|| মুহাম্মদ ইলিয়াস -০১ জুলাই,রাঙামাটি ||
রাঙামাটির ভারত সীমান্ত লাগোয়া বাঘাইছড়ি উপজেলার দূর্গম সাজেকে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়
শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন, অর্পিতা চাকমা (৫) ও গিরি রঞ্জন ত্রিপুরা (৩৫)।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটির ভারত সীমান্ত লাগোয়া বাঘাইছড়ি উপজেলার দূর্গম সাজেক ইউনিয়নের গঙ্গারাম’র বেতকাবা এলাকায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে শিশু অর্পিতা চাকমা ও লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় গিরি রঞ্জন ত্রিপুরা’র মৃত্যু হয়েছে।
সূত্র মতে এর আগে ১৭ জুন বাহন ত্রিপুরা (৫৫) ও মেলাতি ত্রিপুরা (৫০) তারা উভয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়। গত ৭ জুন বুধবার ভোর রাতে গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ও দরুং ত্রিপুরা (৬০) দুজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গত ২৩ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাজেকে ৫ জন মৃত্যু বরণ করেছে। লংথিয়ান পাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলোতে নারী শিশু বৃদ্ধসহ আরো ২০ গ্রামবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্তেত খবর পাওয়া গেছে।
সাজেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ দিনে লংথিয়ান পাড়ায় গিরি রঞ্জন ত্রিপুরাসহ ৫ জন গ্রামবাসী মারা গেছে। একইদিন বিকেলে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে শিশু অর্পিতা চাকমা’র মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা বলেন, মেডিকেল টীম ফিরে গেছে গত বুধবার। টীম ফিরে যাবার ২দিন আবারও ডায়রিয়ার প্রদূর্ভাব দেখা দিলো। গত এক মাস ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ বেটলিং এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় নতুন করে ডাইরিয়ার ব্যপকতা ছড়িয়ে পড়েছিলো বলে যোগ করেন, এ জনপ্রতিনিধি।
আরেক জনপ্রতিনিধি সাজেক ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, বর্তমানে ‘লংথিয়ান পাড়াতে ৪ জন মুমূর্ষু ডাইরিয়া রোগী রয়েছে। তাদের অবস্থাও ভালো নয়। মুলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে এখানে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন মৃত্যু হয়েছিলো। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টীম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় ডাইরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র মেডিকেল অফিসার ডাঃ অরবিন্দু চাকমা বলেন, মেডিকেল টীমের সদস্যরা টানা এক সাপ্তাহ চিকিৎসা সেবা দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফিরে এসেছে। আবার নতুন করে আরো কেও আক্রান্ত হলে, আবারো মেডিকেল টীম পাঠানো হবে।
বাঘাইছড়ি ইউএনও রুমানা আক্তার ডাইরিয়ায় ২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে শনিবার এ প্রতিনিধিকে বলেন,দুর্গম সাজেকের পাহাড়ী এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। বর্ষায় পাহাড়ী ছড়ার পানি পান করার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ’র সহায়তায় বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা দুর করতে চেষ্টা করছি। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট ও শুকনো খাবার সরবরাহ করছি। সম্মিলিত চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রয়েছে বলে যোগ করেন এ কর্মকর্তা।