ঢাকাশনিবার , ২ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

“বাবা হারানো পরীক্ষার্থীর জীবনী “

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

আরিফ হোসাইন:

জাকারিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের পরিক্ষা দেওয়ার জন্য বাগেরহাট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ভার্সিটিতে আসে। কবি জসীমউদ্দিন হলের ২১২ নাম্বার রুমে উঠে কারণ তার এলাকার এক ভাই ছিল আমাদের সাথে।

তো বিকালে জাকারিয়াকে নিয়ে ক্যাম্পাসে বাহির হলাম। তাকে কলা ভবন,এফবিএস,বটতলা ইত্যাদি দেখাচ্ছি সেও সৌন্দর্য্য অনুভব করছে কিন্তু সেই সৌন্দর্য্য যে বাহ্যিক তার ভিতরটা যেন স্তদ্ধ হয়ে আছে। হঠাৎ জাকারিয়া আমাকে প্রশ্ন করলো ভাই আমি যদি এখানে চান্স পাই মাসে কত টাকা খরচ হবে?? আমিও হুট করে বলে ফেললাম ৩৫০০-৪০০০ এই রকম হবে।।আমার উত্তর শুনে জাকারিয়ার মুখটা মলিন হয়ে গেলো।। তার মুখে তাকালাম কি যেন চিন্তা কাজ করছে তার ভিতরে। আমার মনটা হঠাৎ নড়া দিয়ে উঠলো, একটা ছেলে এখনো ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয় নাই চান্স পাবে কি পাবে না তার চিন্তা না করে মাসে কত খরচ হবে সেটার চিন্তা করে।
আমার মনে জাকারিয়ার সম্পর্কে জানার ইচ্ছা জাগলো । বললাম জাকারিয়া তোমার পরিবারের কি অবস্থা?? বললো ভাই পরিবার পুরোটা আমার ঘাড়ে।
মানে? পরিবারে কে কে আছে? বললো দুই -ভাই এক বোন মা, দাদি আর আমি।। তোমার বাবা?? বাবা নেই!
মারা গেছে? হ্যাঁ, কখন? কিভাবে? এইবার জাকারিয়া শুরু করলো তার জীবনের সোনালি এবং করুন কাহিনী। ভাই আমারা একসময় খুব স্বচ্ছল ছিলাম টাকা পয়সার অভাব ছিল না কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর সব লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। আমি খুব ভালো ছাত্র ছিলাম ছোটবেলা থেকে। ৫ম এবং ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি পাইছি।কিন্তু যেই মাত্র ৯ম শ্রেণীতে উঠলাম ঠিক সেই সময় বাবা মারা গেল! সব কিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। সংসারের পুরো ভারটা আমার ঘাড়ে এসে পড়লো কারণ পরিবারের একমাত্র অবলম্বন শুধু আমি। ভাই- বোনের মুখে দুবেলা ভাত তুলে দেওয়ার জন্য কিছু ভেবে না পেয়ে বাজারের মুদি দোকানে একটা ছোট্ট চাকরি নিলাম। দিনে ১০০/১৫০ পাই তা দিয়ে রাতে চাল ডাল নিয়ে বাড়িতে যাই। দুবেলা কোনো রকম খেয়ে বাঁচে পরিবারের সবাই। আমার মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল আমি পড়াশোনা করবো আমি অনেক বড় হবো আমারও সেই ইচ্ছা ছিল ।। তাই অনেক কষ্ট করে গ্রামের একটা কলেজে ভর্তি হয়েছি পরিক্ষা দিয়েছি কিন্তু রেজাল্টটা ভালো হয় নাই। কারণ সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টা পযন্ত মুদি দোকানে কাজ করে আর পড়তে ইচ্ছে করে না।। ভাই আমার জীবনটা খুব কষ্টের!!

জাকারিয়া কথা শুনে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম এবং প্রথাগত সেই বড় ভাইয়ের ন্যায় আমি বললাম ধুর মিয়া এগুলা কোনো ব্যাপার? তুমি অনেক ভালো আছো এগুলা বাদ দাও ভার্সিটিতে চান্স পাও দেখবে সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

হ্যাঁ,, দেশে জাকারিয়া মতো হাজারো ছেলে আছে যাদের উচ্চ ইচ্ছা থাকার পরেও কোনো এক ঝড়ে সব শেষ হয়ে যায়,, টাকার জন্য ভার্সিটিতে পরীক্ষাও দেয় না। যা জাকারিয়া এই সমাজের জ্বলন্ত প্রমাণ

আমরা সবাই জাকারিয়া জন্য দোয়া করি যাতে জাকারিয়া তার লালিত স্বপ্ন পূরণ করে তার মায়ের মুখের হাসি ফোটাতে পারে।

121 Views

আরও পড়ুন

কবিতা: সুগন্ধ নয় গন্ধ

আত্মগোপনে থাকা গাজীপুরের যুবলীগ নেতা কক্সবাজারে ছাত্র প্রতিনিধিদের হাতে আটক

ইসলামপুরে জেসমিন প্রকল্পের কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটরদের বেসিক ওরিয়েন্টেশন 

রাজশাহীতে ডা. কাজেম হত্যায় রাষ্ট্র্রযন্ত্র জড়িত থাকার অভিযোগ

জবিতে আয়োজিত হবে সিনেমাটোগ্রাফি মাষ্টারক্লাস

শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জামালপুরে স্ত্রী হত্যা মামলা স্বামীর মৃত্যুদন্ড

ইউসেফ বাংলাদেশ এর সাথে চট্টলা ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাব ও সিটিজি হেলথকেয়ার প্রফেশনালস এর কোলাবরেশন মিটিং অনুষ্ঠিত

চকরিয়া পৌর মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের গণশুনানী অনুষ্ঠিত

সানজিদা ইসলামের কবিতা ‘৫ আগস্ট’

রাণীনগরে থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বাদীসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত

ইসলামপুরে ডাসকো ফাউন্ডেশনের অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত