আফরোজা মেহজাবিন ঐশী:
খুব ইচ্ছেছিলো ছোটোবেলা থেকেই যে, মিডিয়াতে কাজ করব। শুধু আমার একার নয়,অনেক মেয়েরই স্বপ্ন থাকে কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হয়না।
যার কাছেই যাবেন বলবে আগে দেহ দাও তারপর কাজ দিবো। এসব শুনলে সরে আসতেই হয়। মনে হয় এ যেনো এক আলোকিত ধারার অন্ধকার জগত। যা হোক এ তো গেলো কাল্পনিক জগত যেখানে বিচরণ করার সৌভাগ্য হয়না সহজে। বাস্তব জীবনে আমরা মেয়েরা তার চেয়ে কম শুনে আসছি কি?
এইতো সেদিন রিক্সাওয়ালা টাকা নিতে গিয়ে হাত ধরে বসলো। ইতঃস্তত হয়ে সরিয়ে নিলাম। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাই। পেছন থেকে কেউ বলে
”যাইতাছে মাল”। অথচ বলা উচিত ছিলো, ”যাচ্ছে কারো মা”। শপিং মলে ভীড়ের মাঝে কনুই দিয়ে ঘষা দেয়ার চেষ্টা ঠিকই করবে, আবার একদল আত্মীয়তার নামে কোনায় যেতে বলবে। কেউ ভালোবাসার অভিনয় করে সর্বস্ব নিতে চাইবে তো কেউ আবার শিক্ষক হয়েও ছাত্রীর শরীর গুরুদক্ষিণা চাইবে। কেউবা ছোটো পোশাকে দেখলে বাপ মা তুলে গাল দেবে। আবার দুধের শিশু কিংবা বোরকাওয়ালি কেও রেপ করবে। বুক থেকে ওড়না সরতেই এদের নজর সোজা পরবে। এখনকার যুগে স্বতন্ত্র চলা বেজায় মুশকিল।
এসব ঘটনা গুলো দিনের বেলাতেই হচ্ছে তাহলে ভাবুন রাতের অন্ধকারে কেমনটা হবে? আমাদের আবার মাগরিবের আযানের আগে বাসায় ফিরতে হয় কারণ রাতটা শকুনের আওতায়। বাবা যে ভয় পায়, মেয়ে মানুষ বিয়ে করে পরের বাড়ি যাবে,কোনো কান্ড হলে সমাজে কি করে মুখ দেখাবে?? কে বিয়ে করবে?? ছিঃ ছিঃ করবেনা লোকে? তাই বারবার মা বলে দেয় রাত্তিরে বের না হবার কথা। অথচ কতিপয় মানুষের জন্য কি আমরা ঝিঁঝিঁ পোকার আলো দেখবনা? রাতের আধারে মিশতে যাবোনা?
রাতে বের হলেও কোনো পুরুষকে নিয়ে বের হতে হয় যাতে অন্য পুরুষ তোমার জীবনকে কলঙ্কিত করতে না পারে। পাপ করবে কতিপয় পুরুষ কলঙ্কিত হবে নারী? এ তো চোরের উপর বাটপারি।
এক পুরুষের এর হানা থেকে বাঁচতে আমাদের আরেক পুরুষের প্রয়োজন হয়। সমাজটাই পুরুষতান্ত্রিক। তবুও কি আপনি বলবেন নারী পুরুষের সমতা বিদ্যমান আজও?
লেখক,শিক্ষার্থী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়