ঢাকাসোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

‘মাহে রমাদান ক্বলব বা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মাস’–আশফা খানম

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২ এপ্রিল ২০২২, ১:১৬ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

পবিত্র মাহে রমাদান সকল মুসলমানদের জন্য সৌভাগ্যের বার্তা নিয়ে আসে। এখানে রমাদানের কোন তাত্ত্বিক এবং শাব্দিক অর্থ পর্যালোচনা এবং এর নিয়মকানুন সর্ম্পকে বলবো না। আমি এখানে পবিত্র রমাদানে আমাদের করণীয় অনেকগুলো কাজের মধ্যে শুধু একটি নেক কাজ করার উপর আলোচনা করবো। এর পূর্বে এই কাজ রমজানেই কেন করবো তা, নিয়ে বলতে চাই। পবিত্র মাহে রমাদান এমন একটি মাস সারা বছরে অন্যান্য মাস হতে অপেক্ষাকৃত যে মাসে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পথে চলার চেষ্টা করি।

এ সময় মুসলমানরা যার যার সামর্থ্য অনুসারে দান, সাদাকা করেন, গরীব আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নিয়ে তাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এছাড়াও আমরা বিবিধ ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। আমরা একটু চিন্তা করলে দেখতে পাবো রমজান মাসে রোজা রাখার সাথে সাথে আমরা নিজের অজান্তে এক ধরণের সবর বা ধৈর্য্যরে প্রশিক্ষণের ভিতরে চলে যাই। তাই তো রমজান মাস চলে যাবার পরও আরো কিছুদিন আমরা এর প্রভাব নিজের মধ্যে যেমন:- শান্তির মনোভাব, অন্যের প্রতি দয়া, ভালোবাসা ইত্যাদি অনুভব করি। হযরত রাসুলে আকরাম মুহাম্মদ(সাঃ) বলেছেন- ‘রোজা হচ্ছে ধৈর্য্যরে বা সবরের অর্ধেক’। রমজান মাসে ২৯ বা ৩০ দিন রোজায় আমরা তিন প্রকারের ধৈর্য্য বা সবরের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাই। প্রথম প্রকারের সবর হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ মান্য করার সবর। যেমন:- সূযোর্দয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার ভোগবিলাস পরিহার করে কিছু না খেয়ে থাকার সবর করি। সাথে সাথে পাঁচওয়াক্ত নামাজের সাথে অতিরিক্ত তারাবীহ্ আদায় এবং যাকাত প্রদানের মাধ্যমেও আমরা মহান আল্লাহর নির্দেশ মান্য করে সবর প্রদর্শন করি।

দ্বিতীয়ত, রমজানে আল্লাহ কর্র্তৃক নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে বিরত থেকে সবর বা ধৈর্য্যরে পরিচয় দিই। যেমন:- যারা ধূমপান করেন রমজান মাসে রোজা রাখতে গিয়ে তা, পরিহার করেন। এছাড়া যে কাজগুলো গুনাহের সূত্রপাত্র ঘটায় যেমন: ঝগড়া করা, গীবত করা,অন্যকে ছোট করে কথা বলা, মিথ্যা বলা,অন্যের দোষ অন্বেষণ করা প্রভৃতি দোষগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে ধৈর্য্যরে পরিচয় দিই।
তৃতীয়ত, যখন আমাদের জীবনে কোন প্রকৃতিক দূর্যোগের ঘটনা ঘটে যেমন:- করোনা মহামারীতে গত দু’বছর সারা বিশে^র মানুষ তাদের সম্পদ, আত্মীয় পরিজন হারিয়েও বুকে পাথর বেঁধে রমজান মাসে ঠিকই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ধর্মীয় রোজা পালন করছেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে যার যতই সম্পদের ক্ষতিসাধিত হোক কিংবা দূর্ঘটনা(বিপদ) বা নিকটজনের বিয়োগ প্রভৃতি আমাদের জীবনে যতই দুর্যোগ আসুক না কেন বরং তা পালন করে ধৈর্য্য ধরি বা সবর করি ।

এছাড়াও রোজা রাখার কারণে অনেকের শারীরিক নানারকম জটিলতা দেখা দেয় যেমন:-মাথা ব্যাথা,ঘুম কম হওয়া,অনিদ্রার কারণে শারীরিক জটিলতা প্রভৃতি নানা উপসর্গ দেখা দিলেও রমজান মাসে আমরা তারপরও রোজা রেখে সবর বা ধৈর্য্য দেখাই। আর এই কাজ আমরা করি শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তাই তো আল্লাহ সুবহানতালা বলেছেন- ‘আমি স¦য়ং রোযাদারদের রোজা রাখার পুরস্কার দেব’। আমরা রাসূল(সাঃ) থেকে জানতে পারি, “রোজাদারগণ রাইয়ান” নামক সম্মানিত ও মর্যাদার দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আমরা কি একবার চিন্তা করে দেখি, মহান আল্লাহ কি রকম Generous আমাদের প্রতি। যেহেতু মহান আল্লাহর শাস্তির বা Power এর কোন Numerical বা সংখ্যাগত সীমা নাই, ঠিক তেমন মহান আল্লাহ্ ও তার সন্তুষ্টির জন্য রোজাদারের ঐ সকল সবরের এমন পুরস্কার দেবেন যা সংখ্যা দ্বারা সীমিত নয়।

প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্র বদান্যতা, আনুগ্রহ ও দয়াশীলতাকে কোন সংখ্যা দিয়ে সীমাবদ্ধ করা যায় না, তা সীমাহীন। শুধু তাই নয়, একজন রোজাদার যখন শেষ বিচারের দিন আল্লাহ্র কাছে হিসাব দিতে গিয়ে দেখবেন তার সারাজীবনের সঞ্চয় করা নামাজ, রোজা, হজ¦, যাকাত, কুরআন পড়া, নিরবতা পালন এবং অন্যান্য ভালো কাজগুলোর নেকী দুনিয়ার কাউকে মনে কষ্ট দেবার কারণে, কারো সম্পর্কে খারাপ কথা বলার কারনে, মিথ্যা বলার কারনে কিংবা গীবত বা চোগলখুরী বা ছিদ্রান্বেষী করার কারণে, অন্যের ব্যাপারে Judgmental হবার কারনে, কাউকে গালি দেবার কারণে, কারো সাথে দূর্ব্যবহার করার কারণে প্রভৃতি খারাপ কাজগুলোর কারণে সঞ্চিত নেকীগুলো অন্যকে দিয়ে ফেলে নিঃস্ব হয়ে যেতে হবে। তখন জান্নাতে যাবার জন্য আর কোন নেকীই অবশিষ্ট থাকবে না, তখন শুধু রমজান মাসের রোজার উছিলায় আল্লাহ্ গাফুরুর রাহীম আমাদের সব গুনাহ্ মাফ করে দেবেন। কারণ অন্যান্য ভালো কাজগুলোর পুরষ্কার বা নেকী অন্যকে দিয়ে গুনাহ্র বোঝা হালকা করা যাবে কিন্তু রোযাদারের পুরস্কার শুধুমাত্র আল্লাহ্ দিবেন কারণ এই রোযার মাধ্যমে শারীরিক যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে যেতে হয়, যে প্রকারের সবর করে আমরা রোজা রাখি তা শুধু আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যই করি। তাই মহান আল্লাহ স্বয়ং এর সন্তুষ্টির জন্যই করি। তাই মহান আল্লাহ্ স্বয়ং এর পুরস্কার দিবেন। এই পুরস্কার নিজের অন্যান্য গুনাহের কারনে অন্য কারো ভাগে যাবে না। অতএব রমযান মাসে রোযা রাখার সাথে সাথে আনুষঙ্গিক নিয়মকানুনগুলো পালন করে এই এক মাসব্যাপী ট্রেনিং প্রোগ্রামের ট্রেনিং নেয়া অতীব জরুরী। রোযার মূখ্য উদ্দেশ্যই হলো আমাদের Spiritual maturation বা আত্মিকভাবে পরিশুদ্ধি এবং পরিপূর্ণতা সাধন। আর এটাই একজন মুসলমানকে মুমিন মুসলমানে পরিণত করে। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গঁ-প্রত্যঙ্গঁ সকল প্রকার পাপাচারযুক্ত কর্ম থেকে বিরত রেখে এই আত্মিক উন্নয়ন সাধন সম্ভব। অন্যথায় পানাহার থেকে বিরত থেকে রোযা legally accepted হয়ে গেলেও, রোযার যে উদ্দেশ্য বা মর্ম তা’ কাজের কারনে পরিশুদ্ধ হয় না।

রোযা রাখার সাথে আমাদের প্রথমতঃ যে অঙ্গেঁর লাগাম টেনে ধরা অতীব জরুরী তা হলো জিহবা। শুধু খাদ্য আস্বাদন থেকে বিরত নয়, বরং হালকা মিথ্যা কথা, গীবত, চোগলখুরী, সমালোচনায় অন্যকে কষ্ট দিয়ে কথা বলা, অলস গালগল্প করা, তর্ক, অন্যকে ছোট করা, হাসির বা মজা করার খোরাক বানানো, অপমান করা প্রভৃতি জিহবা দ্বারা সংঘটিত পাপাচারপূর্ণ কর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ব্যতিরেকে কথা না বলা বা কম কথা বলাই শ্রেয় এবং বাকী সময় আল্লাহ্র যিকর বা স্মরণে জিহবাকে সিদ্ধ রাখা বাঞ্চনীয়।

দ্বিতীয়ত, রোযা রাখার সময় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধু না খেয়ে পেটকে উপোষ রেখে তারপর ইফতার ও সেহেরীর সময় ভুঁরিভোজ করে সারাদিনের ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা করা রোযার প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। কেননা স্বল্প আহার এক্ষেত্রে সেহরী বা ইফতারের সময় আমাদের ইবাদতের শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। তাই মাত্রারিক্ত পানাহার পরিহার করে রাসুল (সাঃ) সুন্নত পালন রোযাদারের জন্য উপকারী। এছাড়া খাদ্যসম্ভার আয়োজনে ব্যস্ত থাকায় এক্ষেত্রে পরিবারে তা’ আয়োজনকারীদের ইবাদতে মনোনিবেশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। অথচ তাদেরকেও রমযান মাসে বেশী বেশী ইবাদত করার সুযোগ করে দেবার মধ্যেই অন্য রোযাদারদের রোযার পূর্ণতা সাধিত হয়।

তৃতীয়ত, চোখের রোযা পালন করতে হবে। রোযাদারের চোখকে এ সময় সকল প্রকার দুনিয়ার চাকচিক্য, ভোগসামগ্রী থেকে সংযত করে রোযার ফায়দা হাসিল করতে হবে। শুধু তাই নয়, সবরকম নিষিদ্ধ ও হারাম বিষয় থেকে চোখকে না দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে। সার কথা, সারাক্ষণ আমাদের যতদূর সম্ভব জগতের যাবতীয় পাপ, নিষিদ্ধ ও খারাপ জিনিস থেকে কানকে শোনা থেকে, চোখকে দেখা থেকে, জিহবাকে বলা থেকে এবং অন্যান্য অঙ্গঁ-প্রত্যঙ্গঁকে চিন্তা করা থেকে বিরত রাখতে হবে। তবেই রোযাদারের রোযার পুরস্কার আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অনুসারে সীমাহীনভাবে দেয়া হবে। অতএব এটি আমাদের জন্য জান্নাত হাসিলের একটি চমৎকার সুযোগ যা’ শুধুমাত্র এই এক মাস সাধনা করলে আমরা পেতে পারি। শরীরের বাহ্যিক অঙ্গঁ-প্রত্যঙ্গেঁর নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও আরেকটি যে প্রয়োজনীয় জিনিস আমাদের পরিশুদ্ধ করা দরকার সে ব্যাপারেও আমাদের জানতে হবে এবং চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর এর পরিশুদ্ধতাই আমাদের জীবনের সকল প্রকার অশান্তি, দুশ্চিন্তা এবং মনোকষ্টগুলো দূর করে আত্মিক উন্নয়ন সাধন করে ইহজীবনকে স্বগীর্য় সুখে ভরে দিবে। অতএব স্বর্গীয় সুখে ভরে দেয়া সেই জিনিসটি হচ্ছে আমাদের ক্বলব বা হৃদয় বা আত্মার পরিশুদ্ধি। মানব সন্তান জন্মের পর থেকে একটি দাগবিহীন বিশুদ্ধ হৃদয় বা আত্মা বা ক্বলব নিয়ে জন্মে। জন্মের পর সে হৃদয় থাকে নিষ্পাপ ও পরিষ্কার। কিন্তু সে বড় হবার সাথে সাথে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ছোট-বড় মিথ্যা বলা,অন্যায় করার সাথে সাথে তার ক্বলব বা হৃদয়ে পাপের ধূলো জমতে শুরু করে এবং এক সময় তা কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করে।

অতএব প্রথমে আমাদের জানতে হবে এই ধুলোগুলো কি কি ?
এগুলো হলো রাগ,অন্যের ব্যপারে Judgmental হওয়া, Zealously অন্যকে ছোট ও আঘাত করে কিছু বলা বা করা, প্রতিযোগীতা, গীবত, অহেতুক সমালোচনা, ফজুল বা অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ও গাল-গল্প, দুনিয়ার জীবনের প্রতি মোহ না জেনে অন্যজন সম্পর্কে কু-ধারণা পোষণ করা প্রভৃতি কর্ম যা পাপকাজের পরিচায়ক বহন করে। উল্লিখিত কর্মগুলো আমাদের আত্মা বা হৃদয়কে কলুষিত করে।

তাহলে কলুষিত আত্মাকে আমরা আবার কিভাবে Crystal clear বা পরিশুদ্ধ করবো ? খুবই সহজ, যখন আমরা ব্যাথা পাই প্রথমে আমরা আমাদের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করি অতঃপর এর চারপাশের জায়গা পরিষ্কার করি যেন তা infected না হয়। অতঃপর সেখানে মলম লাগাই যা একে দ্রুত সারিয়ে ফেলে। ঠিক তেমনি আমাদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন স্বচ্ছ মন যখন উল্লিখিত পাপাচারগুলো দ্বারা জখম হয় তখন সাধারণত সেগুলো আত্মা থেকে সরাবার চেষ্টা করতে হবে ঠিক যেমনি আমরা ও অন্যান্য পশুরা যেমনি বেচেঁ থাকবার জন্য খায়, ঘুমোয়, তারা প্রজনন করে এবং জখম স্থলে রক্তাক্ত হয় আমরা মানুষেরাই সেই রকম খাই, ঘুমোয়, প্রজননে সঙ্গম, জখম হলে রক্তাক্ত হই।

কিছু শুধুমাত্র একটি বিষয়ে তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য হচ্ছে- তাদের আত্মিক উন্নয়ন সাধনের ক্ষমতা নাই কিন্তু আমরা আমাদের আত্মার উন্নয়ন সাধন করে সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাতে পরিণত হতে পারি। নচেৎ পশু শ্রেনীর মতো Physical function ও মারামারি, হানাহানি, কড়াকাড়ি করে আমরা তাদের দলভূক্ত হয়ে যাবো। আমাদের অপরিষ্কার ডিশ ততক্ষণ ঘষে পরিষ্কার করি যতক্ষণ তা পরিষ্কার না হয়। ততক্ষণ আমাদেরকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

এটি একটি সাধনার প্রক্রিয়া যা একদিনে অর্জন সম্ভব নয় এবং রমজান মাস এই সাধনার সবচেয়ে অনুকূল মাস। তাহলে এ প্রক্রিয়ার প্রথমে আমাদের Dirt বা সমস্যাগুলো আমাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। যেমন:- আমি বন্ধুদের সাথে গল্প করতে বসলে অবশেষে তা গীবতে শেষ হয়। অতএব গীবতের বুনাকে সরাতে হলে আমাকে ঐ বন্ধুদের সঙ্গ বা আড্ডা পরিহার করতে হবে। একজন মুমিন মুসলমান কোন খারাপ কথা বা সমালোচনা বা আড্ডা চলতে থাকলে তা থেকে সালাম দিয়ে সরে আসে। এইভাবে আমাদেরকে অন্যের নয় বরং নিজের দোষ-ক্রটি অন্বেষণ করে বের করতে হবে তা একটি কাগজে লেখা যেতে পারে এবং প্রতিদিন ভুলগুলো কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। বারবার একই ভুল হলে নিজেকে কোন কঠিন কাজ যেমন:- বড় রকমের সাদাকা বা তাহাজ্জ্বাদ বা ১২ বা ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়। গীবত হচ্ছে তার জন্য বেশী বেশী দোয়া করা প্রভৃতি কাফফারার ব্যবস্থা করে নিজেকে শাস্তি দেবার ব্যবস্থা করতে হবে যেন ঐ সকল কঠিন ভালো কাজের কারণে ভুলগুলো বারবার না হয়। নিজের ভুলগুলো দুর করার জন্য বেশী বেশী আল্লাহ্র সুবহানতালার সাহায্য চাইতে হবে। বেশী বেশী আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ও মুমিন মুুমিনাদের জানবার চেষ্টা করতে হবে।

আমরা আল্লাহ্ ও তাদেরকে যত বেশী চিনবো, জানবো, এতে আমাদের Short comings বা lackings গুলো সম্পর্কে জানবো। অতএব প্রথম পর্যায়ে আমাদের দোষগুলো চিহ্নিত করার পর স্বিতীয় পর্যায়ের কাজটি হচ্ছে জিহাদের কাজ। নিজেকে ঠিক করার জন্য,আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবার নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ করতে হবে। যদিও এ কাজটি কঠিন মনে হচ্ছে কিন্তু মাত্র চারটি কর্ম বা কাজ এবং একটি বেশী কাজ করে আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। আবদুল কাইয্যুম (রহ:) এ যুদ্ধে জয়ী হবার কৌশল খুব সুন্দভাবে শিখিয়ে দিয়েছেন।

চারটি কর্ম বা কাজ হচ্ছে:-
১। কম কথা বলা
২। কম ঘুমানো
৩। কম খাবার খাওয়া এবং
৪। মানুষের সাথে কম Interaction করা ।

আর বেশী করতে হবে যে কাজটি তা হচ্ছে বেশী বেশী আল্লাহকে স্মরণ করা। রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন আল্লাহর স¥রণ বা যিকির আমাদের হৃদয় বা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার অন্যতম উপায়। অতএব জখমকৃত আত্মার ময়লা পরিষ্কার করে তাতে আল্লাহর যিকরের মলম লাগাতে হবে যেন জখমকৃত রোজাক্রান্ত আত্ম্া দ্রুত সেরে উঠে আর আল্লাহ্র স¥রণ বৃদ্ধি করার কৌশলগুলো নি¤œরূপ ;-

১। কুরআন বুঝে সহীভাবে পড়া,মুখস্ত করার চেষ্টা করা।
২। নিজের দোষ বা ভুলগুলোর জন্য বেশী বেশী আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করা ।
৩। সকালে সন্ধ্যায় বা পারলে প্রতি ফরজ নামাজের পর সুবহানল্লাহ,আলহা মদুলিন্নাহ, আল্লাহু আকবর লাইলাহা ইল্লালাহু ওয়াহ পড়া।
৪। সকলের হক আমার করার সাথে সাথে বেশী বেশী দান সাদাকাহ্্ করা।
৫। বেশী বেশী ভালোকাজ করা, সুযোগ পেলেই অন্যেই উপকার করা ।
৬। আল্লাহর সৃষ্ট পৃথিবী, প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে তার জন্য শুকরিয়া জানানো এবং তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা।
৭। আমাদের প্রতি আল্লাহর অসীম দয়া ও অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা বা শোকর আদায় করা। কি পায়নি তা ভাববো না। কি পেয়েছি তাই শুধু ভাববো কি পায়নি এই চিন্তা পরিহার কবার জন্য আমরা আমাদের চেয়ে যারা খারাপ অবস্থায় আছে তাদের কথা চিন্তা করবো এবং আল্লাহর কাছে খারাপ অবস্থা থেকে পানাহ্ চেয়ে তার উপকারের চেষ্টা করবো।
৮। সব সময় ভালো কাজে পজিটিভ থাকবো। সব কিছু ও সবার সম্পর্কে সুধারণা খারাপ অবস্থা থেকে পানাহ চেয়ে তার উপকারের চেষ্টা করবো। এটি একটি প্রক্রিয়া যা রাতারাতি সম্ভব নয়। তাই আসুন এই রমজানে আমরা নিজেকে বদলাই। আমরা আল্লাহর সেই সেরা জীব আশরাফুল মাখুফাত হবার জন্য আমাদের Crystal clear করার জন্য আজ থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করি। অন্যের নয় নিজের দোষ খুজে বেড়ায় আমাদের সৃষ্টির্কতাকে জানার ও জানার চেষ্টা করি। তা না হলে আমাদের এই আত্মা আরো বেশী আমরা নিজেরাই রোগাগ্রস্ত হব এবং আমাদের আত্মার উপর জুলুম করবো এতে অন্যের ক্ষতি হবে না বরং নিজের ইহকাল ও পরকালের সাগরে নিমজ্জিত হবো। আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করুন এবং সকলের চেষ্টা কবুল করুন।
আমিন ।

লেখকঃ নারী উন্নয়নকর্মী, কলামিষ্ট ও প্রিন্সিপ্যাল সিভিএনএস ।

162 Views

আরও পড়ুন

পাঠকের অনূভুতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

বোয়ালখালীর নব যোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশীদকে বরণ

জামালপুরে মৃত আইনজীবী হলেন অতিরিক্ত জিপি

তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা, সাইনবোর্ড শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

সাইফুল ইসলামের কবিতা : শীতের আমেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ