রাফিউল ইসলাম (রাব্বি) স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর:
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবার দাবি করেছেন, পুলিশ তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম শামসুল হক (৫৫)। বুধবার সকাল ৯টার তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে।
নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশকে এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে না পারায় শামসুল হককে পিটিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, নিহত শামসুল হককে মাদক কেনাবেচার অভিযোগে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে রাখা হয়। বুধবার সকাল ৯টায় তদন্তকেন্দ্রের গ্রিলের সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তাকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে- এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ঘেরাও করে। তখন পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর রংপুরের পুলিশ সুপারসহ ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রমেক মর্গে পাঠানো হয়।
সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজ উদ্দিন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়।
নিহতের স্ত্রী মোমেনা বেগম দাবি করেন, ‘‘ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ আমার স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তার এই দাবির টাকা পূরণ করতে না পারায় তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।’’
মোমেনা বেগম এই হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, নিহত শামসুলকে গ্রেপ্তারে যারা জড়িত, তাদের সকলকে ক্লোজ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে বলা যাবে- এটি হত্যা না আত্মহত্যা।