ঢাকারবিবার , ১২ মে ২০২৪
  1. সর্বশেষ

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার পিঠা

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১৯ জানুয়ারি ২০২১, ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

আবু নাসের ইরফান :

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। বছরের এক এক সময়ে প্রতিটি ঋতুতে ভিন্ন এক রুপ ধারণ করে এদেশ। কালের পরিক্রমায় প্রতি বছর হাজির হয় শীতকাল। সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের প্রকৃতিক উপাদান নিয়ে হাজির হয় এই ঋতু। কিন্তু আজ হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার চিরচেনা অনেক রুপ ।

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা। একসময় পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় ছোট- বড় সকলেই পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠত।

কিন্তু এখন তা আর চোখে পড়েনা। কর্মচাঞ্চল্য এই ব্যস্তময় জীবনের গর্ভে তা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। পিঠা বাঙালির প্রিয় খাবার। এ দেশে এমন মানুষ কমই আছে, যারা পিঠা পছন্দ করে না। পিঠা নিত্যদিনের খাবার না হলেও শীতকালে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পিঠার ব্যাপক কদর ছিল ।

আগে শীতের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের ঘরে ঘরে পৌষ পার্বনের রকমারী পিঠার আয়োজন করা হত। দাদী-নানী, মা, খালারা পরম মমতায় তৈরি করতো বিভিন্ন ধরনের রসালো পিঠা। বাহারি রকমের পিঠা বানানোর ব্যস্ততায় আত্মহারা হত সর্বস্তরের মানুষ।

বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে হেমন্ত ঋতুর শুরু থেকেই পিঠা তৈরি শুরু হয়। তখন দেশজুড়ে ধানকাটা শুরু হয়। কৃষকের ঘরে ঘরে থাকে গোলাভরা ধান। নতুন সে ধানের আতব চালে তৈরি হয় পিঠা। এ সময় গ্রামে সন্ধ্যা হলেই চাল কোটার শব্দে মুখরিত হয় চারদিক। রাতভর চলে পিঠা তৈরির কাজ। অনেকে আবার পিঠা তৈরির সময় গীত গেয়ে রাত পার করে। পিঠার অন্যতম উপাদান চালের গুঁড়ো হলেও এর সঙ্গে লাগে গুড়, ক্ষীরসহ নানা উপকরণ। এ উপকরণের সঙ্গে শীতের একটা যোগসূত্র আছে। তাই হেমন্ত থেকে শীতকাল পর্যন্ত পিঠা তৈরির ধুম পড়ে।

বাংলাদেশে কত রকম পিঠা হয় তা বলে শেষ করা যাবে না। তবে জনপ্রিয় পিঠার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিতই, পাটিসাপটা, লরি পিঠা, ভাপা, আন্দশা, কুশলী, পাতা পিঠা, কাটা পিঠা, ছিট পিঠা, চুটকি পিঠা, মুঠি পিঠা, মেরা পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, নকশি পিঠা, পুলি পিঠা, জামাই পিঠা, ঝুরি পিঠা ও বিবিয়ানা পিঠা। এসব পিঠার সঙ্গে মিষ্টি বা ঝাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় নতুন পিঠা। যেমন চিতই পিঠার সঙ্গে দুধ-গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় দুধচিতই। চিতই পিঠার সঙ্গে কাঁচামরিচ ও ধনিয়া পাতা দিয়ে ঝাল পিঠাও হরেক রকমের পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গৃহিণীরা।

খেজুরের রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েস গ্রাম-বাংলার মানুষের নবান্নের সেরা উপহার। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হতো পাটালিগুঁড়, মিঠাইসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার। সময়ের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী শীতের পিঠা।

প্রতি বাড়িতে সকাল বেলা খেজুরের রসে ভেজানো পিঠা খাওয়ার ধুম পরতো। নিজের বাড়ির সদস্য ছাড়াও জামাই-ঝি, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী সবাই মিলে এক আসরে বসে চলতো পিঠা খাওয়ার উৎসব ।

কিন্তু কালের বিবর্তনে ও কর্মচাঞ্চল্যের কারণে এ এলাকার মানুষ এখন বাড়িতে পিঠা তৈরির সেই উৎসবমুখর আমেজ হারিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে অনেক।

ছেলে মেয়েরা আনন্দের সঙ্গে পিঠা খেয়ে স্কুলে চলে যেত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে পিঠা তৈরি হয় না। আগের সেই পিঠা বানানোর আমেজ হারিয়ে গেছে অনেকদিন আগে।

এখন সবাই পিঠা বাজার থেকে কিনে এনে খায়। এতে কোনো আনন্দ- উৎসাহ থাকে না।

গ্রামের গৃহিণীদের মধ্যে আগের মত পিঠা বানাননোর উৎসব নেই। হরেক রকমের পিঠ আমাদের নতুন প্রজন্ম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই পিঠা বানানোটা এখন স্মৃতি হয়ে গেছে।

লেখক : মাস্টার্স শিক্ষার্থী,চট্টগ্রাম কলেজ

70 Views

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে এসে তোপের মুখে আরডিএ চেয়ারম্যান।

সফল অভিযান
আদালতের নির্দেশনায় জব্দকৃত বালু বিলিয়ে দিলেন বারবাকিয়া রেঞ্জ

মাধবী পালের কবিতা “ভালোবাসি প্রকৃতি”

প্রথম ধাপে শেরপুরের দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা

শিক্ষকদের সাথে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ’ অফিস সহকারীর, প্রশ্রয়ের অভিযোগ সাবেক বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে

বুটেক্সের প্রথম দিনের ভর্তি শেষে ৬০ শতাংশ আসন ফাঁকা

চট্টগ্রামে বিমান বিধ্বস্ত : নিহত এক পাইলট

চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমান: আশংকাজনক অবস্থায় দুই পাইলট

জেলা আ.লীগের সভাপতিকে হারিয়ে সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন এমপি পুত্র

নওগাঁর পত্নীতলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গাফফার জয়ী

বিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পারভেজ কবীরের জয়

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব উদযাপন বৃহস্পতিবার