প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ গত ০৬ জুলাই ১৯২২ সালে ভারতের পাটনায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর গ্রামের বাড়ি রাউজান উপজেলাস্থ সুলতানপুর গ্রামে । তাঁর পিতার নাম মরহুম আবদুল হাদী ও মাতার নাম মরহুমা তামান্না খাতুন । তাঁর পিতা ছিলেন বিহার উড়িষ্যার সরকারী রেজিস্টার । সেই সুত্রে তিনি স্বপরিবারে পাটনায় থাকতেন । তার জন্মের পূর্বে তাঁর আরো ৫ জন বোন জন্মগ্রহণ করেছিলো ফলে একটি পুত্র সন্তানের আশায় তাঁর পিতা- মাতা এক নাগাড়ে ৩ মাস রোজা রেখেছিলেন । তার পূর্ব পুরুষ ছিলেন মোঘল পদাতিক বাহিনীর অন্যতম সেনাপতি শেখ মোহাম্মদ আদম লস্কর (প্রকাশ বড়
আদম লস্কর) । তিনি ১৬৬৬ সালে তিনি তার স্ত্রী মজলিস বিবিকে সাথে নিয়ে গৌড় থেকে এসেছিলেন । তার সাথে আসা লোকজন প্রথমে সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী হয়ে শেষে রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে আবাস গড়েন ।
উল্লেখ্য যে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে চট্টগ্রামে মোঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল । বিশেষ গবেষণায় বড় লস্করের প্রসঙ্গটি বেরিয়ে আসে । প্রফেসর খালেদের প্রথম শিক্ষা জীবন শুরু হয়ে পাটনায় । সেখানে তিনি ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন । তাঁর পাটনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিলো নীলাচল বিদ্যা একাডেমি । তবে দেশে রাউজান আর আর এ সি (রামগতি রামধন আবদুল বাড়ি চৌধুরী) ইন্সটিটিউশন, চট্টগ্রাম কলেজ, কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যায়ন করেছিলেন ।
তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে এম এ পাশ করার পর । ভাসমান ব্যবসা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, বাঁশ ও বেতের ফার্নিচারের ব্যবসা দিয়ে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ।
পরবর্তীতে তিনি ব্যবসা ছেড়ে কলেজের শিক্ষকতায় আসেন। তখন তাকে মানুষ অধ্যাপক সাহেব নামে সম্বোধন করতেন। পরে তিনি কলেজের শিক্ষকতা ছেড়ে যোগ দিলেন ব্রিটিশ পরিচালিত গ্রীণলেজ ব্যাংকে। ১৯৫৪’র নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির প্রতি তাঁর ঝোঁক বাড়ে এবং বিদেশী ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দেন। এরপর আবারো এলেন কলেজের শিক্ষকতায়।
তখন তিনি চট্টগ্রাম নাইট কলেজের শিক্ষক। শিক্ষকতার এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ বললেন, আপনি নিয়মিত চাকুরী করবেন এই মর্মে বন্ড দিতে হবে। এরপরই তিনি আবারো কলেজের চাকুরী ছাড়লেন প্রতিবাদী হয়ে।
উল্লেখ্য যে, তিনি ৮ম শ্রেনীতে পড়ার সময় রাজনীতি শুরু করেন। প্রথম জীবনে রাজনীতির লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা। তিনি ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত ছিলেন। সে সময় আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতৃত্বে ছিল মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর সাথে তার প্রথম পরিচয় কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় ও পরে সখ্য সম্পর্ক হয়। তখন আইয়ুব খানের সামরিক শাসন চলছে। ১৯৬০ সালে ৫ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক দৈনিক আজাদী পত্রিকা করেন। ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক নিজের ভাগ্নে খালেদকে গ্রেফতার থেকে রক্ষার জন্য বাধ্য করেন পত্রিকার সাথে যুক্ত হতে। তখন থেকেই তিনি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন। দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক সাহেব ছিলেন তার মামা এবং তিনি ছিলেন তাঁর আপন ভাগ্নে। পরে হলেন জামাতা।
তিনি রাজনীতি ও সাংবাদিকতা এক সাথে চালাতেন। তিনি ছিলেন সময় জ্ঞানের মানুষ।যখন রাজনীতির মধ্যে থাকতেন তখন তিনি রাজনীতিক, সময় মতো পত্রিকা অফিসে এসে হতেন সাংবাদিক । ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক ছিলেন দৈনিক আজাদী’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক । তিনি মৃত্যুবরণ করেন ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সালে । তাঁর মৃত্যূর পরই খালেদ সাহেব দৈনিক আজাদীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন । ১৯৭০ এর পাকিস্তান পরিষদ নির্বাচনে নিজে তিনি তাঁর দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান নি । কারণ তিনি পদের জন্য রাজনীতি করতেন না । দলের চট্টগ্রামের নেতারা তাঁকে দলের মনোনয়ন ফরম পূরণের জন্য চাপ দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি রাজি হন নি । পরে বঙ্গবন্ধু তাঁকে বাধ্য করেছিলেন নির্বাচন করতে । আমার পিতা মরহুম এডভোকেট এ এম য়্যাহ্ য়্যা তাঁর ঘনিষ্ট বন্ধু ও শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় ছিলেন । তিনি তাঁর নির্বাচনী মনোনয়ন ফর্মের প্রস্তাবক ছিলেন, এজন্যে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ আমার পিতাকে অপহরণের চেষ্টা করে । যাতে বাছাই পর্বেই প্রস্তাবকের অনুপস্থিতিতে মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায় । আল্লাহ পাক ঐ ষড়যন্ত্র সফল হতে দেননি ।
আমার পিতা আমৃত্যু তাঁর ঘনিষ্টজন হিসেবে একসাথে সমবায় ও গ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সহযোদ্ধা ছিলেন । আমার বাবা হাটহাজারী বৃহত্তর গুমানমর্দন ইউনিয়ন কাউন্সিলের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সমবায়ের মহাসচিব ছিলেন । খালেদ সাহেব রাউজান সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আমার নানার
বাড়ির দিক থেকে ঘনিষ্ট আত্মীয় । তাঁর মেঝ ছেলে মোহাম্মদ জহির আমার খালাতো বোনের স্বামী ।আজাদী ও কোহিনূর প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ইঞ্জিনিয়ার খালেক সাহেবের স্ত্রীর দিক থেকেও তিনি আমাদের আত্মীয় । আমার নানা রাউজান সুলতানপুর গ্রামের আমিনুল্লাহ কেরানী বাড়ীর মরহুম এডভোকেট এজাহার হোসেন বি এল ও ইঞ্জিনিয়ার খালেক সাহেব পরস্পর পীর ভাই ও ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন ।
দু’জনেরই আন্দরকিল্লায় লাইব্রেরী ব্যবসা ছিল । আমার নানা ও নানীর (বর বাড়ী পাড়া) পূর্ব পুরুষ আর মরহুম খালেক সাহেবের পূর্বপুরুষ একই সুত্রে গাঁথা ।
উল্লেখ্য প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পাকিস্তানের এককালীন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পীকার, কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি এ কে ফজলুল কাদের চৌধুরী । তারা রাউজান হাটহাজারী (নির্বাচনী এলাকা ১৫৭) এলাকা থেকে জাতীয় পরিষদ নির্বাচন করেছিলেন । প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য অর্থা এম এন এ নির্বাচিত হয়েছিলেন । প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সে দলের কর্মী সমর্থকদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেদিন তিনি তাঁর দল আনন্দ মিছিল করেন নি । তাঁর নির্বাচনের নেপথ্য নায়ক ছিলেন দেশের জনগণ এবং কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেস ও বর্তমান দৈনিক আজাদীর প্রকাশক ও সম্পাদক এম এ মালেক সাহেব । প্রফেসর খালেদ সাহেব প্রায়ই দৈনিক আজাদী ও নিজের সম্বন্ধে একটি কথা বলতেন । বলতেন ‘আই এম দি প্রোডাক্ট অব আজাদী’। বঙ্গবন্ধু খালেদ সাহেবকে ডাকতেন মি. প্রফেসর নামে।
পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট ১ মার্চের ১৯৭১ সালে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার পর প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ চট্টগ্রামের উত্তাল ছাত্র জনতার সাথে রাজপথে নেমে পড়েন । চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম আর সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান , চট্টগ্রাম শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুর আহম্মদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান ও প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ কে
নিয়ে চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় । প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ এম এন এ হলেও তিনি বঙ্গবন্ধু্থর প্রতিনিধি হয়ে তিনি সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন ।
সংগ্রাম পরিষদের কাজ ছিলো পাকিস্তানী প্রশাসন যেন বাঙালি বিরোধী কোন কাজ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা, আন্দোলনকে চলমান রাখা, দাঙ্গা প্রতিরোধ করা, সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বাঙালীদের মনোবল বৃদ্ধি করা। প্রফেসর
মোহাম্মদ খালেদ সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল ব্যাংকিং সেক্টরের । কেউ এক হাজার টাকার বেশি ব্যাংক থেকে তুলতে হলে সংগ্রাম পরিষদের বিশেষ করে প্রফেসর খালেদের অনুমতি নিতে হতো । ২৫ মার্চ সন্ধ্যার পরে
চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বসেছিলেন এম আর সিদ্দিকীর বাসায় । রাত ১০ টা এম আর সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর সাথে ফোনে কথা বললেন, ঢাকার খবর জানলেন,নির্দেশনা পেলেন এবং পরে তারা চলে গেলেন ফিরিঙ্গি বাজার জানে আলম দোভাষের বাসায় । সেখানে বসেই জানলেন ঢাকার রাস্তায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী নেমেছে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণা
করেছেন এবং সে ঘোষনা চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে ।
২৬ শে মার্চ ১০ টায় চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বসেছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এম প্থির বাসা জুপিটার হাউজে । সেখানে সিদ্ধান্ত হয় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি চট্টগ্রাম রেডিওতে প্রচার করার এবং সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম রেডিও্থতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনাটি এলো । স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র চট্টগ্রামের কালুরঘাট (প্রকাশ চাঁন্দগাও) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতা এম এ হান্নান ২৬ মার্চ ২.০৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু প্রেরিত স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেছিলেন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে । বেতার কেন্দ্রটি ৩০ মার্চ পাকিস্তানীদের বিমান হামলায় বন্ধ হয়ে যায় । উক্ত ৪ দিনে (২৬ মার্চ – ৩০ মার্চ) মোট ১৩ টি অধিবেশন পরিচালিত হয়েছিল । পহেলা এপ্রিল ১৯৭১-এ পাকিস্তানীরা চট্টগ্রাম দখল করে নেয় । খালেদ সাহেব চলে আসেন মুক্তাঞ্চল নিজ গ্রাম রাউজানের সুলতানপুরে । সেখান থেকে বিশেষ একটি দল নিয়ে পাহাড়ি পথে চলে যান ভারতে । মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ভারতে তিনি প্রথমে বাঙালী ছাত্র যুবকদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন, প্রবাসী সরকারের দেওয়া দায়িত্ব পালন করেন, জয় বাংলা পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করেন ।১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ দেশ স্বাধীন হলে ১৯ ডিসেম্বর তিনি ফিরে আসেন নিজ জেলায় । বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ২৬ দিন পর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ফিরলেন । অর্থা ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে । দেশে ফিরে স্বাধীন দেশের জন্য সংবিধান প্রণয়ন কাজ শুরু করলেন । সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে প্রধান করে গঠন করলেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটি । প্রফেসর খালেদকে করা হলো সে কমিটির অন্যতম সদস্য । স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৭৩ সালে প্রফেসর খালেদ সে নির্বাচনেও এম পি নির্বাচিত হয়েছিলেন । বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠিত হলে প্রফেসর খালেদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার গভর্নর মনোনীত হয়েছিলেন ।
আরও পড়ুন :
চট্টল গৌরব মরহুম মগদুর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক (র:) স্মরণে
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি দলীয় রাজনীতি থেকে সরে যান । জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি আর কোন দলে যোগদান করেন নি । তিনি খোন্দকার মোস্তাক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের নিকট থেকে মন্ত্রী এবং ক্ষমতার জন্য লোভনীয় প্রস্তাব পেয়েছিলেন কিন্তু তিনি বিনয়ের সাথে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন । তিনি বলতেন আমাকে খালেদ হিসেবে মরতে দিন । তাঁকে মানুষ ‘বিবেকের বাতিঘর’ হিসেবে ডাকতেন ।
তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রধান দিক ছিল তিনি বিবেকী ও সময়নিষ্ঠ মানুষ । তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল আমেনা বেগম । তাঁর সন্তানদের নাম যথাক্রমে আতিকা বেগম শিরিন, আতিয়া বেগম শামিম, মোহাম্মদ জমির, মোহাম্মদ জহির, মোহাম্মদ মুনির, মোহাম্মদ জোবায়ের । ২১ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁকে দাফন করা হয়েছিল রাউজান উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে নিজস্ব কবরস্থানে, তাঁর বড় ছেলে মোহাম্মদ জমিরের কবরের পাশে । দৈনিক আজাদী , প্রফেসর খালেদ ও চট্টগ্রামের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা । যতদিন দেশ থাকবে, মানুষ থাকবে ততদিন তিনি রবেন ইতিহাসের পাতায় চির
জাগরুক । মহান রাব্বুল আলামীন তাকে জান্নাতবাসী করুন, আমিন ।
লেখক- আইনজীবী, কলামিস্ট, মানবাধিকার কর্মী ও সুশাসন কর্মী ।