ঢাকাসোমবার , ২১ এপ্রিল ২০২৫
  1. সর্বশেষ

“মুমিন জীবনে কোরবানির গুরুত্ব, ফজিলত ও তাৎপর্য”

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
১৯ জুলাই ২০২১, ২:৩৯ অপরাহ্ণ

Link Copied!

কোরবানি হলো ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিভাষাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রসিদ্ধতম ইবাদত । কোরবানি শব্দটি বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত একটি বিদেশি শব্দ, শব্দটি আরবি ও ফরাসি উভয় ভাষা থেকেই আসতে পারে।আরবিতে কোরবানি শব্দের অর্থ আল্লাহর নৈকট্য আর ফারসি তে হয় ত্যাগ অর্থে ব্যবহৃত হয়।ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিভাষায় কোরবানি বলতে “মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় নিদিষ্ট শ্রেণীর পশুগুলোর মধ্য থেকে কোনো পশুকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ ঈদের সালাত আদায়ের পর থেকে ১৩ জিলহজ্ব সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত) আল্লাহর নামে জবাই করাকেই বুঝায়।বস্তুত আল্লাহর রাস্তায় বান্দার সর্বাধিক নৈকট্য এনে দেয়,তাই কোরবানির এই নামে নামকরণ করা হয়েছে।
কোরবানির গুরুত্বঃ
ইসলামে মুমিন বান্দার জীবনে কোরবানির গুরুত্ব অপরিসীম ও সীমাহীন। কারণ মুমিনের জীবনের একমাত্র আরাধনা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।আর কোরবানি তাকে অত্যন্ত দ্রুত স্থানে পৌঁছে দেয়।খালিলুল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ)ও তার পুত্র হজরত ঈসমাইল (আ) এর আত্মত্যাগের বলিষ্ঠ পরাকাষ্ঠা স্থাপন করেই মহান মওলার নৈকট্য লাভের সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছাতে পেরেছিলেন।হজরত ইব্রাহিম (আ) ছিলেন নিঃসন্তান। খোদাদ্রোহী শক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামরত, জীবন সায়াহ্নে উপনীত। বয়সের আশি পেরিয়ে যাওয়া হজরত ইব্রাহিম (আ) আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনের পতাকাবাহী একজন যোগ্য উত্তরসূরি রেখে যাওয়ার বিশেষ আকুতি জানিয়ে মহান রবের নিকট দীর্ঘদিনের কাকুতি মিনতির পরে লাভ করেছিলেন একজন পবিত্র পুত্র সন্তান হজরত ঈসমাইল (আ) কে।
এর মধ্যে মহান রবের খেলা
জীবনের পড়ন্ত বিকেলে জাগতিক নির্ভরতার একমাত্র সহায় সম্বল পুত্র হজরত ঈসমাইল কে আল্লাহর  নামে কোরবানি করেন হজরত ইব্রাহিম (আ)এবং তার মহিমায় আল্লাহর মহান ইচ্ছা পূরণের নিজেকে তীক্ষ্ণ তরবারি সঁপে দিয়ে হজরত ঈসমাইল (আ.) আত্মত্যাগ এর যে মহান দুনিয়ার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, সেই মহান স্মৃতির পুনরাবৃত্তিতেই ইসলামের কোরবানির বিধানকে সীমাহীন গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় “ভোগে নয় ত্যাগেই আত্মার পরিপূর্ণতা।
পবিত্র কোরআন পাকে ইব্রাহিম (আ)এর কথা স্পষ্ট বিবৃত হয়েছে এভাবে – অতঃপর সে (ঈসমাইল)যখন পিতার সাথে চলাফেরার বয়সে উপনীত হলো,তখনই ইব্রাহিম তাকে বললো : হে বৎস! আমি স্বপ্নে অবলোকন করেছি যে,আমি আমার আদরের সন্তান কে জবাই করতেছি মানে তোমাকে জবাই করে দিচ্ছি,এখন আমায় বলো তোমার অভিমত সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে।
তখন হজরত ঈসমাইল (আ) উচ্চ কণ্ঠে পিতার উদ্দেশ্য বলতে লাগলো হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি ঠিক তাই করুন।যদি আল্লাহ চাই আপনি আমাকে যথেষ্ট সবরকারী হিসেবে পাবেন।যখন পিতা এবং পুত্র যখন আনুগত্য প্রকাশ করলো এবং ইব্রাহিম তার সন্তান কে জবাই করার জন্য শায়িত করালেন।তখন আমি তাকে  ডেকে বললাম,হে ইব্রাহিম! তুমি তো তোমার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিনত করে দেখালে!আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকি।
(সুরা আস সাফফাতঃ১০২-১০৫)
কোরবানির বিশেষ ফজিলতঃ
আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা আল্লাহর নামে পশু উৎসর্গঃ করে তাদের জন্য সীমাহীন নেকির ওয়াদা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাঃ। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানি জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানি দাতাকে একটি করে নেকি দান করা হবে।কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা মহান রাব্বুল আলামিন এর দরবারে কবুল হয়ে যায়। (মেশকাত) কোরবানির বিনিময়ে সাওয়াব পেতে হলে অবশ্যই কোরবানিটা হতে হবে একমাত্র মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,কোরবানির জন্তুর রক্ত-মাংস কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে পৌঁছায় না।তার কাছে পৌঁছায় শুধু মাত্র তোমাদের অন্তরের তাকওয়াপূর্ণ ইবাদত তথা মনের তাকওয়া।( সুরা আল-হাজ্ব:৩৭)
আসুন আমরা কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি প্রতিবেশীদের হক্বের প্রতি সজাগ থাকি
যাতে করে
 কোরবানির মাংস সুনির্দিষ্ট বণ্টনের মাধ্যমে অনাথ গরীব মিসকিনদের প্রাপ্যতা বুঝিয়ে দিই
মহান রাব্বুল আলামিন এই বিষয়ে কঠিন বার্তা দিয়েছেন তাই একজন তাকওয়াপূর্ণ মুমিন সবার আগে আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের হক্বের প্রতি অত্যন্ত সজাগ থাকবেন এবং তাদের প্রতি সুনজর দিবেন।
সর্বোপরি মুমিন জীবনে কোরবানি একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত এবং সীমাহীন সাওয়াবের মাধ্যমও বলা যায়।
তাই বলা যায় ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে মুমিন তার রবের নৈকট্য অর্জন করা অত্যন্ত সহজ কাজ।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তার নিকট প্রত্যাবর্তন হওয়ার সুযোগ করে দিক আমিন ইয়া রাব্বুল আলামিন।
পরিশেষে সকলের প্রতি
অনুরোধ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদ উৎযাপন করুন,
 সকলের প্রতি পবিত্র ঈদুল আজহার প্রীতি শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক ও সালাম জানিয়ে আমার সংক্ষিপ্ত লেখা এখানেই পরিসমাপ্তি করলাম।
তাহসিন মোহাম্মদ ঈসমাইল
ছাত্র, কক্সবাজার হাশেমীয়া কামিল মাস্টার্স মাদ্রাসা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
কক্সবাজার সরকারি কলেজ।
173 Views

আরও পড়ুন

ঝিনাইগাতীতে কূপ খনন করতে গিয়ে নিহত দুইজনের পরিবারের পাশে বিএনপি

ঠাকুরগাঁওয়ে ব্রাইট স্টার মডেল স্কুল এন্ড কলেজের বর্ষবরণ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

জুরীতে ২৫ নারী উদ্যোক্তাদের গবাদি পশু ও তাঁত শিল্প সামগ্রী বিতরণ

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শেরপুরের দুই ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

চট্টগ্রাম পিটিআইয়ের প্রশিক্ষণার্থীদের স্কাউটসের ওরিয়েন্টেশন কোর্স

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সহায়তায় জবি ছাত্রদলের হেল্প ডেস্ক

আজ বিশ্ব লিভার দিবস: জেনে নিন লিভার সম্পর্কে

নালিতাবাড়ীতে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

কাপাসিয়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় সহায়তা করলেন জামায়াত নেতা আইউবী

মহেশখালী নৌঘাটে সী ট্রাক চালু ও পল্টুন স্হাপনকে স্বাগতম- ড. হামিদুর রহমান আযাদ

গরমে যেসব অসুখ বেশি হতে পারে

জামালপুরে তিন হাজার পাঁচশত পিস ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক