——-
অতি ক্ষুদ্র এক প্রাণ। কত সুশৃংখল জীবনযাত্রা। সঙ্ঘবদ্ধভাবে চলে যাচ্ছে জীবন। সারিবদ্ধ ভাবে খাবারের সন্ধানে পাড়ি দিচ্ছে কতই না পথ। সারিবদ্ধ ভাবে চলার পাশাপাশি বিপরীত পথেও তাদের চলন লক্ষ্য করা যায়।
বুঝতে পেরেছেন আমি কিসের কথা বলছি? হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন আমি আপনাদেরকে পিঁপড়ার কথা বলছি। জানেন কেন পিঁপড়ারা সারিবদ্ধ ভাবে একই পথে চলে বা কিভাবে একই সারিতে চলে, কিন্তু পথ ভুল করে না? নিশ্চয়ই মনে কৌতুহল জাগছে উত্তর শোনার জন্য।হ্যাঁ আজ সেই কথাই লিখছি।
পিঁপড়ার সারিবদ্ধ হয়ে একই পথে চলে। প্রথম পিপড়াটিকে অনুসরণ করে পিছনের পিঁপড়াগুলো একই পথে চলে কিন্তু কখনো তারা পথ ভুল করে না। তার পিছনে নিশ্চয়ই এক কারণ রয়েছে। পিঁপড়ার পশ্চাৎ প্রান্তে এক ধরনের হরমোন থাকে যার নাম ফেরোমেন।সারির প্রথম পিপড়া টি ফেরোমের নামক হরমোন নিঃসৃত করে। নিঃসৃত এই হরমোনের গন্ধ পিছনের পিঁপড়াটি বুঝতে পারে এবং হরমোনের গন্ধ অনুসরণ করে পথ চলে। এভাবে প্রতিটি পিপড়া ফেরোমেন নামক হরমোন নিঃসৃত করে এবং সেই গন্ধ শুকে তারা তাদের পথ চলে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে, চলন্ত পিঁপড়ার রাস্তার মধ্যে আপনি আপনার আঙ্গুল দিয়ে যদি একটি অংশ মুছে দেন তাহলে কি ঘটে জানেন?
তখন উক্ত হরমোনের গন্ধ ওই রাস্তার মধ্যে পিঁপড়ারা শুকতে পারে না। তারা সন্দিহান হয়ে পড়ে যার ফলে তারা নতুন পথ অবলম্বন করে পথ চলে।
আবার দেখা যায় পিপড়ার সারিগুলো বিপরীত পথে চলার সময় প্রতিটি পিপড়া একে অপরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। মূলত বিপরীত পথের দুটি পিপড়া একই গোত্রের বা একই জাতের কিনা সেটি বুঝার জন্য তারা একত্রে মিলিত হয়। পিপড়া খাবারের সন্ধানে বের হয়। তারা খাবার সংগ্রহ করে তাদের বাসায় নিয়ে যায় এবং সকলেই একত্রিত হয়ে খাবার ভক্ষণ করে। কেউ কাউকে ছেড়ে খাবার গ্রহণ করে না। সমজাতের সকল পিপড়াগুলো এই পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাই তারা বিপরীত পথে চলার সময় একে অপরের সাথে মিলিত হয়ে লক্ষ্য করে যে তারা একই গোত্রের কিনা। এই অবস্থা কে বলা হয় “প্যারেন্ট নেস্ট”।বিপরীত পথে চলন্ত পিঁপড়াদের হরমোনের গন্ধ যদি একই হয় অর্থাৎ দুটি পিঁপড়ায় যদি ফেরোমেন নিঃসৃত করে তাহলে পিঁপড়াদ্বয় গন্ধ শুঁকে সেটি বুঝতে পারে যে তারা একই গোত্রের কিনা আর এটি জানার জন্যই তারা মিলিত হয়।
——
আ স ম রোকনুজ্জামান নাহিদ
শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।