বাপ্পী রাম রায়,
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লালচামার এলাকায় তিস্তার ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙ্গনরোধ করা যাচ্ছেনা। ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, তিস্তার করাল গ্রাসে প্রতিবছর হাজার হাজার হেক্টর আবাদী জমি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শত শত বসতবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিলীন হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে আরও শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরিবাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। নিরাশ্রয়, নিরন্ন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
এ অবস্থা চলতে থাকায় সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গন রোধের জন্য বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে তিস্তা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এতে করে ওই সব এলাকার ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে ভুক্তভোগিরা।
৪নং পয়েন্টের দক্ষিণ পাশের ক্ষতিগ্রস্থ সহিদুর রহমান, আফছার আলী, রেজাউল, আজাহার, রাজ্জাক, রফিকুলসহ অনেকে জানান, পাউবো কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জনবসতি জায়গায় জিও ব্যাগ না ফেলে লালচামার ৪নং পয়েন্টে দক্ষিণ ও উত্তরে জনবসতি এলাকার মাঝে ফসলি জমি ও ফাঁকা জয়গায় জিও ব্যাগের স্তুপ করেছে। জিও ব্যাগ স্তুপের দক্ষিণ ও উত্তরে অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হলেও ওই স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার কোনো পরিকল্পনা নেই কর্তৃপক্ষের।
জিও ব্যাগ প্রস্তুতকালে পাউবো’র ওয়ার্ক এসিসটেন্ট জাহাঙ্গীর আলম বলেন লালচামারের ৪নং পয়েন্টের দক্ষিণ ও উত্তরে জনবসতি এলাকায় এই মহুর্তে জিও ব্যাগ ফেলার কোনো পরিকল্পনা নেই। ভাঙ্গনরোধের জন্য পাউবো (পওর) বিভাগ গাইবান্ধার তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ফেললেও কোন কাজে আসছে না। স্থায়ীভাবে তিস্তার ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা করা না হলে অল্প সময়ের মধ্যে এলাকাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
পাউবোর (পওর) বিভাগ গাইবান্ধার সংশ্লিষ্ট এসও এটিএম মোনায়েম হোসেন জানান, বন্যার সময় থেকে আমরা তিস্তা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন,আমার এলাকার মানুষ তিস্তার ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় স্থানে জিও ব্যাগ ফেলছে না কর্তৃপক্ষ। স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
নদী বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক সাদেকুল ইসলাম দুলাল বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনরোধে সরকারের প্রস্তাবিত প্রকল্প পাশ করে ভাঙ্গনরোধের জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।