মহেশখালী প্রতিনিধিঃ
“অনলাইন শিক্ষার প্রসার মানে লাগাতার ফেসবুক, ইউটিউব, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা নয়। বরং অনলাইনের ঝুঁকি সমূহ জেনে তার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার। অপরদিকে অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের বিষয়টি সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। মহেশখালীর মত একটি জনপদে শিক্ষার্থীদের অনলাইন পাঠদানে যুক্ত করার লক্ষ্যে এইচএসসি ক্যাম্পেইন এপসটি চালু করা বিশাল একটা ব্যাপার। এই এপসটি ধীরে ধীরে মহেশখালীর গন্ডি পেরিয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।”
মহেশখালীতে অনলাইন শিক্ষার প্রসার ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগরণ শীর্ষক আলোচনা সভায় এইচএসসি ক্যাম্পেইন এপস উদ্বোধনকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পিএসটু মেয়র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (৬মে) বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভা ও অ্যাপস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতি বুদ্ধিজীবির সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি সাদাত উল্লাহ খান।
বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের প্রভাষক মোছাম্মৎ হোসনে আরা বেগমের সঞ্চালনায় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মেসীর সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান এসএম মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসহাক।
মাওলানা নুরুল হোসেনের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ মকছুদ আহমেদ, হাটহাজারী সরকারী কলেজের প্রভাষক মুহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, বড় মহেশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির আজাদ, জেএস ট্রেডিং কোং সিও মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মার্শাল পাভেল, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ নতুনবাজার উপ শাখার ইনচার্জ মামুনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবি মোঃ এড. মোহাম্মদ শাহজাহান।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের পাশাপাশি আরো বক্তব্য দেন সরকারী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের প্রভাষক সরওয়ার কামাল, এইচএসসি ক্যাম্পেইন এপসের প্রতিষ্ঠাতা সুমাইয়া আকতার সুখি এবং মুখপাত্র মুহাম্মদ রহিম উল্লাহ।
মুখপাত্র রহিম উল্লাহ জানান, বর্তমানে ই-শিক্ষার মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরী হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব চ্যানেল, ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপের মাধ্যমে এই শিক্ষা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে এইচএসসি ক্যাম্পেইন প্লাটফর্মের যাত্রা শুরু করেছে। এই প্লাটফর্মে ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীদের ১৭৫ জন শিক্ষক পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, “আমরা যারা পড়াশোনা করেছি আমরা এখনো ম্যানুয়াল। আমাদের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম নেয়ার জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করতে হয়েছিল। এখন অনলাইনের সুবাধে ঘরে বসেই ফরম নিয়ে জমা দেয়ার কাজ করা যায়। অনলাইন আমাদের অনেক কাজকে অতি সহজ করেছে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তবেই আমরা নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হবো।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতি বুদ্ধিজীবির সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতি সাদাত উল্লাহ খান বলেন, করোনাকালীন সময়ে অনলাইন শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। সেসময় দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের সাথে সীমিত পরিসরে যুক্ত ছিলেন। মহেশখালী শিক্ষা ক্ষেত্রে অনগ্রসর একটি এলাকা। এই অঞ্চলে অনলাইন পাঠদানের জন্য এইচএসসি ক্যাম্পেইনের মত যুগোপযোগী এপস সৃষ্টি করে এর উদ্যোক্তারা রীতিমত চমকে দিয়েছেন। এভাবেই চিন্তাশীল মানুষদের উদ্ভাবনী কাজ দ্বারা এই দেশে এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার পাশা চৌধুরীকে গুণীজন সম্বর্ধনা দেয়া হয়।