ঢাকাশুক্রবার , ১০ মে ২০২৪
  1. সর্বশেষ

কিছু বিয়োগ মর্মন্তুদ,আর্তনাদের–জসিম উদ্দিন

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১ মে ২০২০, ১:৪২ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

————-
১.
লক ডাউন পরিস্থিতিতে আত্মসচেতন মানুষেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যতিরেকে আবাস্থল থেকে বের হন না। সবাই নিজের, পরিবার পরিজনের জীবনের মূল্য বুঝে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকেও দূরে অবস্থান করেন।

গ্রামের যেখানটায় প্রাত্যহিক ভোরে বাজার বসে, সেখানে এখনও কেনাকাটা হয়। তবে পূর্বেকার তুলনায় অতি অল্প পরিসরে। আগের মতো বিপুল মানুষের ভীড় হয় না। সময় নষ্ট হবে বলে দাম নিয়েও কষাকষি হয় না। সবাই নিজ নিজ প্রয়োজন সেরে ‘যঃ পলায়েতে স জীবতি’ ভাব নিয়ে বাড়ি ফিরে।

এমনই একটা সময়ে সেদিন আমিও বাজারে গেলাম। বাজারে ঢুকতেই যে ব্রীজটা পড়ে সেটির বাঁ পাশ ঘেঁষে একটা ছোট্ট ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। লক্ষ্য করলাম, যে কেউ বাজারে ঢুকতেই ছেলেটি বাঁকানো দাঁতের হাসি হেসে হাত বাড়িয়ে ‘কয়টা টাকা’ চায়। পাশে কথা বলতে থাকা দুই চাচাকে ছেলেটিকে দেখিয়ে জানতে চাইলাম তার পরিচয়। তাদের একজন বলে উঠলেন ”ও রাশেদ। আমগো পাশের এলাকার জয়নালের ছেলে।”

পুরোপুরি খোঁজ নিয়ে জানলাম, গত ফাগুনে সাত বছরের রাশেদ কে রেখে তার মমতাময়ী মা মারা যান। এরই মধ্যে তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে রাশেদক কে বাদ দিয়েই নতুন সংসার সাজিয়েছেন। অপ্রত্যাশিত এই পরিস্থিতির সাথে সে এখনো নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেনি। তাই দু’বেলা দুমুঠো খাওয়াটাও রাশেদের দায় হয়ে উঠেছে। উপায়ন্তর না দেখে সে প্রতিদিন বাজারে আগন্তুকদের করুনা ভিক্ষা করে দুমুঠো খাবারের জোগান দেয়।

খেয়াল করলাম, ছেলেটি টাকা চাওয়ার সময় বাঁকানো দাঁতের হাসি দিলেও ব্রীজের ওখানটা একটু জনশূন্য হলেই দু’হাতের পৃষ্ঠ দিয়ে চোখ কচলায়, শরীরে লেগে থাকা ময়লার আস্তরণে ঢাকা শার্ট টা টেনে চোখ মোচে ফেলে আবার নতুন আগন্তুকের সামনে হাত বাড়ায়।

২.
মসজিদের পাশের বাড়ির বাসিন্দা বৃদ্ধ বরকত কাকা। বেশ ক বছর হলো কাকার স্ত্রী গত হয়েছেন। পরিবারে টানাপোড়েন থাকলেও কাকা কাকীর প্রণয়ে অভাব ছিলো না। অনেক বেশি ভালোবাসতেন স্ত্রীকে। কাকী মারা যাওয়ার পরেও প্রায়শই কাকা কে এবাড়ি ওবাড়ি দেখা যেত চাল, ডাল, নারিকেল ইত্যাদি ভিক্ষা করতেন। কিন্তু বিগত তিন-চার মাস হয় বরকত কাকা কে আর দেখি না। অবশ্য এর মধ্যে ভুলেও গিয়েছিলাম উনার কথা। হয়তো ভুলে থাকতামও যদি না আজ সকালের বাজারে একটা ভারী ব্যাগ হাতে অসহায়ের মতো উবু হয়ে দাঁড়ানো না দেখতাম।

হয়তো কারো দেওয়া অনুদান বা ব্যাগ ভর্তি বাজার করে বাড়ি ফিরবেন বলে রওনা হয়েছেন। কিন্তু যেখানে তিনি স্বাভাবিক হাটাচলা করারই সামর্থ্য রাখেন না, সেখানে এমন একটা ব্যাগ! পুরোপুরি অসম্ভব। সেজন্য রাস্তার মাঝখানে উবু হয়ে ব্যাগটা মাটিতে রেখে পাশ দিয়ে হেটে চলা কয়েকটা তরুণের দিকে স্থীরচিত্তে তাকিয়ে আছেন।

তাঁর সেই তাকিয়ে থাকার অনেক অনেক অর্থ আছে। আছে অনেক ক্ষুদে বার্তা। হয়তো তিনি নিশ্চুপ ভাবে তরুণদের থেকে একটুখানি দয়া চাইছেন যতটুকু দয়ায় তাঁর সেই ব্যাগ বাড়ি পৌঁছুবে। হয়তো তিনি সেই পথিকদের দিকে তাকিয়ে নিজের হারানো সেই বল, যৌবনদিপ্ত অতীতে স্মৃতিচারণ করেছেন। আবার এমনও হতে পারে, মানুষ যেমন করে কোনো কিছুতে দৃষ্টিপাত করে ভাবনার অতলে হারিয়ে যায়, তেমন করে পথিকদের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে নিজের পকেটে অবশিষ্ট কিছু কিনা যা দিয়ে রিক্সাভাড়াটা দেওয়া যায়, তা ই ভাবছেন। আর নয়তো নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করছেন আজ তিনি এতটাই অসহায়,নিরুপায় বলে। আজ তাঁর আর কিছুই করার নেই বলে।

লেখক- মোঃ জসিম উদ্দিন
শিক্ষার্থী- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

93 Views

আরও পড়ুন

চট্টগ্রামে বিমান বিধ্বস্ত : নিহত এক পাইলট

চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমান: আশংকাজনক অবস্থায় দুই পাইলট

জেলা আ.লীগের সভাপতিকে হারিয়ে সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন এমপি পুত্র

নওগাঁর পত্নীতলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গাফফার জয়ী

বিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পারভেজ কবীরের জয়

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব উদযাপন বৃহস্পতিবার

তানোরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানসহ বিজয়ী হলেন যারা

বিশ্ব গাধা দিবস উদযাপন করবেন যেভাবে

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ভোট বর্জন করলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জিএম সেলিম

শেরপুরে দুই উপজেলার নির্বাচন কাল

পেকুয়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে গেল দোকান ও বসতঘর

রাঙ্গাবালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের কমিটি গঠন