খুব অল্প অংশই এখন পাওয়া যায়। রুদাকি ৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের খোরাসান শহরের রুদক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামেই তিনি ৯৪০ মতান্তরে ৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান।

গাজালি

হুজ্জাতুল ইসলাম গাজালি

ইরানের খোরাসানের অন্তর্গত তুস নগরীতে ১০৫৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৪৫০ হিজরি সনে জন্মগ্রহণ করেন হুজ্জাতুল ইসলাম আবু হামিদ মুহাম্মদ গাজালি। তবে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই ইমাম গাজালি হিসেবে বেশি পরিচিত। তাঁর পিতার নাম মুহাম্মদ গাজালি। হুজ্জাতুল ইসলাম গাজালি মনে করতেন, ইসলামি আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য মৃতপ্রায় হয়ে গেছে এবং মুসলমানদের প্রথম প্রজন্মের দ্বারা শেখানো আধ্যাত্মিক জ্ঞানও মানুষ ভুলতে বসেছে। এই বিশ্বাস তাঁকে ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন (ধর্মীয় জ্ঞানের পুনরুজ্জীবন) শিরোনামে তাঁর সেরা গ্রন্থ লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এই বই ছাড়াও তাঁর চার শতাধিক গ্রন্থ রয়েছে। অধিকাংশ বইয়ে তিনি ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও সুফিবাদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই মনীষী খ্রিষ্টাব্দ ১১১১ সন মোতাবেক ৫০৫ হিজরি সনে নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে সুস্থ অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ইরানের অমর কবি ফেরদৌসীর সমাধির পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

হাফিজ

বুলবুল-ই-শিরাজ হাফিজ শিরাজি

মহাকবি খ্যাত হাফিজ শিরাজির আসল নাম শামসুদ্দিন মুহাম্মদ। তিনি চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ইরানের শিরাজে জন্মগ্রহণ করেন। বুলবুল-ই-শিরাজ তাঁর উপাধি। এ ছাড়া তাঁকে লিসান-উল-গায়েব (অজ্ঞাতের বাণী), তর্জমান-উল-আসরার (রহস্যের মর্মসন্ধানী) বলেও সম্বোধন করা হয়। পবিত্র কোরআন তাঁর মুখস্থ ছিল। হাফিজের মৃত্যুর ১০০ বছরের মধ্যে তাঁর কোনো জীবনী রচিত হয়নি। তাই তাঁর জন্ম-মৃত্যুর দিন নিয়ে নানা মত রয়েছে। ধারণা করা হয়, তিনি ৭৯১ হিজরি বা ১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

ওমর-খৈয়াম

কবি ও জ্যোতির্বিদ ওমর খৈয়াম

ওমর খৈয়াম একাধারে কবি, গণিতবেত্তা, দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তাঁর পুরো নাম গিয়াসউদিন আবুল ফাতেহ ওমর ইবনে ইবরাহিম আল-খৈয়াম নিশাপুরি। তিনি ১০৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামি বর্ষপঞ্জি সংস্কারে তাঁর অবদান রয়েছে। তিনি তাঁর কবিতা সমগ্র ‘ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াত’ গ্রন্থের জন্য বিখ্যাত। কাব্য-প্রতিভার আড়ালে তাঁর গাণিতিক ও দার্শনিক ভূমিকা অনেকখানি ঢাকা পড়েছে। ধারণা করা হয়, রনে দেকার্তের আগে তিনি বিশ্লেষণী জ্যামিতি আবিষ্কার করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গণিতের দ্বিপদী উপপাদ্য আবিষ্কার করেন। বীজগণিতে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান তিনিই প্রথম করেন। বহুমুখী প্রতিভার দৃষ্টান্ত দিতে বলা হলে বিশ্বসাহিত্য কিংবা ইতিহাসে যাঁদের নাম উপেক্ষা করা কঠিন, ওমর খৈয়াম তাঁদের মধ্যে অন্যতম ও শীর্ষস্থানীয়। ১১৩১ খ্রিষ্টাব্দে এই মনীষী জীবনের সফর শেষ করেন।

শেখ-সাদি

শব্দের কারিগর শেখ সাদি শিরাজি

পুরো নাম শেখ আবু মুহাম্মদ মুসলেহুদ্দিন সাদি ইবনে আবদুল্লাহ শিরাজি হলেও মানুষ তাঁকে শেখ সাদি শিরাজি বলেই বেশি চেনে। তিনি ৫৮৯ হিজরি মোতাবেক ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের শিরাজে জন্মগ্রহণ করেন। ইন্তেকাল করেন ৬৯৪ হিজরি মোতাবেক ১২৯৪ খ্রিষ্টাব্দে। শেখ সাদি ছিলেন মধ্যযুগের গুরুত্বপূর্ণ ফারসি কবিদের একজন। ফারসিভাষী দেশের বাইরেও তিনি সমাদৃত। তাঁর লেখার মান এবং সামাজিক ও নৈতিক চিন্তার গভীরতার জন্য তাঁকে কদর করা হয়। ধ্রুপদি সাহিত্যের ক্ষেত্রে তাঁকে একজন উঁচু মানের কবি ধরা হয়। তাঁর লেখা বুস্তা বইটি সর্বকালের সেরা ১০০ বইয়ের মাঝে স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া মহানবী (সা.)-কে নিয়ে তাঁর লেখা, ‘বালাগাল উলা বিকামালিহি’ বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান নিয়মিত পাঠ করে থাকেন শ্রদ্ধার সঙ্গে।

66 Views

আরও পড়ুন

কাপাসিয়ার দুর্গাপুর ইউনিয়নে জামায়াতের উদ্যোগে ভাঙ্গা রাস্তা মেরামত

জগন্নাথপুরে মাদ্রাসার মুহতামিমকে নামাজ থেকে ধরে নিয়ে হাত বেঁধে নির্যাতন 

ইরানে জন্ম নেওয়া পাঁচ মুসলিম মনীষী

শান্তিগঞ্জে বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির কার্যকরী কমিটি গঠন, সভাপতি নজরুল,সম্পাদক নাজমুল

বিগত আন্দোলনে নারী নেত্রীরা ঢাল হিসাবে কাজ করেছেন — আফরোজা আব্বাস

শান্তিগঞ্জে জয়কলস ইউনিয়ন বিএনপি’র কর্মীসভা সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

ঢাবির শিক্ষক হলেন চকরিয়ার মেয়ে শাউরিন আহমদ খান

কালিগঞ্জ উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হাসনাত, সম্পাদক মারুফ

ডেভিল হান্ট অভিযানে চকরিয়ায় ১৬ জন আ’লীগের নেতাকর্মীকে আটক।

পলাশে ছাত্রদলের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ মামলায় বিএনপি নেতা জুয়েল গ্রেপ্তার

টেকনাফে মাদক মামলার সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিবের ইন্তিকাল
ইসলামী আন্দোলনের এক উজ্জ্বল বাতিঘরের চিরপ্রস্থান