ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৬ জুনe ২০২৫
  1. সর্বশেষ
  2. আন্তর্জাতিক

বেঁচে থাকলে আজ ওরা পরীক্ষা দিত

প্রতিবেদক
রফিকুল ইসলাম জসিম
২৬ জুন ২০২৫, ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

আবদুল্লাহ বিন জাহিদ,শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ,মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া,মারুফ হোসেন ,আফিকুল ইসলাম সাদ,আব্দুল আহাদ সৈকত,ইমাম হাসান ভূঁইয়া তায়িম ও ইয়াসির সরকার (ওপরের সারিতে বাঁ থেকে

শৈশব থেকেই ওরা ছয়জন ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একই স্কুলে পড়ত। পরে একেকজন একেক কলেজে ভর্তি হয়। তবে একই এলাকায় বাসা বলে বন্ধুত্ব অটুট ছিল। প্রতিদিনই তাদের দেখা হতো, আড্ডা হতো। বাল্যবন্ধুদের এ দলটি আজ বৃহস্পতিবার থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শুধু একজন ছাড়া। সে হচ্ছে আবদুল্লাহ বিন জাহিদ। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় আবদুল্লাহ। মৃত্যুর তিন মাস পর ছিল তার ১৭তম জন্মদিন।

গত মঙ্গলবার রাতে পাঁচ বন্ধু আবদুল্লাহর মা ফাতেমা তুজ জোহরার মুঠোফোনে কল করে বন্ধুর জন্য কান্নাকাটি করেছেন, পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়েছেন। প্রথম আলোর কাছে কথাগুলো বলার সময় ঝরঝর করে কাঁদছিলেন মা ফাতেমা। আবদুল্লাহ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এবার মানবিক বিভাগ থেকে তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

নতুন বছর, জন্মদিন, ঈদ, অন্য উৎসব, পরীক্ষা—একেকবার একেক উপলক্ষ আসে, আর বারবার হাহাকারে ভাসে সন্তান হারানো, প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলো। আবদুল্লাহর মতো জুলাই শহীদ মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া (ফারহান ফাইয়াজ), শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ, আফিকুল ইসলাম সাদ, মারুফ হোসেন, মো. আবদুল আহাদ সৈকত, ইমাম হাসান ভূঁইয়া তায়িম ও ইয়াসির সরকারের আজ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। হয়তো মা–বাবার সঙ্গে পরীক্ষার হলে যেত তারা। পরীক্ষার হলের বাইরে উদ্বিগ্ন হয়ে মা–বাবার অপেক্ষা করার কথা ছিল। এর বদলে তাঁদের বুকজুড়ে এখন শুধু শূন্যতা। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল তারা। সেই রেজিস্ট্রেশন কার্ড এখন কষ্টের স্মৃতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে মা–বাবার জন্য। গতকাল বুধবার কথা হয় শোকাহত এসব মা–বাবার সঙ্গে।

iv>

‘ছেলে নেই, ওর বন্ধুদের জন্য দোয়া রইল’

পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে আবদুল্লাহ বিন জাহিদ
পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে আবদুল্লাহ বিন জাহিদছবি: আবদুল্লাহর মা ফাতেমা তুজ জোহরার কাছ থেকে সংগৃহীত

আবদুল্লাহ বিন জাহিদ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। জাহিদুল ইসলাম ও ফাতেমা তুজ জোহরার দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছিল সে। ছেলের মৃত্যুর পর জীবনে একের পর বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন মা ফাতেমা। বড় ছেলের মৃত্যুর ১৪ দিনের মাথায় ছোট ছেলে মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের (১৪) কোলন ক্যানসার ধরা পড়ে। গত ১৮ মার্চ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী মারা যান। জিসানকে নিয়ে তিনি এখন রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে থাকেন।

ফাতেমা জানান, ৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরায় এপিবিএন সদর দপ্তরের উল্টো পাশে আবদুল্লাহ গলায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়। তখন তাঁরা আশকোনায় থাকতেন। ফাতেমা বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে আসার পর থেকে তাঁর সারাক্ষণই মনে ভাসতে থাকে, ছেলেটারও পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে কলেজ থেকে তাঁকে ডেকেছিল। অনেক কষ্ট লাগবে বলে যাননি। তিনি বলেন, ‘ওর পাঁচ বন্ধু লামিম, হাসান, সালেহীন, রাকিব ও মেহেদিকেও নিজের সন্তানদের মতো “বাবা” বলে ডেকেছি। ওরা মঙ্গলবার ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করেছে। দোয়া চেয়েছে। ছেলে নেই, ওর বন্ধুদের জন্য দোয়া রইল আমার।’

‘ফারহান আজ সালাম করে পরীক্ষা দিতে যেত’

মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়ার (১৭) ডাক নাম ছিল ফাইয়াজ। বন্ধু–সহপাঠীরা ডাকত ফারহান নামে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ফারহান ফাইয়াজ’ নামে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল ফাইয়াজ। ফেসবুকের সেই নামটিই এখন জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল ফারহান ফাইয়াজ। শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ফারহানা দিবা দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে সে ছিল বড়। ছোট বোন সায়ীমা ইসলাম এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকায় প্রথম শহীদ ফারহান। ১৮ জুলাই আন্দোলনের সময় ফারহানের বুকে টার্গেট করে গুলি করা হয়। বেলা সোয়া দুইটায় মৃত্যু হয় তার। তিনি বলেন, ‘ছেলেটা গবেষক হতে চাইত। বিদেশ গিয়ে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে এসে গবেষণা করার আকাঙ্ক্ষা ছিল তার।’

ফারহানের বাবা বলেন, মঙ্গলবার কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাবের হোসেনের কাছ থেকে ছেলের রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে এসেছেন। তখন থেকে মন খুব বিষণ্ন হয়ে আছে। রাতে ফারহানের কয়েক বন্ধু ফোন দিয়ে বলল, ‘আঙ্কেল, ফারহান আজ থাকলে আপনাদের পা ছুঁয়ে সালাম করে পরীক্ষা দিতে যেত। দোয়া চাইত। আমরাও আপনার সন্তান। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

ছেলের কলেজে গিয়ে স্মৃতিফলক ছুঁয়ে এলেন মা

আহনাফের প্রতিকৃতি স্পর্শ করছেন মা জারতাজ পারভীন। গত মঙ্গলবার কলেজ প্রাঙ্গণে
আহনাফের প্রতিকৃতি স্পর্শ করছেন মা জারতাজ পারভীন। গত মঙ্গলবার কলেজ প্রাঙ্গণেছবি: আহনাফের বাবা নাসির উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে সংগৃহীত

শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ (১৭) মিরপুর ১০ নম্বরে আন্দোলনে থাকার সময় ৪ আগস্ট পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়। আহনাফ ছিল ফুটবল ও গানপ্রিয়। সে স্কাউটিং করত। দুঃসাহসিক ও গৌরবময় সেবার স্বীকৃতি হিসেবে মঙ্গলবার বাংলাদেশ স্কাউটসের পক্ষ থেকে কয়েকজনের সঙ্গে ‘গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয় আহনাফকে। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর কার্যালয়ে আহনাফের মায়ের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।

মিরপুরের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন আহমেদ ও জারতাজ পারভীনের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছিল আহনাফ। বাবা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পরীক্ষা এসেছে। আমরা অনেক কষ্ট পাচ্ছি। আজ ছেলেকে নিয়ে আমাদের পরীক্ষার হলে যাওয়ার কথা ছিল। ছেলের রেজিস্ট্রেশন কার্ডটা দেখে কষ্ট লাগছে খুব।’

বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল আহনাফ। বাবা বলেন, স্কাউটের পুরস্কার নিয়ে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণে আহনাফের স্মরণে স্থাপিত স্মৃতিফলকে গিয়েছিলেন। স্মৃতিফলকে ছেলের সোনালি প্রতিকৃতি স্পর্শ করে কান্নাকাটি করছিলেন আহনাফের মা। আহনাফের বন্ধু–সহপাঠী তাঁদের ফোন করে দোয়া চেয়েছেন।

‘ছেলে ছিল আমার বন্ধু’

২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ফেসবুকে সরকারের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য ডিবির সদস্যরা গ্রেপ্তার করেন স্কুলছাত্র মারুফ হোসেনকে। তিন দিন আটক থাকার পর অনেক দেনদরবার করে ছেলেকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন বাবা মো. ইদ্রিস। ভয়ে ছেলেকে রাজধানী থেকে বরিশালে নানাবাড়ি নিয়ে যান। সেখানে কাজীরহাট একতা ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল মারুফের (১৯)।

পূর্ব বাড্ডার বাসিন্দা মো. ইদ্রিস বলেন, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে মারুফ ছিল বড়। জুলাই আন্দোলন জোরদার হওয়ার পর মারুফ ঢাকায় চলে আসেন। এক সপ্তাহ পর ১৯ জুলাই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নাভির নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মারুফ। আন্দোলনে ছিল, এ কারণে হাসপাতাল মরদেহ দিচ্ছিল না তাঁকে। প্রতিদিন তিনি হাসপাতালে যেতেন, ছেলের মরদেহ অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখতেন। তিন দিন পর অর্ধগলিত মরদেহ হাতে পেয়ে পূর্ব বাড্ডায় মোহাম্মদনগর গলি কবরস্থানে দাফন করেন। তিনি বলেন, কবরটি অস্থায়ী। ১০ লাখ টাকা না দিতে পারলে সেই কবর রাখা হবে না বলে কবরস্থান কমিটি তাঁকে জানিয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ছেলে ছিল আমার বন্ধু। ওর মা মরিয়ম ছেলের শোকে অসুস্থ হয়ে গেছেন। আমাদের জীবনটাই শেষ হয়ে গেল!’

সৈকত মেডিকেলে পড়তে চেয়েছিল

মো. আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) বেঁচে থাকলে ঢাকা কমার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিত। সৈকতের বাবার নাম মো. নজরুল ইসলাম, মায়ের নাম মোছা. আম্মিয়ারা বেগম। দুই ভাই–বোনের মধ্যে সৈকত ছিল ছোট।

নজরুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে তিনি ও ছেলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্রোতের মতো মিছিল আসতে থাকলে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে এনাম মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয় সৈকত। বাবা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ঘণ্টা বেঁচে ছিল সৈকত।

সৈকতের বাবা বলেন, ছেলে চিকিৎসক হবে, এমন লক্ষ্য নিয়েই পড়াশোনা করত। পুলিশের গুলি ছেলেকে ঘিরে তাঁদের সব স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে।

ছেলেটা সব সময় চোখের সামনে ভাসে

সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল আফিকুল ইসলাম সাদের (১৮)। ৫ আগস্ট ধামরাইয়ে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন সাদ। কপালের বাঁ পাশে গুলি লাগে তাঁর। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৮ আগস্ট। রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম ও আঞ্জুমান আরার দুই সন্তানের মধ্যে সাদ ছিলেন বড়।

আহনাফের মতো সাদও স্কাউটিংয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার সাদকেও ‘গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটা সব সময় চোখের সামনে ভাসে। ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের জন্য কিছু করার চেষ্টা করত। গ্রাফিক ডিজাইন জানত। আন্দোলনে ফেসবুকে নিজে ডিজাইন করে পোস্ট দিত।’

মৃত্যুর আগের দিন ৪ আগস্ট সাদ তাঁর ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘যে দেশের ইতিহাস রক্ত দিয়ে শুরু হয়েছে, ওই ইতিহাস আবার লিখতে রক্তই লাগবে।’

ফারহান ফাইয়াজ মৃত্যুর আগে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইংরেজিতে লিখেছিল, ‘একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। এমন জীবন গড়ো, যাতে মৃত্যুর পর মানুষ তোমাকে মনে রাখে।’

গুলিতে ঝাঁজরা হওয়া ইমামকে স্মরণ করেছে  পরীক্ষার্থী বন্ধুরা

গা শিউরে ওঠা ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছিল। ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, একটি ছেলেকে পুলিশ ঘুরে ঘুরে কাছ থেকে গুলির পর গুলি করেই যাচ্ছে। পেছন থেকে আরেকটি ছেলে তাকে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পুলিশ গুলি করেই যাচ্ছে। গুলিতে ঝাঁজরা ছেলেটির হতবিহবল দৃষ্টি তখন পুলিশের দিকে, যেন বলছিল ‘ এত নিষ্ঠুরতা কিভাবে সম্ভব!’ সেই ছেলেটি ছিল নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজের ছাত্র ইমাম হাসান ভূঁইয়া তায়িম। গত বছরের ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা পদচারী-সেতুর কাছে তাকে গুলি করা হয়।

ইমাম ছিল রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট। মায়ের নাম পারভীন আক্তার।

ইমামের বড় ভাই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল আউয়াল বলেন, পুলিশ সেদিন ২০০ গুলি করেছিল ইমামকে। বেঁচে থাকলে ইমাম আজ ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিত। ইমামের পরীক্ষার্থী বন্ধুরা গতকাল ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে স্মরণ করেছে। এর আগে ইমামের বন্ধুরা কলেজ থেকে রেজিস্ট্রেশন কার্ড এনে খালা শাহিদা আক্তারের হাতে দিয়েছিল। রবিউল বলেন, ইমামের শোকে স্ট্রোক করে তাঁর বাবার এক হাতের ৭০ শতাংশ এখন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। মা সব সময় বিষন্ন থাকেন। তাঁদের পুরো পরিবার উলট পালট হয়ে গেছে।

‘তোমাদের খুব মনে পড়ছে ভাই’

ইমাম হাসান ভূঁইয়া তায়িম (১৯) আর ইয়াসির সরকার (১৮) ছিল বন্ধু। ইয়াসিরেরও এবার নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। যাত্রাবাড়ীর কাছে কুতুবখালীর প্রধান সড়কে ৫ আগস্ট গুলিতে শহীদ হন ইয়াসির।

ভাইয়ের রেজিস্ট্রেশন কার্ড হাতে পাওয়ার পর ইয়াসির সরকারের বড় বোন হাফসা বুশরা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, কার্ড দেখার পর পরিবারের সবাই বিষন্ন হয়ে পড়েছিল। তাঁদের ৫ ভাই বোনের একজন ছিলেন ইয়াসির। বাবা ইউসুফ সরকার ক্যানসার রোগী।

ইমামের মতো ইয়াসিরকেও স্মরণ করে গতকাল ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে বন্ধুরা। মাসুদ রানা নামে এক বন্ধু লিখেছেন, ‘ তোমাদের খুব মনে পড়ছে ভাই। তোমাদের এই ঋণ আমরা কখনো পরিশোধ করতে পারব না।

13 Views

আরও পড়ুন

বেঁচে থাকলে আজ ওরা পরীক্ষা দিত

আমিরাতে ৫ জুলাই রাতে পালিত হবে পবিত্র আশুরা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুদকের অভিযান।

টমটম চালকের হাতে খুন

কাপাসিয়ায় পারিবারিক বিরোধে ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচি খুন

কাপাসিয়ায় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, ৩ দিনে শনাক্ত ১০ জন

এইচ এস সি–আলিম সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য শিবিরের দোয়া অনুষ্ঠান

স্বর্ণ-রূপার সুতোয় বোনা কোরআনের আয়াতে কাবার নতুন গিলাফ

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী কে এই ‘মুসলিম’ মামদানি

গাজায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ নিখোঁজ

ইরানের হামলায় ইসরায়েলে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ৩৯ হাজার আবেদন

গাজায় শিগগিরই ‘যুদ্ধবিরতি’ হবে: ডোনাল্ড ট্রাম্প

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম আগামীকাল