ঢাকাশুক্রবার , ৩ মে ২০২৪
  1. সর্বশেষ

ছাতকে ভাবুক গী‌তি কবি হিজরত আহমদ

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১১ নভেম্বর ২০২২, ১:২৭ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!


আনোয়ার হোসেন রনি

ছাতকে ভাবুক গী‌তি কবি হিজরত আহমদ।আউল বাউলদের সাধনার রাজধানী বলা হচ্ছে পুন্যভুমি সিলেট ও সুনামগঞ্জকে। এই মাটিতে সঙ্গে মক্কা মদিনার মাটির স‌ঙ্গে মিল র‌য়ে‌ছেন ব‌লে অ‌নে‌কেই ‌ঞ্জানীরা মন্তব‌্য ক‌রে গে‌ছেন।

উপ মহাদেশে সুফিবাদ দর্শনে আধ্যাত্বিক জগতের বাদশা হ‌চ্ছেন হজরত শাহজালাল (রঃ) তার অলৌকিক ক্ষমতার মাধ্যমে শ্রীহট্র গৌড় রাজ্যেকে পরাজয় করে ইসলামের বিজয় নিশান উড়িয়েছেন সিলেটের মাটিতে।

এ দেশে ইসলাম প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই সুফি সাধনার আবির্ভাব বিস্তার ঘটেছিল সিলেটের পুন্যভুমিতে। এ মাটির পরশ পেয়ে অসংখ্য পীর ফকির এ পুন্যভুমিতে মরমী গী‌তি কবি সাধকদের আবির্ভাব ঘটেছিল শ্রীহট্রে। তারা চারটি স্তরে পাশাপাশি ইসলামী কিতাব. গজল,নাত,হামদ মু‌শিদী গান রচনা করে গেছেন।তার পাশাপা‌শি শরিয়ত, তরিকত, মারেফাত. হকিকত। মরমী সাধকদের মধ্যে রয়েছেন মুলাইশাহ. সিয়ালি শাহ,সৈয়দ শানুর শাহ. বিশিষ্ট পুথিঁ সুফি সাধক খ্যাতমান ফকির আফজলশাহ ওরফে আরমান আলী,
লালশাহ.ফয়েজউল্লাহমুন্সি.দুব্বিনশাহ,আসছদ্দউল্লাহ,সাবাল আলীশাহ.আরজশাহ.আনাছ আলীশাহ.আব্বাসমুন্সি.আশুশাহ.হাসিমআলীশাহ,মনুশাহ.মানউল্লাহশাহ,মামনশাহ.আজিমশাহ.মরমী কবি গিয়াস উদ্দিন আহমদ. সুরুজ আলী.আব্দুল আজিজ.সাংবাদিক কবি অতীনদাশ.বশির উদ্দিন.এস,এস শরিয়তউল্লাহ.
ম‌নির উ‌দ্দিন নুরী,সাংবা‌দিক গিয়াস উ‌দ্দিন (আ‌মে‌রিকা) ম‌তিউর রহমান,
আশিক আলী ভান্ডারি,কবি সৈয়দা রহিমা বেগম. গী‌তি ক‌বি সালাহউদ্দিন ভান্ডারি. মনসুরআহমদ.শানুরশাহ,ক‌বি মাহবুর রহমান লায়েক,নগরী বাউল আব্দুলকরিম. লুৎফা বেগম লিলি.শাহীনা জালালি সহ নাম জানা অজানা অনেকেই এ ভুমিতে জন্ম গ্রহন করেছেন। তাদের উত্তরসুরি হিসেবেই ভাবধারায় ইহকাল ও পরকালের ওপর অলি আউলিয়ার ও নবীর শানে দিন মজুর গী‌তি কবি হিজরত আহমদ ৪ শতাধিক বিভিন্ন ধারায় লোকসঙ্গীত, মুর্শিদী-মারফতি, জারি-সারি, পাঁচালী, পদাবলী, গজল, ভক্তিগীতি, ভজন-কীর্তন, কাওয়ালী প্রভৃতি গান রচনা করছেন । এসব সঙ্গীতের এক বিশাল ভান্ডারে সমৃদ্ধ আমাদের প্রাচীনতম ছাতকে গৌরবে ইতিহাস দেশ বিদেশে মাটিতে বহুদুর এ‌গি‌য়ে নি‌য়ে‌ছেন। এখানে লোককবি, দার্শনিক কবি, দেহবাদীকবি, তান্ত্রিক কবি.সুফিবাদ কবিদের বিচরন ভুমি হিসাবে বহিবিশ্বের মান‌চি‌ত্রে ছাতক শিল্পনগরী নাম পরিচিত র‌য়ে‌ছেন। এখানের মরমী কবিদের সঙ্গে মা মাটি মিল রেখে একাকার হয়ে চোখ আড়ালে সুফিবাদ বিষয়টি উপর বিশাল অমুল্য ভান্ডার সমদ্ধ করেছে এ প্রাচীনতম জনপদকে। নৌকা পাল তোলে নদীর মাঝে মাঝিরা আকুতি মধুর সুরে ভাটিয়ালি গানের আওয়াজ ভেসে আসতো সাধারন মানু‌ষের হৃদ‌য়ে। এ মুধর সুর কালে পরিবতে এখন এগু‌লো হারিয়ে গেছে। এখন আগের মতো নৌকার চলাচল একবা‌বে বিলীন হয়ে গেছে প্রাচীনতম নৌ বন্দর ছাতক ও । তারই পরবর্তী উত্তরসূরী হয়ে কাজ করছেন গী‌তি কবি হিজরত আহমদ। তার রচিত গানে রয়েছে রূহ, জান, প্রাণ বা আত্মা । নতুন নতুন গান রচনা করে জীব জগতের সেরা মানুষ ভজনায়। রচনা করে যাচ্ছেন আত্ম শক্তি আর আত্মতৃপ্তির বহুগান। যে গানে গানে তালাশ করলে ও বীর্যরূপি আল্লাহকে, যে নিজেই পরম শক্তি পুরুষ হিসেবে বান্দার দেহের মধ্যেই বিরাজ করে আস‌ছে। তার ব্যক্তি জীবনে দারিদ্রের পাড়ি দিয়ে এবং অর্থের অভাব সংসার গী‌তি কবি হিজরত আহমদ। সেখান থেকে অর্জন করেছে দেহ সাধনের চরমশিক্ষা। এ পোড় খাওয়া বাস্তবে অভিজ্ঞতার নানা বর্ণনা মেলে তার গানের ম‌ধ্যে। বর্তমান এ ৫২ বছরের দীর্ঘজীবন ভরেই নিয়েছেন তত্ত্বে¡ সাধনা করে যাচ্ছেন। তার বাস্তব জীবনের নানাবিধ সমস্যা আর জটিলতা কাটিয়ে উঠেছে একজন আধ্যাত্মিক শক্তির সুফিসাধক যা কি না তার সঙ্গীত সাধনায় নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে এবং একজন গী‌তি কবি হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছেন প্রয়াত ছাতক প্রেসক্লাবের প্রতিষ্টাতা সভাপতি ও মরমী কবি গিয়াস উদ্দিন আহমদ। তাকে আমরা যা কিছুই বলিনা কেন, তিনি একজন প্রান্তিক কৃষিজীবী ছিলেন, তার হালের চাষেই ফলে আউশ-আমনের ধান। কাঁদা জলের বুক চিরে এসে আমাদের চিনিয়ে দেয় শ্যামলীময়, দোদুল্যমান অনাবিল স্নিগ্ধসকাল। তাদের উত্তরসুরি হিসেবে কাজ করছেন আত্নাা জীবাত্না পরমাত্নাা অন্যকথায় অসীম অনন্তে সঙ্গে মেল বন্ধনের সেতু নিমান করেছেন । তার গান গজল ও সুরের মাধ্যমে রচনা করে যাচ্ছেন একজন দিনমজুর গী‌তি কবি হিজরত আহমদ । তার অভাব অনটনের মাঝেই ৪শতাধিক গান রচনা করছেন। তার একটি গান উল্লেখ্য করেছিঃ

আকাশে বান্দিয়া নৌকা.জমিনে ভাসাইলো।
আজব কারিগর.ইচ্ছামতো ভুবনে দৌড়াইলো।।
বিনা কাষ্টে. বিনা লোহার.পঞ্চজাত মিশাইলো।
মধ্যখানে বাইন্দা ছইয়া আসন মাইরা বইলো।
তার এ গানে কোন সুদুর অতীত অন্তর লোক থেকে যেনো সৃষ্টি ও সষ্ট্রার মিলন ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার ফলে,না পাওয়ার দুঃখ বেদনায় মধ্যে একটা চরম আকুতি.এ আকুতি তার গানের মাঝে প্রকাশ পে‌য়ে‌ছে। তার একটি গানের মধ্যে রয়েছে । নি‌ম্নে তার লেখা গানটি দেয়া হলো ?
দিন গেলো ভাই হেলায় হেলায়.
রাতি গেলো বিশ্রামে।
ভক্তের বাতি জালাইলায় না
আদম পুরের মোকামে।
আদম পুর নিশানা করে
বাজাও দমের বাঁশি আল্লাহ সুরে
তাড়াইয়া দাও ছয় ধপুরে.
মুশিদেরী তালিমে।
দশ জনার কর বাধা
তোমার ইচ্ছাতে হইবে সাধ্য।
যোগাইয়া ত্বনের-ই খাদ্য.
যাও পঞ্চরঙ্গের বাদামে।
হিজরত আহমদ কয় ভারিয়া.
যাও দশের ঘরে বাতি দিয়া
ত্বন বানাও মোহাম্মদিয়া.
জপো.আল্লাহ দমে দমে।
দিনমজুর গী‌তি কবি হিজরত আহমদ দেহের মধ্যে রিপুতে বাতি জ্বালাতে তার অন্তর বসিয়েছে আল্লাহ আল্লাহ সুর।
দিনমজুর গী‌তি কবি সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার প্রাচীনতম শিল্পনগরী উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে তার জন্ম গ্রহন ক‌রেছিল। তার পিতার বাবা ছিলেন ব্রিটিশ সরকার আমলে একজন শিক্ষক প্রয়াত ইরান আলীর পুত্র ইলিয়াছ আলী। ইলিয়াছ আলী ও মা ছিলেন আলেকজান বিবি পুত্র গী‌তি ক‌বি হিজরত আহমদ।
১৯৬৮ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর মাসে তার জন্ম গ্রহন করেন। তার এক বোন সামছুন নাহার। তার বাবা ১৯৯৮ সালে ৩১ ডিসেম্বর ও ২০০০ সালে ২৯ এপ্রিল তার বাবা- মা না ফেরার দেশে চলে গেছে। বাবা মা মারা যাবার পরে সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়ার কারনে লেখাপড়া ছেড়ে সংসারে জীবন জীবিকার জন্য দিনমজুর হিসাবে কাজ শুরু করেছিল। সে ১৯৮৪ সালে দালান নিমান শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করে অবশেষে জীবনের কঠোর সংগ্রামে যুদ্ধ করে একজন রাজমেন্ত্ররী হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন।এখান তিনি ছাতক উপজেলার গ্রাম গঞ্জে পাড়া মহল্লায় একজন গীতিকার হিসেবে সবার কাছে পরিচিত প্রচার বিমুখ মানুষ। সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একজন গী‌তি কবি. গীতিকার. সুরকার. হিসাবেই তার ব্যক্তিত্ব প্রচুর রয়েছে।
২০০০ সালে এপ্রিল মাসে সিলেটের সদর উপজেলার কান্দিগাও ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামে ছোয়াব আলীর প্রথম কন্যা রেজিয়া বেগমকে বিবাহ করেন। তার ২ পুত্র ৩ কন্যা ৫ সন্তানের জনক গী‌তিকবি হিজরত আহমদ। তার দুঃখ কষ্টে জীবন যাপন ও অভাবে সংসার চালিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া খরচ যোগাতে হিসশিম খাচ্ছেন ভাবুক গী‌তি কবি হিজরত আহমদ ।
২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে ১০৪টি লেখা গান নিয়ে মা’আমার সোহাগিনী নামে হিজরতগীতি প্রকাশিত হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট ফারজানা কম্পিউটর সেন্টার ডিজাইন কভারসহ মালিকানাধীন মাওলানা সাদিকুর রহমান ও সিলেটের মুদ্রন ঢাকা প্রিন্টিং প্রেস সিলেট মুক্তিযোদ্ধা গলি জিন্দাবাজার থেকে প্রকাশনা করেছেন। এ বইয়ের ভুমিকা ছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিঞ্জান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে সাবেক প্রধান ও সিলেট সেরা বিদ্যাপিট এম সি কলেজ সিলেটের বাংলা বিভাগ প্রধান প্রফেসর ডক্টর সফি উদ্দিন আহমদ।
তার প্রতিটি গানে রয়েছে আল্লাহ আখেরী নবীব ও অলি আউলিয়ার পীর মুশিদী শানে তার অসংখ্য গান রচনা করেছেন তিনি। সে ১৯৯১ সালে রহস্যজনক ভাবে ভাব-এজগতে প্রবেশ করেন। প্রথম সিলেটের প্রয়াত মরমী কবি সাংবা‌দিক গিয়াস উদ্দিন আহমদ রচিত একটি গান দেশ বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ”মরিলে কান্দিসনা আমার দায়” এ গানের লেখক প্রথমে তাকে এ ভাব জগতে সাবিক সহযোগিতা করেছেন বলে তার বইয়ে উল্লেখ্য করেছেন গী‌তি ক‌বি হিজরত আহমদ। তার গানের প্রেম-ভালোবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃক্তি। আল্লাহ মানব সৃষ্টিকালেই তাতে প্রেম-প্রকৃতি। অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে প্রেম-অনুরক্তির প্রকৃতি তেমন নেই। প্রেমে প্রকারভেদ থাকলেও আল্লাহ্কে ভালোবাসাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেম। তার গানের মধ্যে রয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় কথার বাইরেও আবেগ, অভিমান, না পাওয়া, বিচ্ছেদ, কষ্ট, কিছু কান্না বা সুখের অব্যক্ত কথা মানুষের অন্তরে সর্বদা ঘুরপাক খেতে থাকে। আর তখনই মানুষ ভাবনার রাজ্যে প্রবেশ করে। সেই ভাবনার ফলস্বরূপ মানুষ তার অন্তরের অব্যক্ত অর্থ ও ভাবপূর্ণ কথাগুলো প্রকাশ করে গানে গানে, ছন্দে, গানের বাণীতে, যা ব্যক্তি নিজে প্রকাশ করা ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারে না। যুগে যুগে মানুষের অন্তর নিঙ্ড়ানো বাণীতে রয়েছে কল্যাণের বার্তা, প্রেমের কথা, স্রষ্টা-সৃষ্টি, জন্ম-মৃত্যু ও বেদনার কথা। কাব্যগুণ সমৃদ্ধ এসব বাণীর সঙ্গে সুর যুক্ত হয়ে প্রকাশ ঘটে সঙ্গীতের। তাই বলা হয়, বাণীর সাথে ভাবের ও সুরের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। কোমল ও সূক্ষ্ম অনুভূতিজাত সঙ্গীতের বাণী, আবেগ, সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের বার্তা উপলব্ধিতে মানুষ আপ্লুত হয়, আনন্দে উদ্ভাসিত করে মানুষের হৃৎকমল। এটাই সঙ্গীতের ধর্ম। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে সঙ্গীতের রচনা, ঢং, আঙ্গিক এবং পরিবেশনায় নতুন নতুন স্বাদ সংযোজিত হয়। প্রকারভেদে সঙ্গীত সবাই ভালোবাসে। কিন্তু সুর নিজের অজান্তেই ব্যথিতের চোখে অশ্রু হয়ে ঝড়ে শক্তিধর এই সুর আবার কখনো কখনো মানুষের হৃদয়ে আনন্দের ঝংকারও তোলে। গী‌তি কবি তার মনে আগুনের আলোকচ্ছটা নেই, অথচ দহন করে অঙ্গার করে দেয় গী‌তি ক‌বি হিজরতের দেহ ও মন। আর এই পোড়া মনের সব অভিব্যক্তি ও মনের মানুষের সন্ধানে শাশ্বত প্রেমের প্রকাশ পায় বাউল, বৈষ্ণব, মরমি ও সুফি সাধকদের চিন্তা চেতনার সমন্বয়ে রচিত আকুল করা গানেই। তার গানের বাণী, মর্মস্পর্শী আকুলতা, অন্তরের আবেদন, আহ্বান, হৃদয়স্পর্শী আবেগে, রূপে-রসে-মাধুর্যে ও হৃদয়ের আকুলতা মিশ্রিত গানগুলো যখন একতারা-দোতারা-বেহালার সুরে বেজে ওঠে তখন মানুষের প্রাণে নিরন্তর অনুরণন তোলে, যা সব জাতির মর্ম মূলে সাড়া জাগিয়ে সর্ব যুগের মানুষের অন্তরকে স্পর্শ করে অনায়াসে। তাইতো অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মরমী সাধকগণ গেয়ে ওঠে। তার গানের রয়েছেন সাধন পথের চারটি স্তরে সন্ধান মিলছে শরিয়ত, তরিকত, মারেফাত. হকিকত।
তার গানের সুরের মাধ্যমে প্রেম, বিচ্ছেদ কিংবা চাওয়া-পাওয়ার আর্তি ব্যক্ত করেন প্রেমময়ের নিকট। সঙ্গীতের ধর্ম মানুষের হৃদয়ে রস সঞ্চার করা, তাই সঙ্গীতের কোনো জাত নেই। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব, ছোট-বড় সর্বপ্রকার মানুষের মনকে জাগ্রত করবে বলেই সঙ্গীত প্রেমিক মানুষের মনের খোরাক। মানুষের সুখ-দুঃখ, মনের সব চাওয়া-পাওয়া, হারানোর বেদনা, না পাওয়ার আর্তনাদ উপমা, রূপক ও তত্ত্ব কথার আশ্রয়ে যেন সুরের বিনুনিতে গেঁথে রাখেন রচয়িতা। তার গানের গভীরে প্রবেশ করতে উচ্চশিক্ষিত আর জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন রয়েছেন ভাবুকের। মানব সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনে হতাশা-দুঃখ-বেদনা-মৃত্যু-হাসি-কান্না ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষ সুখে হাসে, দুঃখে কাঁদে, এই দুঃখের কান্নার একটা সুর প্রতিটি মানুষের অন্তরে বেজে ওঠে নিভৃতে। সেই কান্না যখন অন্তর জর্জরিত করে তোলে তখন বিরহের আর্তিগুলো ক্রন্দনধ্বনি হয়ে শব্দের মাধ্যমে মানুষের কণ্ঠে প্রকাশ করে। সুরে প্রকাশিত এই কথাগুলোকেই আমরা গান বা সঙ্গীত বলি। বাঁশিতে ফুঁ না দিলে যেমন বাঁশি বাজে না; তেমনি কোনো কিছুতে আঘাত ছাড়া শব্দের সৃষ্টি হয় না। যেমন অন্তরে আঘাত ছাড়া কবিত্ব শক্তির প্রকাশ পায় না। তেমনি দুঃখ ছাড়াও সুরের সৃষ্টি হয় না। কেননা মানুষ দেহে আঘাত পেলে উহ্ শব্দ করে, আর অন্তরে আঘাত পেলে নীরবে কাঁদে। ব্যথিতের এই নীরব কান্না যখন শব্দে প্রকাশ পায় তখন এক ধরনের সুরের সৃষ্টি হয়। বাতাসের শনশন শব্দ, পাখির ডাক, প্রকৃতি থেকে পাওয়া শব্দ থেকেই মানুষ সুর খুঁজে পেয়েছিল এ কথাও সত্য। কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীতের রচনা, ঢং, আঙ্গিক ও পরিবেশনায় নতুন নতুন স্বাদ সংযোজিত হয়। প্রকারভেদে সঙ্গীত সবাই ভালোবাসে। এমন একজন খুঁজে পাওয়া মুশকিল, যে জীবনে মনের আনন্দে কিংবা দুঃখে গুনগুন করে মনের ভাব প্রকাশ করেননি। সে-টা হোক যে কোনও প্রকারের সঙ্গীত। মানুষের মনের ভাবকে সুর ও বাণীর মধ্য দিয়ে প্রকাশ করাই সঙ্গীতের ধর্ম। জীবনের সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতনের মর্মবাণী মিশ্রিত কথাগুলো মানুষের সুমিষ্ট কণ্ঠে সুরের সাহায্যে বেরিয়ে আসে।
গীতি কবি হিজরত আহমদ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের সিরাজপুর কাজিবাড়ি এলাকার মাওলানা আব্দুল হান্নান নকশবন্দিয়া তরিকা পীরের কাছে সে মুরিদ হয়েছেন। নকশবন্দিয়া তরিকাতে গী‌তি ক‌বি হিজরতে বাপ দাদা এই সিলসিলাকে.আমিও আল্লাহর রহমতে হয়েছি হাজির।রওজা শরীফে শুয়ে আছেন মুশির্দ বাবা হয়রত ছাহেব ক্বিবলা আব্দুল রাজ্জাক তার দাদা পীর নিয়ে তার একটি গান রচনা করেছেন গী‌তিকবি নিজেই। নকশবন্দ কথাটির অর্থ দুটি ভাগে বিভক্ত একটি নকশা অপরটি বন্ধ। নকশা অর্থ অঙ্কন করা অর্থাৎ হৃদয়ে আল্লাহর ছবি ও নাম অঙ্কিত করা। আর বন্ধ অর্থ বন্ধন। অর্থাৎ যুক্ত হওয়া আল্লাহর সঙ্গে। এজন্য নকশবন্দিয়া তরিকার শিষ্যরা অনুশীলন করে কুরআন এবং নবীজীর সুন্নাহ মেনে চলে। এর ফলে তাদের হৃদয়ে আল্লাহর প্রেম জাগ্রত থাকে।নকশবন্দিয়া তরিকা ঐতিহাসিকভাবে প্রথম শুরু হয় খলিফা আবু বকর সিদ্দিকী (রাঃ) এর দ্বারা। যিনি নবীজীর পরে ইসলামের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ। তিনি নবীজীর পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি। তার উদ্দেশে নবীজী বলেছেন‘আমি যদি বলি আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু কে তবে তা আবু বকর। যিনি আমার বন্ধু ও ভাই।’ নকশবন্দিয়া তরিকা অন্যান্য তরিকার থেকে আলাদা। কারণ এই তরিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন নবীজীর ছয়জন উত্তরসূরি।###

লেখক
সাংবা‌দিক ও ক‌বি আনোয়ার হোসেন রনি
ছাতক প্রেসক্লা‌বের,
সাধারন সম্পাদক,

229 Views

আরও পড়ুন

রাজধানীতে হঠাৎ বৃষ্টি, সাথে তুমুল বজ্রপাত

চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় ছাত্র অধিকার পরিষদ এর নতুন কমিটি

পেকুয়ায় বজ্রপাতে দুই লবণ চাষির মৃত্যু

গাইবান্ধায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালিত

আলোচিত মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার

নওজোয়ানের সংবর্ধনায় চবি ভর্তি পরীক্ষায় ১ম স্থান অর্জনকারী মোবারক হোসাইন

শুধু গরমে গাছের গুরুত্ব নয়, গাছ লাগাতে হবে সারাবছর

বিশ্ব শ্রমিক দিবস : একটি পর্যালোচনা

কুবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

তীব্র তাপদাহে বাড়ছে রোগী : বারান্দা-মেঝেতে একের স্থানে তিন

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

দোয়ারাবাজারে ধ’র্ষ’ণের পর কলেজ ছাত্রী খু’ন, খু’নী লিটন আটক!