ঢাকাসোমবার , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

জিয়াউর রহমানের শিক্ষা দর্শন: অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এর প্রাসঙ্গিকতা

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২২ অপরাহ্ণ

Link Copied!

রিয়াদ রহমান :

উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা অনুধাবন করতে পারি যে, শিক্ষা শুধু একটি নিবন্ধ নয় বরং রাষ্ট্র কাঠামো থেকে শুরু করে একটি দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধনে শিক্ষার গুরুত্ব অসীম। স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে একাদশ শতাব্দীর এই যুগে আমরা যে শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত তা জাতি তথা রাষ্ট্র গঠনে কতটা কার্যকরি?

এক্ষেত্রে স্পষ্টতই বলা যায় বাংলাদেশে গত দেঢ় যুগে শিক্ষার নামে যে প্রহসন করা হয়েছে তা কেবল ডিগ্রি প্রাপ্তি ছাড়া মোটেও ফলপ্রসূ নয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করেছে বহু পূর্বেই সেখানে আমাদের বিশাল একটি শিক্ষিত শ্রেণি শিক্ষার নামে কেবল শিক্ষাকে গলাধঃকরণ এবং পরবর্তীতে তা উত্তরপত্রে ওগরানো ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন আনতে পারেননি। এক্ষেত্রে শিক্ষাকে সুন্দর-সুষ্ঠু রূপদান করতে হলে ফিরে আসতে হবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষা চিন্তায়।

 

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে তার জীবদ্দশায় নিরলস প্রচেষ্টা করে গেছেন। তিনি স্বাধীনত্তোর বাংলাদেশে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গঠনে দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন শিক্ষা মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের মূল উপাদান। শিক্ষার ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতাকে চিন্তিত করে বাস্তবমূখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ছিল তার অন্যতম উদ্দেশ্য। মূলত দেশে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধির এবং সার্বিক উন্নয়নে জন অন্তর্ভুক্তির উপর গুরুত্বারোপসহ বৃত্তিমূলক, কারিগরী, কৃষি কাজের সাথে সাথে চিকিৎসা, গবেষণা, বৈজ্ঞানিক আধুনিকায়ন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রাসারণের কথা বলেছিলেন তিনি।

কেননা তিনি বিশ্বাস করতেন বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করে আর যাই হোক একটি দেশ উন্নত হতে পারে না। পরবর্তীতে জাতীয় ঐক্য, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ব্যক্তি ও সামাজিক উন্নয়নের নিশ্চয়তা প্রদান,কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেকারত্ব হ্রাসকরনের ক্ষেত্রেও তিনি অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যেন জনগন জনসম্পদে রুপান্তরিত হতে পারে। তার শিক্ষা চিন্তায় ফুটে উঠেছিল শিক্ষার বিকেন্দ্রীকরণ তথা মানবিক শিক্ষা,গণশিক্ষা কার্যক্রম, ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে নৈতিক শিক্ষা এবং বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রতিফলন যা হবে জনকল্যানমুখী।

এছাড়াও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আরও যে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করেছিলেন সেটি হলো শিক্ষিত জাতি তৈরীর কারিগর তথা শিক্ষকদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে ১৯৮০ সালে শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন চাকরি বিধি এবং জাতীয় বেতন-স্কেলের প্রারম্ভিকের ৫০% দেয়ার ব্যবস্থা করা কেননা তিনি বিশ্বাস করতেন দক্ষ শিক্ষকদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করতে হলে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা বর্তমান সময়ে এসেও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। তাঁর মতে, কেবল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা মানুষকে যন্ত্রে পরিণত করবে তাই তিনি ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষাকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছিলেন। শিক্ষার্থীদের বিশাল একটি অংশ কেবল ধর্মীয় শিক্ষায়ই আবদ্ধ থাকবে সেটা কোন ভাবেই সমীচীন নয় তাই তিনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসতেও অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন যার অন্যতম উদাহরণ কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়।

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস জানতে পারে তাই তিনি আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাসে গুরুত্ব প্রদান করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন “যতদিন না আমরা আমাদের জাতীয় সত্যকে-আমাদের যে একটা জাতীয় ইতিহাস আছে, এ সত্যকে ঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবো ততদিন জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে গৌরব আসবে না।” আমাদের শিক্ষা ও জাতীয় জীবনে বাংলা ভাষার বলিষ্ঠ ব্যবহারেও তিনি ছিলেন যথেষ্ট সচেতন পাশাপাশি অন্যান্য ভাষারও প্রাধান্য দিয়েছিলেন।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষা দর্শন বা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে অজস্র পরিবর্তন আনতে পারি। বেশি বেশি কারিগরি শিক্ষা তথা বাস্তবমুখী শিক্ষায় উৎসাহিত করার মাধ্যমে তথাকথিত গলাধঃকরণ প্রক্রিয়াকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমাদের যুব সমাজ নতুন উদ্যমে কর্মমুখী হয়ে উঠতে পারে যা দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন করবে। এছাড়া দেশের বিরাট একটি জনগোষ্ঠী তথা ২৬ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে যা বেকারত্ব হ্রাস তো করবেই উপরন্তু জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে দারুন ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার সাথে সরাসরি কর্মের সম্পৃক্তার ফলে আমাদের বৃহৎ এই জনগন জনশক্তিতে পরিনত হতে পারবে যা চীন কিংবা ভারতের দিকে তাকালেই আমরা লক্ষ্য করতে পারি।

এছাড়াও সমাজের অবহেলিত একটি জনগোষ্ঠী যারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে উঠেছে তারাও তাদের মধ্যে লুকায়িত বিশেষ প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা (Inclusive Education) অর্জন করতে পারবে এবং সমাজে মাথা উচু করে বাঁচতে পারবে। পাশাপাশি আমাদের আরেকটি অবহেলিত জনগোষ্ঠী হিজড়া সম্প্রদায় তারাও এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে এবং তাদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা পালন করতে পারবে যা একটি সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মানে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে।

আজ ১লা সেপ্টেম্বর, সমৃদ্ধ বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা রাষ্ট্র নায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজকের এই দিনেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তথা বিএনপির মতো একটি আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠনের। দীর্ঘ দেড় যুগের বন্ধাত্ব্য কাটিয়ে দেশ আজ স্বৈরাচারমুক্ত। এখন বাংলার জনগন এমন একটি দেশের স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলেছে যেখানে মানুষের মাঝে থাকবেনা কোন বৈষম্য স্থান পাবে না কোন ভেদাভেদ। সততা,ন্যায়পরায়নতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতেই জনগন তার আপন সৌকর্য প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। ছাত্রদলের সময় এসেছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষার এই দর্শনকে ছড়িয়ে দেওয়া পাহাড় থেকে সমতলে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে। তার শিক্ষা দর্শন হয়ে উঠুক আমাদের আদর্শের সুদৃঢ় প্রত্যয়। আজকের এই মাহেন্দ্রক্ষণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষা চিন্তা প্রস্ফুটিত করুক আমাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে। আসুন আবারও সবাই একসাথে হাতে হাত রেখে দুর্বার গতি নিয়ে আলো ছড়িয়ে দেই।

” মুক্ত মোরা বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসিত প্রাণের টানে,
নতুন স্বপন করবো যাপন শহীদ জিয়ার দর্শনে “

196 Views

আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জে র‌্যাবের অভিযানে মাদকসহ ১১ কারবারি আটক

রাঙামাটির লংগদুতে হ্রদ থেকে নিখোঁজ বোট চালকের লাশ উদ্ধার

জামালপুরে ছেলের আঘাতে বাবা নিহত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পিছনে ২০ কোটি মানুষের সমর্থন রয়েছেঃ জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মাঠ পরিবর্তন দেখে দল পরিবর্তন করলো আওয়ামীলীগ নেতা।

সাংবাদিক কাশেমকে শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভ্যর্থনা

ঈদ-ই মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে শান্তিগঞ্জে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল

সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন : সভাপতি- লুৎফুর, সাধারণ সম্পাদক-জহুরুল, কোষাধ্যক্ষ ফয়সল

রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ

নীলফামারী ডিমলায় আত্ম গোপনে আওমীলীগ নেতারা।

গাজীপুর জেলা ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সেভ দ্যা হিউমিনিটি কক্সবাজার’র পক্ষ থেকে শহরের পানিবন্দী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ