জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি :
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় গরু-মহিষ সহ ভারতীয় পণ্য সামগ্রী, ইয়াবা, ফেন্সীডিল, বাবা টেবলেট অফিসার চয়েস সহ বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, আমদানী নিষিদ্ধ শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, ভারতীয় শাড়ী, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ভারতীয় নি¤œ মানের চা-পাতা। ব্যবসায়ীরা বলেন, চুক্তি মোতাবেক কিছু সংখ্যাক গরু-মহিষ আটকের সুযোগ এবং মোটা অংকের সালামির মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় ভারতীয় গরু-মহিষ সহ অন্যান্য সামগ্রী। চোরাইকারী জানান সংশ্লিষ্টদের ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত অতিক্রমের কোন সুযোগ নেই।
সরেজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪৮ বিজিবির আওতাধীন আলুবাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, কেন্দ্রী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ডিবিরহাওর, ডিবিরহাওর (আসামপাড়া), ১৯ বিজিবির আওতাধীন ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, মাঝেরবিল, কালিঞ্জি, জালিয়াখলা, অভিনাশ ও লাল মিয়ার টিলা, তুমইর, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, বালিদাঁড়া, ইয়াংরাজা এলাকা দিয়ে পালাক্রমে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় গরু-মহিষ সহ অন্যান্য মাদক পন্য সামগ্রী।
সন্ধ্যা নেমে আসার সাথে সাথে সীমান্ত জুড়ে অবাধে চলে চোরাকারবারের সাথে সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা। রাত বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় পন্য আদান প্রদানের মহোৎসব। সীমান্ত দখলে থাকে চোরাচালান ব্যবসায়ী ও তাদের বাহিনীর দখলে। কেউ আনছে আসছে গরু-মহিষ, দামী শাড়ী, কেউবা আনছে মাদক, আর কেউবা আনছে চা-পাতা, কসমেট্রিক্স-এর চালান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চোরাকারবারী দলের সক্রিয় সদস্য বলেন, সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সাথে কন্টাক ভিত্তিক সিজারের জন্য গরু-মহিষের চালানের হাটতে না পারা দূর্বল প্রকৃতির গরু-মহিষ বাছাই করে এক-দুটি করে প্রথমে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেসময় সংশ্লিষ্ট টহলটিমকে খবর দেওয়া হয়। অতিদ্রæত টহল টিমের সদস্যরা এসে গরু মহিষ আটক করেন। আটককারী টহল টিম এগুলো নিয়ে ক্যাম্পে আসার প্রক্কালেই শুরু হয়ে যায় মুল চালান বাংলাদেশে প্রবেশের কাজ। এভাবেই প্রতিনিয়ত সীমান্তের বিভিন্ন পথ ব্যবহার করে বীরদর্পে চলছে চোরাচালানের নিরাপদ বানিজ্য। বিনিময়ে মোটা অংঙ্কেও সালামী পৌছে যাচ্ছে অন্দর মহলে। তিনি আরও বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) যত লিখবেন তত সালামী বেশি দিতে হয় আমাদের। মাঝে মধ্যে বড় বড় চালান প্রবেশ করাতে গিয়ে চাহিত চুক্তির বেশি টাকা দিতে হয়।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব সিলেটের সর্ব্বোচ্ছ চোরাচালানের নিরাপদ রুট জৈন্তাপুর। বিজিবি কয়টি গরু-মহিষ আটক করে আর প্রতিদিন জৈন্তাপুর বাজার, দরবস্ত বাজার গুলোতে কত গরু মহিষ আসে। উল্লেখ্য এই অঞ্চলে নেই কোন গরু মহিষের খামার। অতএব প্রতিদিন সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে হাজার হাজার গরু-মহিষ। গরু-মহিষ বাঁধে অন্যান্য চোরাকারবারীরা নিয়ে আসছে কোটি কোটি টাকার মাদক, কসমেট্রিক্স, ঔষধ সামগ্রী, চা-পাতা, মোবাইল হ্যান্ডসেটের বড় বড় চালান।
এবিষয়ে শ্রীপুর, মিলাটিলা, ডিবিরহাওর, জৈন্তাপুর এবং লালাখাল ক্যাম্পের দায়িত্বশীলরা জানান, অভিযান অভ্যাহত রয়েছে গরু মহিষ সহ চোরাচালান পন্য আটক করা হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলেতে তারা উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক মোড়ল বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। সীমান্তের অনেক বিষয় সংশ্লিষ্টদের দেখার বিষয়।