জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর :
প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে রমজানের প্রথম থেকেই দর্জিপাড়া থাকে সরগরম। কিন্তু এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নেই কোনো ভিড়, নেই
মেশিনের খট খট আওয়াজও। করোনার থাবায় পাল্টে গেছে সব চিত্র। যশোর শহরের দর্জিপাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে দোকানপাট বন্ধ। সুনসান নিরবতা। শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম হাজী মোহাম্মদ মহসীন রোডের দর্জি পাড়ায় শোনা যাচ্ছে না মেশিন চালানোর শব্দ। নতুন কাপড় তৈরি করতে আসা মানুষের নেই কোনো আনাগোনা। করোনা ভাইরাসের কারনে সকল মার্কেট ও টেইলার্স বন্ধ থাকায় নিস্তব্ধ হয়ে আছে শহরের দর্জি পাড়া। ফলে যশোরের পৌর এলাকার ৭শ’ দর্জি শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারিভাবে তারা কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানান টেইলার্স মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
যশোর জেলা টেইলার্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মুন্না জানান, টেইলার্স মালিক সমিতির অন্তভূক্ত শহরে টেইলার্স রয়েছে ৫৪ টি ও শহরে বিভিন্ন স্থানে মেশিন নিয়ে কাজ করছে ৬৫৪ জন দর্জি। প্রতি বছর শবে বরাতের পর থেকে ঈদের পোশাক তৈরির
জন্য ক্রেতারা কাপড় তৈরির জন্য টেইলার্সে আসতে শুরু করে। দর্জিরা চাঁদ রাত পর্যন্ত জামাকাপড় তৈরি করা সহ বানানো পোশাক ডেলিভারী দেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করে। অথচ করোনা ভাইরাসের কারণে ২৫ মার্চ থেকে সকল মার্কেট ও টেইলার্স সরকারিভাবে বন্ধ
করে দেয়া হয়। ফলে টেইলার্স মালিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। কোন রকমভাবে তারা খেয়ে পড়ে বেঁচে আছে। এভাবে দোকান বন্ধ থাকলে সামনে আরো কষ্টের দিন চলে আসবে। সেই সাথে টেইলার্স শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা দেয়ার পর ১শ’ টেইলার্স শ্রমিকদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে।
তাতে ছিল ৭ কেজি চাল, ২কেজি আলু, ১ কেজি ডাল। বাকি শ্রমিকরা কোন সহায়তা পায়নি। এমনকি সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতার আশ্বাসও দেয়া হয়নি। রোজার মধ্যে যদি প্রশাসন থেকে মার্কেট,টেইলার্স খোলার অনুমতি দেয় তাহলে কাজ শুরু করে খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে টেইলার্স শ্রমিকরা। একই কথা জানান টেইলার্স মালিক সমিতির সভাপতি শাহ জালাল। টেইলার্স মালিক রুহুল আমিন জানান, করোনার কারণে এক মাসের বেশি টেইলার্স বন্ধ। কোনো কাজ না থাকায় কোনো রকম ভাবে দিন চলে যাচ্ছে।
শহরের টাউন হল মাঠের দর্জি শামীম হোসেন জানান, প্রশাসন নিষেধ করে দেয়ার কারনে তারা মাঠে মেশিন নিয়ে বসতে পারছে না। বসলেও কোনো লাভ হবে না। কারন কালেক্টরেট মার্কেট ও জেলা পরিষদ হকার্স মার্কেট বন্ধ রয়েছে। মার্কেট বন্ধ থাকলে কোন কাজের অর্ডার আসবে না। একারনে বাড়িতে বসে আছি। কেউ আমাদের কোনো ত্রাণ সহায়তা দেয়নি। এমনকি কোনো খোঁজখবরও পর্যন্ত নেয়নি। ফলে কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।