– কাজী আশফিক রাসেল
আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে,
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে;
কেমন তোমার অনুভূতি?
আমি বলবো, বাতাসে কান পেতে,
আমার দুঃখিনী ভুমিমাতার,
নিশ্বাসের শব্দ শোনো।
নিথর দেহে, হতাশায় আর দুঃখ বেদনায়;
তাঁর চোখ ছলছল করে।
বারবার মোচড়ে ওঠে, তাঁর বুক।
আর লম্বা লম্বা দীর্ঘশ্বাস!
একাত্তরের রণাঙ্গনে যখন তার সন্তানদের রক্তে
রঞ্জিত হয়েছিলো, তাঁর নিজেরই বুকের সবুজ দূর্বাঘাস।
সম্ভ্রম হারানো কন্যার গগনবিদারী আত্মচিৎকারে,
যখন ব্যথিত হয়েছিলো আশপাশ।
বিশ্বাস করো, সেদিন এতটুকুও কাঁদে নি আমার মা!
আশায় বুক বেঁধে, স্বাধীন সার্বভৌম
একটি ভূখন্ডের স্বপ্নে বিভোর হয়ে,
নিজের অনাগত সন্তানদের সজীব সুন্দর সরস আলোকিত জীবনের কথা ভেবে,
বুকেতে পাথর বেঁধেছিল আমার মা।
অথচ আজ, গুড়ে বালি!
বুকভরা অতৃপ্ত হাহাকার!
প্রচ্ছন্ন গোঁড়ামি আর অপরাজনীতির বেড়াজালে,
শোষণ-বঞ্চনা-নিপীড়ন-নির্যাতনের নিত্যনতুন সংস্করণে; কুৎসিত শাসক-শোষকের অবৈধ অশ্লীল উন্মদনায়; উন্মুক্ত গোপন পরাধীনতার শেকলে জব্দ মুক্তিকামী মানুষের আর্তস্বর যেনো আজ অশ্রাব্য কথন!
গত পঞ্চাশে বদলেছে বারবার;
শাসকদের শোষণ বঞ্চনার ধরন।
কিন্তু মিলেনি মুক্তি, আসেনি সাম্য।
অধরা আজও, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার।
এইজন্যই তাঁর হৃদয়ে আজ হচ্ছে রক্তক্ষরণ।
যদি আবারও কেউ জিজ্ঞেস করে;
এই সুবর্ণজয়ন্তীতে,
কেমন তোমার অনুভূতি?
আমি বলবো, আমার মা ভালো নেই,
উত্তরটা তুমি বুঝে নিও।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।