ঢাকাবুধবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  1. সর্বশেষ

অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং সেক্টরে তদারকি

প্রতিবেদক
admin
৩১ অক্টোবর ২০২০, ২:২০ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

অ্যাডভোকেট মো. সাইফুদ্দীন খালেদ

দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-কে সচল ও কার্যকর রাখতে ব্যাংকিং সেক্টরের ভূমিকা অপরিসীম। সারাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এ সেক্টরকে ঘিরে চলমান। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাংকের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের স্থান অনেক উপরে। এই জন্যে জনগণের উপর প্রভাব খুব বেশি। কিন্তু ব্যাংকিং খাতে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ঋণখেলাপি। ঋণখেলাপি সংস্কৃতি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম বাধা হিসেবে অভিহিত, যা অর্থনৈতিক কার্যধারাকে মূল্যহীন করে দেয়। ব্যাংক সহ সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকার ঋণ যা আদায় করা হয়নি, ফলেই দেশের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাধার সম্মুখিন হচ্ছে। ঋণ খেলাপিরা ব্যাংক ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে রাতারাতি দামী দামী গাড়ী বাড়ীর মালিক বুনে যায়। জনসাধারণের একটি বিশেষ অংশ বিভিন্নভাবে ঋণ গ্রহণ করে থাকে আবার স্বেচ্ছায় ও পরিকল্পিতভাবে ঋণ খেলাপিও হয়ে থাকে, যা একটি সংক্রামক ব্যাধির ন্যায় আত্মপ্রকাশ পেয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা সর্বোচ্চ করার জন্য সংগৃহিত আমানত থেকে ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। কিন্তু খেলাপি সংস্কৃতির ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো। তাই ঋণ প্রদানের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান জামানত গ্রহণ করে থাকে। যাকে বন্ধক বলা হয়। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ‘বন্ধক’ বলতে ঋণ করবার উদ্দেশ্যে স্থাবর সম্পত্তির স্বত্ব হস্তান্তরকরণকে বুঝায়। ইহা কর্জ নিবারনের জন্য একটি ব্যবস্থা। বন্ধকদাতা এই মর্মে সম্পত্তি বন্ধক রাখেন যে, ঋণের টাকা কোন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হলে বন্ধক গ্রহীতা অতঃপর দাতার রক্ষিত সম্পত্তিটি দাতার বরাবরে ফেরত দিতে বাধ্য। ঋণ কিংবা বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। ঋণ প্রদানের পূর্বে প্রথমে তারল্য সংকটের বিষয়টি। তারল্য সংকটে পড়তে হবে কিনা। বিনিয়োগকৃত বা ঋণের টাকা কতো সময়ে উঠে আসবে তা বিবেচনা করে দেখতে হবে। ঋণের বিপরীতে রক্ষিত জামানত পর্যাপ্ত কিনা বিবেচনা করে দেখতে হবে। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে জামানতের সম্পত্তি বা বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রয় করে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্টান ঋণের প্রদত্ত অর্থ ফিরে পাবে কিনা। মুনাফার সম্ভবনার, ঋণ বা বিনিয়োগ খাতটি কতটুকু লাভজনক তা বিবেচনা করতে হবে। ঋণ প্রদানের পূর্বে ঋণ গ্রহীতার পূর্বের রেকর্ড অর্থাৎ সামাজিক সুনাম, পুলিশ রেকর্ড বা ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে। অতীতের রেকর্ড খারাপ থাকলে ঋণ প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। ঋণ গ্রহীতার আর্থিক অবস্থা, ব্যবসায়িক দক্ষতা দেখা জরুরী। এমন খাতে ঋণ প্রদান করতে হবে যা প্রদান করা হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে এবং ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা আছে। দরিদ্র, মূলধন, সামর্থ্য, নির্ভরশীলতা, দায়িত্বশীলতা এবং সম্পদশীলতা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। স্বজনপ্রীতি ও বিভিন্নভাবে প্ররোচিত হয়ে ঋণ প্রদান করা যাবে না। ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অবশ্যই মেনে চলতে হবে। ব্যাংক কর্তৃক অলিখিত চার্জ ডকুমেন্টে ঋণগ্রহীতা ও জামিনদারের স্বাক্ষর গ্রহনের দীর্ঘ দিনের বেড প্র্যাকটিস বন্ধ করতে হবে। চার্জ ডকুমেন্ট এক বসায় এক হাতে এক কলমে পূরণ করতে হবে। ঋণ মঞ্জুরির পুর্বে অবশ্যই ঋণ গ্রহীতা বা গ্যারান্টি দাতার পূর্ণ ও সঠিক বিবরণ যাচাই করা। ঋণ গ্রহীতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ ঠিকানা, মালিকানার কাগজপত্র, হিসাব বিবরণী, তার বর্তমান সম্পদ ও দায়দেনা, তার বাজারের সুনাম, অন্য ব্যাংকের সাথে লেনদেন পরিস্থিতির ওপর পূর্ণ আলোচনা যাচাই, ট্রেড লাইসেন্স, অন্যান্য লাইসেন্সাদি, ইনকাম ট্যাক্স সংক্রান্ত কাগজপত্র, ছবি, পাসপোর্ট ইত্যাদি হতে ঋণ প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে। বর্তমানে দেশের প্রচলিত ঋণ খেলাপী কালচার থেকে পরিত্রাণের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে এসব ব্যাপার অবশ্যই ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হল নিরাপদ জমানত গ্রহণ। অন্যান্য উন্নত দেশের ঋণ মঞ্জুরি বিবেচিত হয় প্রকল্প বা উদ্দেশ্যকে ভিত্তি করে। আমাদের দেশে এটা হয় জামানত ভিত্তিতে। যে উদ্দেশ্যে (পণ্য বা শিল্প প্রকল্পে) ঋণদান করা হয় সেটাই প্রাথমিক ও মুখ্য জামানত। আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরে আরো একটি অপরিহার্য বিষয় হচ্ছে অতিরিক্ত জামানত গ্রহণ করা যা সাধারণত বাড়ী-ঘর, জায়গা-জমি, বিভিন্ন স্থাবর সম্পত্তি ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে হয়। এ ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ থেকে যায়। ব্যাংকিং খাত থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমানতকারী তথা সাধারণ জনগণের অর্থ দীর্ঘদিন ধরেই খেলাপি ঋণের মাধ্যমে আত্মসাৎ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। টিআইবি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিলো ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। যা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকায়। প্রতিবছরে গড়ে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ৯ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। গত ১০ বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ার পরিমাণ ৪১৭ শতাংশ। এসব থেকে উত্তরণে টিআইবি একটি গবেষণা চালিয়ে সুপারিশ করেছে। সুপারিশগুলো হলো- ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ ও ব্যাপক অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য এ খাতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন করতে হবে। ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’ এর ৪৬ ও ৪৭ ধারা সংশোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংককে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির পূর্ণ ক্ষমতা দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য, গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ ও অপসারণ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লিখিত নীতিমালা করতে হবে; যেখানে নিয়োগ অনুসন্ধান কমিটির গঠন, দায়িত্ব-কর্তব্য এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে তিনজন সরকারি কর্মকর্তার স্থলে বেসরকারি প্রতিনিধির (সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ যেমন আর্থিক খাত ও সুশাসন বিষয়ক) সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যাংক সংশ্লিষ্ট আইন সমূহে আমানতকারীর স্বার্থ পরিপন্থী ও ব্যাংকিং খাতে পরিবারতন্ত্র কায়েমে সহায়ক সকল ধারা সংশোধন/বাতিল করতে হবে (যেমন, একই পরিবারের পরিচালক সংখ্যা, পরিচালকের মেয়াদ, পর্ষদের মোট সদস্য সংখ্যা হ্রাস করা ইত্যাদি)। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে একটি প্যানেল তৈরি এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগের বিধান করতে হবে। রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক পরিচালক হওয়া থেকে বিরত রাখার বিধান এবং ব্যাংক পরিচালকদের ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি নজরদারির মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। আদালত কর্তৃক স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশনিং রাখার বিধান প্রণয়ন করতে হবে। বারবার পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করে বারবার খেলাপি হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ব্যাংক পরিদর্শনের সংখ্যা ও সময়কাল বৃদ্ধি করতে হবে; প্রত্যক্ষভাবে পরিদর্শন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভাগ সমূহের শূন্য পদসমূহ অবিলম্বে পূরণ করতে হবে; পরিদর্শন প্রতিবেদন যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে সমাপ্ত ও এর সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সীমিত হলেও পরিদর্শনে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা পরিদর্শন দলকে দিতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি ও বাস্তবায়নে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ দশটি সুপারিশ টিআইবি প্রদান করে। দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় গত ১৯ মার্চ এক সার্কুলারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, ১ জানুয়ারি ২০২০ ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত সময়ে ওই ঋণ তার চেয়ে বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। পরে ১৫ জুন এ সংক্রান্ত অপর একটি সার্কুলারে বলা হয়, ১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে ঋণ/বিনিয়োগের শ্রেণিমান যা ছিল, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ওই ঋণ/বিনিয়োগ তার চেয়ে বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। তবে কোনো ঋণের/বিনিয়োগের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা যথাযথ নিয়মে শ্রেণিকরণ করা যাবে। ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আরেকটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এ সময়ের মধ্যে ঋণ/বিনিয়োগের ওপর কোনোরকম দ-, সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না।
শুধু করোনাকালেই নয়, বিভিন্ন সময় ঋণ পুনর্গঠন, ঋণ পুনঃতফসিল ও ঋণ অবলোপনের মাধ্যমে এ সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বটে তবে এতে কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি, বরং এসব পদক্ষেপ খেলাপি ঋণ আদায় প্রক্রিয়াকে আরও প্রলম্বিত করেছে। তাই খেলাপি ঋণসহ ব্যাংকিং খাতে সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ঋণ খেলাপিরা যাতে প্রতারনা ও আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে আইনে সে ব্যবস্থার পাশাপাশি ঋণ বা বিনিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকেও স্বচ্ছতার এবং জবাবদিহীতার মুখোমুখি করতে হবে। জনগনের অর্থ লুন্ঠনের যুগে যুগে চলে আসা ধারাবাহিক প্রক্রিয়াকে রুখতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাপক বাধাগ্রস্থ হবে। অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ কে আরো গতিশীল করতে হবে। ভদ্রবেশী ঋণ খেলাপিদের হাতে যাতে দরিদ্র জনগনের অর্থ না যায় তার জন্য সচেতন থাকতে হবে। এ সমস্যা সমাধানে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারসহ পর্যবেক্ষক দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রকৃত সৎ, পরিশ্রমী, মেধাবী ও যোগ্য ব্যবসায়ী/শিল্পপতিদের প্রয়োজনীয় ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা সহ প্রণোদনা ও উৎসাহ প্রদান করতে হবে। ঋণ গ্রহনের উদেশ্যে প্রস্তাবকৃত জামানত বা সম্পত্তির প্রকৃতি যাচাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সম্পত্তি কারো নিকট দায়বদ্ধ আছে কিনা বা পূর্বে কোথাও বন্ধক প্রদান করেছে কিনা তা সংবাদ পত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে যাচাই করা জরুরী। উক্ত সম্পত্তি সংক্রন্তে আর,এস রেকর্ডীয় মালিক হতে স্বত্বের ধারাবাহিকতা মিলিয়ে দেখতে হবে। স্বত্বের ধারাবাহিকতার সংশ্লিষ্ট সকল বায়া দলিল, আর,এস খতিয়ান, বি,এস খতিয়ান, দায়মুক্ত সনদ, বি,এস নামজারী খতিয়ান, ডিসিআর, হালসন খাজনা পরিশোধের দাখিলা, সিডিএ অনুমোদন পত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), হাউজিং সোসাইটির প্লট এর ক্ষেত্রে এনওসি বা অনুমতি পত্র, সার্ভে রিপোট বা আর,এস দাগের সাথে বি,এস দাগ মিলামিল সংক্রান্ত সংবাদের দরখাস্ত ইত্যাদি গ্রহন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট খতিয়ান সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এ.সি (ল্যান্ড)/ সংশ্লিষ্ট কালেক্টরেট এর রেকর্ডরুমে তল্লাশীক্রমে সঠিক আছে কিনা যাচাই করে দেখতে হবে। জমির স্কেচ ও চৌহদ্দি নির্ধারণ সহ তপশীলভুক্ত সম্পত্তিতে মালিকের সরেজমিন পৃথক চিহ্নিত মতে বাস্তব দখল সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। খেলাপি ঋণের কারণ এবং তা কমিয়ে আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতা নির্বাচনে দুর্বলতা, ঋণের বিপরীতে রক্ষিত জামানতের অপর্যাপ্ততা, অতিমূল্যায়ন ও ঝুঁকি বিশ্লেষণে দুর্বলতা, এক ব্যাংক কর্তৃক অন্য ব্যাংকের খারাপ ঋণ অধিগ্রহণ, চলতি মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণ না করা, একাধিক ব্যাংক থেকে চলতি মূলধন গ্রহণ, স্বজনপ্রীতি ও বিভিন্নভাবে প্ররোচিত হয়ে ঋণ প্রদান, শাখা পর্যায়ে ঋণ প্রদানের ক্ষমতা সীমিতকরণ, ঋণ পুনঃতফসিলকরণের সুবিধার অসৎ ব্যবহার খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ। পরিশেষে বলব আমাদের দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। করোনার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকিমুক্ত করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংকট মোকাবেলায় যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা কাটাতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদার ও তদারকি চালিয়ে যেতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে যেমন ডিপোজিট বাড়াতে হবে, তেমনি বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশও গড়ে তুলতে হবে। বিনিয়োগ বা ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে যাচাই বাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

লেখকঃ আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

আরও পড়ুন

মাদারীপুর বাবু চৌধুরী ক্লিনিকের ওয়াশরুমে নবজাতক মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়ে পালিয়ে গেলেন অজ্ঞাত মা

হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার পর কি বললেন জামায়াত আমীর?

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কাপাসিয়া প্রেসক্লাবে বিশেষ দোয়া মাহফিল

কাপাসিয়ায় গাছ কেটে অবৈধভাবে কয়লা তৈরি করার দু’টি চুল্লী ধ্বংস করেছে উপজেলা প্রশাসন

রাউজানের ডাবুয়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্যে খতমে কুরআন ও দো’য়া মাহ’ফিল

বাঁচতে চায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কুবি শিক্ষার্থী অনন্যা

২০২৪-২৫ সেশনের ক্লাস শুরু এবং ৫ দফা দাবি ইডেন শিক্ষার্থীদের

কুবি’র বিজয়-২৪ হলে কালচারাল এন্ড স্পোর্টস উইকের উদ্বোধন

চকরিয়ায় স্বামীর নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

দোয়ারাবাজারে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

১১ পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে ডিবি কার্যালয়ে মামলা করলেন সাদিক কায়েম