Oplus_131072
মামলার আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে নির্বাচনী প্রচারণায়! পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক
সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সরকার কর্তৃক জব্দ করা ৯০টি গরু আত্মসাৎ মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ও নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন দোয়ারাবাজারের হারুন অর রশীদ। এতে প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই নদী উত্তর বালিচড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন সরকারি জব্দকৃত গরু আত্মসাৎ মামলার অন্যতম আসামি হারুন অর রশীদ।
স্থানীয়রা বলছেন, একজন রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ মামলার আসামি যদি প্রকাশ্যে ঘুরে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, তাহলে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বোগলাবাজার এলাকায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা ৯০টি গরু জব্দ করে প্রশাসন।
পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গরুগুলো হারুন অর রশীদসহ পাঁচজনের জিম্মায় হস্তান্তর করে।
তবে কয়েক সপ্তাহ পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে গিয়ে জিম্মায় থাকা গরুগুলোর কোনো হদিস পাননি।
বিষয়টি আদালতকে জানানো হলে সরকার বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় মামলা (নং-০৫/২০২৫) দায়ের করে।
মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম হলেন বালিচড়া গ্রামের মৃত মরতোজ আলীর পুত্র হারুন অর রশীদ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এমন গুরুতর মামলার আসামি হয়েও হারুন অর রশীদ প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, উপজেলা প্রশাসন ও থানা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন— অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ মামলার আসামি যদি অবাধে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, তাহলে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এটা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক গাফিলতির বড় উদাহরণ।”
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা এবং রহস্যজনক নীরবতা এ ঘটনায় অপরাধীদের উৎসাহিত করছে।
চিলাই নদী উত্তর বালিচড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।এ নির্বাচনে হারুন অর রশীদ সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশাসনের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আবুল কালাম বলেন,দোয়ারাবাজার থানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে এখনো পর্যন্ত হারুন অর রশীদ গ্রেফতার না হওয়ায় স্থানীয়রা মনে করছেন, পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক ও প্রশাসনিক তৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের দাবি,সরকারের জব্দকৃত রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ মামলার আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক এবং তার প্রার্থীতা বাতিল করা হোক। প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এটি অন্যদের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।