মোঃ নাজিম উদ্দিন,দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
রাত পোহালেই সাতকানিয়ায় প্রথম বারের মত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হবে। ভোট গ্রহণের জন্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে সরঞ্জাম। নিরাপত্তার ছাঁদরে ঢেকে গেছে পুরো উপজেলা। ভোটাররা যাতে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে, সবার জন্য নিরাপদ অবস্থা সৃষ্টি করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
ভোটের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। (১৩ অক্টোবর) রোববার সকাল থেকে উপজেলা মডেল হাইস্কুল থেকে ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে।
সন্ধ্যার মধ্যেই সকল সরঞ্জাম নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তারা কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যান। ১৪ অক্টোবর সোমবার সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। গত শনিবার মধ্য রাতেই বন্ধ হয়ে গেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে এই নির্বাচনের প্রচার শুরু হয়।
জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত সাতকানিয়ায় বিগত দিনের নির্বাচনে বিভিন্ন পদে তাঁদের প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে জয় লাভ করলেও এবার উপজেলা নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই দেয়নি দলটি। গত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিত জসিম উদ্দিন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. ইব্রাহীম বিজয়ী হয়। তখন জামায়াতের ব্যাপক প্রচারণা হলেও এবারের নির্বাচনে নিরব রয়েছে দলটির নেতা কর্মীরা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ মোতালেবের পক্ষে দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যাপক ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। সে হিসেবে বিএনপি প্রার্থী আবদুল গফফার চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণা ছিল কম।
এখানে জামায়াতের সাথে বিএনপি’র ‘দূরত্ব’ দীর্ঘদিনের। তবে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে জামায়াতের প্রার্থী না থাকায় একটি অংশ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে আপোষ হয়েছে। এমন খবর সঠিক নয় বলে মনে করেন দলটি কেউ কেউ।
ভোটাররা জানান, এম এ মোতালেব আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেও ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় তাঁর একটি সুনাম রয়েছে। দলের বাইরেও মানুষ তাঁকে পছন্দ করে। কারণ তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও কখনো প্রভাব কাটিয়ে কোনো অন্যায় করেনি। এছাড়া মোতালেবের প্রতিষ্ঠিত বনফুল কিষোয়ান গ্রুপে কয়েক হাজার মানুষের
কর্মসংস্থান হওয়ায় সাধারণ ভোটারের কাছে তাঁর গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনীর হোছাইন খান বলেন, রোববারে উপজেলা মডেল হাইস্কুল মাট প্রাঙ্গণ থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে
ইভিএমসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে ১২৫টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮০ জন ভোটার তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তিনি জানান,
নির্বাচনের দিন ১২৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৭০১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১৪০২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়
নিয়োজিত থাকবেন ১৬শ ৪০ জন পুলিশ, ৫ প্লাটুন বিজিবি ৬টি র্যাবের টিম ও টেকনিকেল সাপোর্টের জন্য প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে সেনাবাহিনীর সদস্য
থাকবেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে সাতকানিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব (নৌকা), বিএনপির
প্রার্থী হিসেবে সাতকানিয়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ আবদুল গফফার চৌধুরী (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবদুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরী (মোটরসাইকেল) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া ভাইস
চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহজাহান (তালা),সালাহ উদ্দিন হাসান চৌধুরী (বই) জসিম উদ্দিন (চশমা), বশির উদ্দিন আহমদ (ধানের শীষ), আছিফুর রহমান সিকদার (মাইক) মোহাম্মদ ওমর ফারুক (টিউবওয়েল)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন আনজুমান আরা (কলস) ও তারান্নুম আয়েশা (প্রজাপতি) প্রতীকে।