বাংলাদেশের কৃষি প্রধান দেশ। কৃষকই দেশের মেরুদণ্ড বলে বিবেচিত। প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত সেই কৃষক সকল ক্ষেত্রেই নির্যাতিত নিপীড়িত এবং বঞিত। কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে চাই দালাল মুক্ত নিরাপদ ক্রয়-বিক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থা।
কৃষিজ পণ্য যেমন ধান,পাট,পিঁয়াজ,রসূন আদা ইত্যাদি উৎপাদন করে কৃষক যেমন অভাবে তেমনি অভাবেই রয়ে গেছে আর আর তাদের উত্পাদিত পণ্যের দ্বারা দালালরা হচ্ছে অঢেল সম্পদের মালিক। ফসল উত্পাদন মৌসুমে কৃষকের উত্পাদিত পণ্য গ্রামে তেমন কোনো সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে ২-১ মাসের মধ্যেই বিক্রয় করতে হয়। আর এই সুযোগ লুফে নেয় দালাল শ্রেণির কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও স্টোরেজের মালিক।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় মৌসুমে আলু ৮-১০ টাকা, পেঁয়াজ ১৮-২০ টাকা বিক্রয় করে আবার ৩-৪ মাস পরে সেই আলু ৩৫-৪০ টাকা পেঁয়াজ ১০০-২০০ টাকা কেজি দরে কৃষকে ক্রয় করে খেতে হয়।
আবার গৃহপালিত পশু যেমন ছাগল গরু পালনের কথাই বলি, গরু -ছাগলের অন্যতম খাদ্য হল ধানের খড়। সেই খড়ের আটি ১০০টি ১০০ টাকা বা তারও কম মূল্যে বিক্রয় করে ৩-৪ মাস পর বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ১০০টি আটি ১০০০-১২০০ টাকায় ক্রয় করতে হয়। কিন্তু তবু যদি কৃষক সেই গৃহপালিত সাধনার পশুটি ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করতে পারত তবু এই ডাকাতি মেনে নেওয়া যেত।বর্ষার সময় গুরুর খড় ও অন্যান্য খাদ্যের অভাব কৃষক তার পালিত পশু উত্পাদন খরচের কম মূল্যে বিক্রয় করতে বাধ্য হয়। পশু পালনে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা কেবল এক কৃষকই জানে।গরুর জন্য এক বস্তা ঘাস কাটতে এক জন মানুষের প্রায় পুরা দিনটি শেষ হয়ে যায়।আবার বর্ষায় সমস্ত জমির আল ডুবে যাওয়ার কারণে এক কাজ আরো কষ্টকর হয়। এক কৃষকের কাছ থে নেওয়া হিসাব দেখি -১টি গরু পালন করতে হয় ৭মাস থেকে ২.৫ বছর যাতে তার উৎপাদন খরছ হয় প্রায় ৩০০০০-৪৫০০০ টাকা(কৃষকের পরিশ্রম বাদে)।কিন্তু বিক্রয় করার সময় বাজে মুল সমস্যা।যদি গরু দেখাতে দালান আনি বাড়িতে তারা যে দাম বলবে সেইটাই ফিক্সট। কৃষক সেই পশু বাজারে নিয়ে গেলেও দালান সিন্ডিকেটের কারনে তিনি ন্যায্য দাম পাবেনা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে কৃষকে তার পশুটি কম দামে দালালদের দিয়ে আসতে হবে। আবার কেউ বাজারে পশু ক্রয় করতে গেলে তার সাথে উল্টো ঘটনা ঘটে।
যেই পশু কৃষক ৪০০০০ টাকায় বিক্রয় করল ঢাকার কোনো বাজারে তা ৬০০০০-৭০০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশের কৃষক আজ এই ভাবেই বন্দী মধ্যস্থভোগী সেই দালালদের হাতে।
দেশের কৃষককে মুক্তি দিতে সরকার ও কর্তৃকপক্ষকে সোচ্চার হতে হবে। তা হলে কৃষক কৃষি কাজে তাদের উৎসাহ হারাবে। এখনই সময় কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য আদায় করে দিয়ে তাদের কৃষিজ উতপাদন ও পশু পালনে উদ্বুদ্ধ করা।
মোঃ নুরুল হক
শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল।