ত্রিশাল সংবাদদাতা:
সালাম, জব্বার, বরকতসহ নাম না জানা অসংখ্য শহীদ ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষার অধিকার। এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন বাধ্যতামূলক। শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষাসৈনিক বীরদের সম্মান জানানো হয়। ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল সদরে কোনো শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি। এমনকি ত্রিশালের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি নজরুল একাডেমি, ত্রিশাল নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ত্রিশাল মহিলা ডিগ্রি কলেজ, দুখু মিয়া বিদ্যানিকেতন ও ইসলামী একাডেমি অ্যান্ড কলেজেও স্থাপন করা হয়নি কোনো শহীদ মিনার। ত্রিশাল পৌর শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার না থাকায় নজরুল কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারের বেদিতেই ত্রিশালবাসী শহীদদের সম্মান জানিয়ে পুষ্পস্তবক প্রদান করে আসছেন। উপজেলা প্রশাসনও এখানেই শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজ মাঠের এক পাশে অবস্থিত শহীদ মিনারটিই অঘোষিতভাবে ত্রিশালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে ব্যবহার হয়। প্রতি বছরের একুশে ফেব্রুয়ারি এখানে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢল নামে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। কিন্তু এটি নজরদারির অভাবে সারা বছরই অরক্ষিত থাকে। শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হয়। তাই ভাষা শহীদদের সম্মানার্থে এবং শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় নজরুল কলেজের শহীদ মিনারটি সীমানা প্রাচীর দিয়ে বেষ্টনী করে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। নজরুল কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক জিএস আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর বলেন, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। তাই ত্রিশালের পৌর এলাকায় একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপনসহ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা সময়ের দাবি। অনেক আগেই এটি স্থাপন করা প্রয়োজন ছিল।
ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ বলেন, এখন পর্যন্ত নজরুল কলেজের শহীদ মিনারটিই ত্রিশাল পৌরবাসীর শহীদ মিনার। আমরা আলাদা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে জায়গা পাওয়া গেলেই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।