ঢাকামঙ্গলবার , ৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. সারা বাংলা

রাঙামাটিতে টানা ৭ দিনের বর্ষণে পাহাড় ধ্বস, নিন্মাঞ্চল প্লাবিত : প্রায় ৪০ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্থ

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

|| মুহাম্মদ ইলিয়াস-, রাঙামাটি ||

রাঙামাটিতে টানা ৭ দিনের ভারি বর্ষণে পাহাড় ধ্বস, পাহাড়ি ঢল ও উজানের পানিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ছোটবড় ৩ ৫৭ স্পটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে।

জেলা প্রশাসন, পুলিশ, এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত সপ্তাহের প্রবল বর্ষণে রাঙামাটি জেলা সদরসহ ১০ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক পাহাড় ধ্বসের খবর আসছে। সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত ৩শ ৫৭টি স্পটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। বন্ধ রয়েছে ১২ টি অভ্যন্তরিণ ও কানেক্টিং সড়ক। দূর্যোগ মুহূর্তে ব্যবহার উপযোগী রাখতে মারিশ্যা-দিঘীনালা সড়ক সংস্কারের কাজে নেমেছে সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনী।

ভারতীয় পানি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর। প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে নিন্মাঞ্চল। পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও জেলার ২৯ টি ইউনিয়নের ১শ ৯৯টি গ্রামের ১ ০ হাজার ৬ শ ১৬ টি পরিবার। ক্ষতি হয়েছে ৬ হাজার ৫ শ ১৪টি বসত ঘর ও ১৮ টি হাটবাজার। এতে ৩৯ হাজার ৬ শ ২৫ জন লোক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২৪ টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ৩৬ টি ব্রি/ কালবার্ট, ৪১ টি সড়ক, ১শ ৪৯ টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ৪ টি বাড়ি নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। উপজেলাগুলোর কানেক্টিং সড়কসহ অভ্যন্তরিণ রাস্তাঘাট ধ্বসে যাওয়ায় জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১ হাজার ৩ শ ১ পরিবার। এসব পরিবারের ৬ হাজার ৪ শ ৬ জন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। পাহাড় ধ্বসে সড়ক ভেঙেছে ৬৯ টি স্পটে।

বাড়ছে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডা জনিত রোগব্যাধি। দূর্গম এলাকায় খাদ্য শষ্য পৌছানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দোকানী বাড়তি দাম হাঁকছে তেমন অভিযোগ জুরাছড়ি,বরকল ও বাঘাইছড়ি থেকে একাধিক সুত্র জানিয়েছে। দূর্গত এলাকা গুলোর অন্যতম বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, কাউখালী, লংগদু, বিলাইছড়ি,বরকল ও রাজস্থলী উপজেলা। এসব উপজেলার ৩ হাজার ৩শ ৬৮ হেক্টর ফসলী জমির ক্ষতি হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে বর্তমানে পাহাড় ধ্বস ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৫ হাজার ৪ শ ৩১ জন লোক আশ্রয় নিয়েছে।

শহরের পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত এলাকা ছাড়াও নতুন নতুন এলাকায় পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটছে।
ঝগড়াবিল, স্বর্ণটিলা, তবলছড়ি, রাঙাপানি, ভেদভেদি, শিমুলতলী, রিজার্ভ বাজার, আব্দুল আলী একাডেমি, ওমদামিয়া হিল, রাজমনি পাড়া, পুরাতন পুলিশ লাইন, পুরাতন হাসপাতাল, কর্মচারী কলোনি, এডিসি হিল, দূর্নীতি দমন কমিশন কলোনি, পোষ্ট অফিস কলোনি, বেতার কেন্দ্র সংলগ্ন পাড়া, রূপনগর, বিজিবি রোড সংলগ্ন পাড়া, কাঠালতলী, রসুলপুর ও কৃষি খামারসহ বিস্তৃত এলাকায় ব্যপকভাবে পাহাড় ধ্বস হয়েছে।

রাঙামাটি শহরের কাঠালতলী মসজিদ সংলগ্ন কৃষি গুদামের পেছনের পাহাড় ধ্বসে ধারক দেয়াল ভেঙ্গে গুদামটি এখন ঝুঁকিগ্রস্থ। ৭/৮ পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা লোকজন এখনো পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি।

রিজার্ভ বাজারস্থ শহীদ আব্দুল আলী একাডেমির সামনে রাস্তার একাংশ ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয় হিল সার্ভিস’র উদ্যোগে বস্তা দিয়ে প্রাথমিকভাবে মেরামত করেছে। এই বর্ষণ অব্যাহত থাকলে,রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এ কারণে শহরের প্রধান বানিজ্যিক এলাকার রিজার্ভ বাজারের সাথে অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যাহত হবে।

নানিয়ারচর থানার রেসকিউ টিম বুড়িঘাট ইউপিস্থ ঘিলাছড়ির ক্ষতিগ্রস্থ আঞ্চলিক সড়কটি মেরামত করে।নানিয়ারচর থানাধীন ৩ নং বুড়িঘাট ইউপিস্থ ঘিলাছড়ির ৮ নং টিলা হতে ১৭ নং টিলা পর্যন্ত সড়কে পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আনসার, ভিডিপি এবং গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটি মেরামতের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

টানা ভারি বৃষ্টিতে বরকল উপজেলার ( ভারত সীমান্ত লাগোয়া) ঠেগা নদীর টুইম্বুর আবস্থা। কুল কিনারা দৃষ্টি সীমার বাইরে। ঠেগা খুব্বাং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ টি ছাত্রাবাসে ২ টিতে, একমাত্র ছাত্রী নিবাস ও বিদ্যালয় শিক্ষক বাস ভবনে পানি ঢুকেছে। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী ভবনসহ স্কুলটির মূল ভবন ঝুঁকিতে পড়েছে। নব নির্মিত ভবন-২’র পেছনে মাটিতে ধ্বস নেমেছে।বিস্তৃন্ন লোকালয় তলিয়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে স্কুল মাঠ ও স্থানীয় বাসিন্দা মঙ্গল চান চাকমা, প্রিয় রঞ্জন (হুক্যা), কমলেশ্বর (অঙলা),প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক বরুন বিকাশ চাকমাসহ লোকালয়।

সড়ক বিভাগের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক, এলজিইডির রাঙাপানি-কাপ্তাই সড়ক, ভেদভেদি-রাঙাপানি সড়কের পাশে ৮টি স্পটে মাটি ধ্বসে পড়ে ভেঙেছে একাধিক প্রোটেকশন ওয়াল। এছাড়াও এলজিইডি নির্মিত ১২ উপজেলার অভ্যন্তরিণ ও কানেক্টিং রোড বন্ধ রয়েছে ।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করতে পারেনি। ভাঙছে নতুন নতুন সড়ক।
রাঙামাটি এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মেদ শফি বলেন, বর্ষণ ও বন্যায় প্রতিষ্ঠানটির অনেকগুলো সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আপাতত আমাদের টীমগুলো রাস্তা সচল রাখছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করে স্থায়ীভাবে সড়কগুলো চলাচল উপযোগী করা হবে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ পর্যন্ত ছোট-বড় ৩ শ ৫৭ টি পাহাড়ে ধ্বস নেমেছে। প্রত্যেক লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবীগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করায় কোন প্রান হানি হয়নি। এমপি, পরিষদ চেয়ারম্যান সহ সকলে সহযোগিতা করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে সবাই নিরাপদ এবং ঠিকভাবে খাদ্য পাচ্ছে। স্রষ্টার দয়ায় আমরা এ সংকট কাটিয়ে ওঠবো বলে যোগ করেন এ কর্মকর্তা। #

765 Views

আরও পড়ুন

শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১

বুক রিভিউ:সময়ের ছবি ‘নীরব কোলাহল’

মৌলভীবাজারে সোনার বাংলা আদর্শ ক্লাবের ৬ষ্ঠ মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

হাওরের জনপদ এখন উচ্চশিক্ষায় আরো এগিয়ে যাবে–ড. মোঃ আবু নঈম শেখ

রাবিতে গ্রীন ভয়েস এর নেতৃত্বে মাহিন-সিরাজুল

ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় মনিরকে

নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার !!

আগামী দিনের রাজনীতি হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার রাজনীতি: নাজমুল মোস্তফা আমিন

নাটোরে অস্ত্রসহ আওয়ামীলীগ নেতা ও তার সহযোগী আটক

দুর্লভ নিদর্শনে সমৃদ্ধ এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর

রাবিতে ছাত্র উপদেষ্টার আহবানে গাছ থেকে পেরেক অপসারণ

শান্তিগঞ্জে জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত