ঢাকাশুক্রবার , ১৭ মে ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. বিশেষ সংবাদ

জীবনে বাবার ছায়া বটবৃক্ষ থেকেও বিশাল

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
২১ জুন ২০২০, ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

মো: তানজিল হোসেন।
বাবা শুধু একজন মানুষ নন কিংবা স্রেফ একটি সম্পর্কের নামও নয় । বাবার মাঝে জড়িয়ে আছে এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ । বাবা নামটা উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কোন বয়সী সন্তানের হৃদয়ে শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার এক অনুভব জাগে।একজন বাবা তার সন্তানের জন্য কতভাবে অবদান রেখে যান তার চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ কেউ কখনো মিলাতে পারবে না।বাবার কাঁধটা অন্য সবার চেয়ে বেশী চওড়া, তা না হলে কি করে সমাজ-সংসারের এত দায়ভার অবলীলায় বয়ে বেড়ান!

আমার আপাদমস্তক যা কিছু অর্জন তার সবকিছুই অংশীদার আমার বাবা। জীবনে চলার পথে যত বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি, সেগুলো অতিক্রম করতে সাহস জুগিয়েছেন বাবা। সন্তানকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমার বাবা জীবনে অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন, অনেক পরিশ্রম করেছেন কিংবা এখনো করে যাচ্ছেন। বাবার সাথে কিছু স্মৃতি আছে, যেগুলো আমার মনে পড়লে এখনো চোখে পানি চলে আসে এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার মনোবল বাড়িয়ে দেয়। তেমনি একটি ঘটনা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার দিন।
আমার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সিট পড়েছিলো সিদ্বেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। সেদিন আব্বুর বাইকে করে এক্সাম দিতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়, গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হবার আগেই আমরা পরীক্ষার হলে পৌঁছে যাই। এক্সাম হলে প্রবেশ করার কিছুক্ষন পরেই শুরু হয় মুশলধারে বৃষ্টি। এ বৃষ্টির মধ্যেই ভিজতে ভিজতে সন্তানের পরীক্ষার চিন্তা করতে থাকে। আল্লাহ অশেষ রহমতে পরীক্ষা ভালই হয়েছিলো। বাহিরে এসে দেখি আমার বাবার মত অনেক অভিভাবক বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। পরীক্ষার হল থেকে বের হওয়ার পর আমাকে দেখে আব্বু এগিয়ে আসে। পরীক্ষা কেমন হয়েছে জিজ্ঞেস করে। ভাবলাম আব্বুর এই চিন্তাকে কিছুটা লাঘব করা প্রয়োজন। বললাম চিন্তা করো না আব্বু, চান্স হয়ে যাবে। এরপর আমরা অনেকক্ষণ যাবত অপেক্ষা করলা বৃষ্টি কমার জন্য কিন্তু কমার পরিবর্তে বৃষ্টি বেড়েই চলেছে,রাস্তাঘাট সব ডুবে গেছে। ঘড়ির কাটায় তখন প্রায় দুপুর ১২টা। এদিকে দুপুর ২ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা। আর দেরি করা ঠিক হবে না ভেবে রওনা দিলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে। রাস্তা থেকে ছাতা কিনে নিলাম। কিন্তু ছাতা কিনলেও বাইকে দুইজনকেই কভার করা যাচ্ছিলো না। আব্বু বললেন ছাতাটা তোর মাথার উপর ধর। এই বৃষ্টিতে আব্বু ভিজতেই লাগলেন। পরবর্তীতে দুপুরের খাবার খেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকলাম পরীক্ষা দিতে। পরীক্ষা দিয়ে যখন বাহিরে আসলাম, এসে দেখে এই বৃষ্টির ফলে বাইকের সাইলেন্সারে পানি ঢুকেছে। বাহিরে এসে দেখি আব্বু ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরবর্তীতে সাইলেন্সার ঠিক করে বাসায় চলে আসি। এক্সামের রেজাল্টের দিন দেখি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিকে গেছি, পরিবারের সে কি আনন্দ! আমার আনন্দের চাইতেই আব্বুর আনন্দ মনে হয় খানিকটা বেশি ছিল। সেই অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এরপরের দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট দেয়, সেখানেও চান্স হয় আমার।

এ রকম হাজারো কষ্ট সহ্যে করে প্রতিনিয়তই সন্তানকে জিতিয়ে দিচ্ছেন বাবা।
বাবার প্রতি সারাজীবন আমি কৃতজ্ঞ থাকবোম। তার ঋন কখনোই পরিশোধ করার মতো নয়। কিন্তু আমি সবসময় চেষ্টা করব তার স্বপ্নগুলো পূরন করতে, তার মুখে অনন্তকাল প্রশস্ত হাসির ব্যবস্থা করতে। বাবা যে আমার থেকে অন্তত এতটুকু প্রাপ্য!
পরিশেষে একটা কথাই বলবো, বাবার ছায়া শেষ বিকেলের বট গাছের ছায়ার চাইতেও বড় । সে তার সন্তানকে জীবনের সব উত্তাপ থেকে সামলে রাখেন।

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

ইকবাল/এসএফ/ঢাকা।

308 Views

আরও পড়ুন

কবি ফিরোজ খানের কবিতা

নাইক্ষংছড়িতে প্রিজাইডিং সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ !!

লোহাগাড়ার আজিজ কাতারে মারা গেলো স্ট্রোকে

যশোরে মেলার নামে চলছে সর্বনাশা লটারি!

গৃহবধূকে পিটিয়ে হ’ত্যা, স্বামী–শশুড়-শাশুড়ী পলাতক

নাগরপুরে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা গোলাম বহিষ্কার

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

আদমদীঘিতে ভোট গ্রহনকারি কর্মকার্তদের প্রশিক্ষন উদ্বোধনী সভায় বগুড়া জেলা প্রশাসক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ইবির গণিত বিভাগের মেধাবী ছাত্রী সামিয়া

বোয়ালখালীতে আগুনে পুড়েছে ৩টি দোকান

কুবি ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ

মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল