ঢাকারবিবার , ১৯ মে ২০২৪
  1. সর্বশেষ

শাস্তির অপর্যাপ্ততা বাড়ায় ধর্ষকের সাহসিকতা ॥

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২:০৭ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

———————————-
মহামারী করোনা ভাইরাসের চেয়েও বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের জীবনকে বেশি আতঙ্কিত করছে ধর্ষণ কথাটি।খবরের কাগজের পাতায় চোখ রাখলেই দেখছি কোন ধর্ষণের ঘটানা উল্লেখ।মেয়েদের নিরাপত্তা আজ কোথায়?কার সাথে সে নিরাপদ? প্রশ্ন থেকেই যায় সচেতন মহলের কাছে,আইন প্রণয়নকারীদের কাছে,রাষ্ট্র পরিচালনাকারী সরকারের কাছে।ধর্ষণের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের(আসক) হিসাব অনুযায়ী “২০১৯ সালে এক হাজার ৪১৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ২০১৮ তে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ ” অর্থাৎ এক বছরে দ্বিগুণের বেশি। ২০২০ এর কথা আমরা ছেড়েই দেই, শুধু সেপ্টেম্বরের হিসেব করলেই দেখতে পাবো কত শত ধর্ষণের কাহিনি।যদিও আরো অনেক ধর্ষণ অপ্রকাশিত রয়ে যায়, ধর্ষকের বিরুদ্ধে কোন মামলা পাওয়া যায়না, সামাজিক অসম্মানের কারণে বহু পরিবার এমন ঘটনা জেনে শুনেও মুখ খুলতে নারাজ।

তবে নিরাপত্তার প্রশ্ন থেকেই যায়।মেয়েরা আজ নিরাপদ কোথায়?ঘড়ে বাইরে কোথাও তাদের নিরাপত্তা নেই।কিছুদিন আগে গনধর্ষনের শিকার হয়েছে একটি আদিবাসী চাকমা পরিবারের মেয়ে।মা বাবাকে আটকে রেখে নিজের বাড়িতেই মেয়েটিকে ধর্ষিতার তকমা লাগিয়ে দিয়েছিল এই মানুষরুপি জানোয়াররা। সিলেট এমসি কলেজে স্বামীর সাথে ঘুড়তে যেয়ে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ। স্বামীর চিকিৎসার জন্য রক্তের জোগাড় করতে যেয়ে গৃহবধু ধর্ষণ। চলন্ত বাসে দরজা জানালা বন্ধ করে কিশোরীকে ধর্ষণ। পুলিশ হেফাজতে থাকা মেয়েরাও আজ ধর্ষণের শিকার। এ দেশে রাস্তার পাগলীও ধর্ষকের ছোবল থেকে রক্ষা পায়না,৩ বছরের শিশু, ৭২ বছরের বৃদ্ধা কেউ বাদ পরে না এ তালিকা থেকে।

এসব কিছুর শেষ কোথায়?কিছুদিন আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়,ধর্ষক মজনু গ্রেফতার হয়।বহু প্রতিবাদ, মিছিল, সমাবেশ চলে বিচার চাই দাবিতে। এই দাবি প্রমাণ করে রাষ্ট্র ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে ব্যার্থ।এদেশে আজও বিভিন্ন পাড়া গায়ে,গ্রামে ধর্ষকের শাস্তি হিসেবে স্থানীয় নেতারা টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেন। যে দেশে একটা মেয়ের সম্মান টাকার মূল্যে বিবেচনা করা হয় সে দেশ তো ধর্ষকদের জন্যই।এমনো অনেক ধর্ষণের মীমাংসা হয়েছে যেখানে ধর্ষিতাকে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কি হয়?

বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের কঠোর শাস্তি বিদ্যমান তবে নেই সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ।অপরাধী গ্রেফতার হয় কিছুদিন পর জামিনে ছাড়া পায়।এমন দেশে ধর্ষণ রুখবে কে?কে বলতে পারে পরের ধর্ষিতা মেয়েটি আপনার আপনজন হবে না?

চীনে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড।অনেক সময় অপরাধের ভয়াবহতা বোঝাতে ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে দেয়া হয়।ইরানে ধর্ষককে জনসমক্ষে ফাসিতে ঝুলিয়ে হত্যা বা গুলি করে হত্যা করা হয়।উত্তর কোরিয়ায় কালক্ষেপণ না করে ধর্ষককে ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।আফগানিস্তানে ধর্ষণের চার দিনের মধ্যে ধর্ষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।

অন্যদিকে আমাদের দেশে ধর্ষণের শিকার হবার পরে সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রতিবাদ করতে হয়,প্রমাণের জন্য নাজেহাল অবস্থা হয় মেয়েটি ও তার পরিবারের।পরবর্তীতে ধর্ষককে গ্রেফতার করা হলেও ,হয়না উপযুক্ত শাস্তি।

ধর্ষকের সৃষ্টি হঠাৎ করে হয়না।পরিবার ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে তাদের মনে মেয়েদের প্রতি কোন সম্মান,শ্রদ্ধা আগে থেকেই কাজ করেনা।মেয়েদের তারা শুধু যৌনতার বস্তু মনে করে।তারা চোখ দিয়ে, অন্তর দিয়ে রোজ আরও হাজারো মেয়েকে ধর্ষণ করে।কিন্তু যেদিন সুযোগ পায় সেদিন নিজেদের মানুষরুপি জানোয়ারের চেহারাটা সামনে নিয়ে আসে।আবারও কোন মেয়ের গায়ে ধর্ষিতার তকমা লাগায়।তারা জানে তাদের কি এমন শাস্তি হবে,এইতো মাত্র কয়েক মাসের জেল।এই ধারনা ও পূর্ববর্তী বিচারের ধরন তাদের ধর্ষক মনকে আরো সাহস যোগায়।

ধর্ষণের পর প্রতিবাদ নয়,ধর্ষন রুখতে প্রতিরোধ চাই।প্রতিরোধের একটাই পন্থা হলো ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা।ধর্ষণের কথা বলতে যেয়ে যে বা যারা মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে, তাদের কাজকর্মকে দায়ী করে তাদের জেনে রাখা উচিত একটা মেয়ে যদি অসংযত পোশাক পরে বা আচরণ করে তার জন্য সে অবশ্যই সমালোচনার যোগ্য তবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত কোন মানুষ,কোন পুরুষ সেই মেয়ের সমালোচনা করতে পারে, মেয়েটিকে উৎশৃঙ্খল ভাবতে পারে, তাকে এড়িয়ে যেতে পারে কিন্তু তাকে ধর্ষণের মানসিকতা পোষণ করতে পারে না।ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোশাককে দায়ী না করে ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা অতীব জরুরি।আজ সরকারের কাছে মিনতি ১০ জন ধর্ষককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে দেখুন ধর্ষণের সংখ্যা কমে কিনা?অবশ্যই কমবে।এই মানুষরুপি জানোয়ারগুলো ভালো কথা,অনুনয়-বিনয়, সংশোধনীর যোগ্য নয়, এদের একটাই প্রাপ্য তা হলো উপযুক্ত শাস্তি।রাষ্ট্রের আজ এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার যা দেখে পরবর্তীতে কোন পুরুষ মেয়েদের দেখে যৌনতা নয়, সম্মান শ্রদ্ধা করতে বাধ্য হয়।তাদের দিকে যৌনতার দৃষ্টিতে তাকানোর সাহস না পায়। উপযুক্ত শাস্তি পারে এই নরপিশাচ ধর্ষক সমাজকে রুখতে।

———————
লেখক:সানজানা হোসেন অন্তরা
তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

111 Views

আরও পড়ুন

বিচ্ছুর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

শারমিন মীমের কবিতা “ভেজাল”

শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

শার্শায় ভোটগ্রহণ নিয়ে কর্মকার্তাদের সাথে নির্বাচন কমিশনারের ব্রিফিং

নাগরপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা দুলাল বহিষ্কার

গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে বুটেক্স শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রূপগঞ্জের জাঙ্গীর কুদুর মার্কেট-নদীরঘাট রাস্তাসহ ড্রেন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

নাগরপুরে হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় জমেনি উপজেলা নির্বাচন

“রাখে আল্লাহ, মারে কে” : নাইক্ষ্যংছড়ি ছালামী পাড়ায় মোটরসাইকেল মার্কার সমর্থনে উঠান বৈঠকে চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাইল

কবি ফিরোজ খানের কবিতা

নাইক্ষংছড়িতে প্রিজাইডিং সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ !!

লোহাগাড়ার আজিজ কাতারে মারা গেলো স্ট্রোকে